‘এই যে ছেঁড়া জামাটা দেখতেছেন, এইটাই আপনাদের বাংলাদেশ’ 

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

পেছন থেকে মোটরসাইকেলে আসা এক লোক হঠাৎ খামচে ধরে তার জামা ছিঁড়ে ফেলে। এরপর গালাগাল করতে করতে চলে যায়। কিন্তু খোদ রাজপথে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এমন নিপীড়নের শিকার ওই তরুণীর চিৎকার শুনে এগিয়ে আসেনি কেউ।

ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার রাতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের সামনে।

রিকশা চড়ে বাসায় ফেরার পথে এমন নিগ্রহের শিকার হওয়ার পর ওই তরুণী এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, 'এই যে আমার ছেড়া জামাটা দেখতেছেন, এটাই আপনাদের বাংলাদেশ !! এই দেশে মেয়েদের মলেস্ট হওয়া, হ্যারাস হওয়া, রেপ হওয়া, গালি খাওয়া স্বাভাবিক ভেবে মেনে থাকতে পারলে থাকেন, নাইলে এই রাগে দুঃখে ট্রমাটাইজ হয়ে সুইসাইড করেন, মরে যান, যা খুশি করেন কিন্তু প্রতিরোধ কিংবা বিচারের আশা কইরেন না!!'

ঘটনার বর্ননা দিয়ে ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও বলেন, 'একটা লোক বাইক নিয়ে রিকশার পেছন থেকে এসে আমার বুক খামচে টেনে হিচড়ে জামা ছিড়ে আমাকেই গালাগাল করতে করতে চলে গেলো, আশেপাশে একটা পুলিশ নাই, একটা মানুষ এসে ধরলোনা আমার চিৎকার শুনে!! আমি কিচ্ছু করতে পারলাম না!! আমার শরীর এখনো কাঁপতেছে ভয়ে!!'

তিনি লেখেন, 'গত কয়েকমাস যাবত আমি ভয়ংকরভাবে মেন্টালি আন্সটেবল। আজকেও আমার মনের অবস্থা ঠিক ছিলোনা। কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে বাসায় ফিরতেছিলাম। আমার এই ড্রেসে ঠিক কি খারাপ ছিলো যার কারনে এমন ঘটনা ঘটলো?!

'পোশাকের দোষ দেওয়া মানুষগুলো সালোয়ার কামিজে একটা মেয়েকে কি নিয়ে দোষ দিবে? আমার সাথে এমনটা কেন হলো? কখনো ভাবিনাই আমার ঢাকাশহরে আমার সাথেই এমন কিছু হতে পারে!!'

তিনি প্রশ্ন রাখেন, 'এই দেশে থাকতে চাইলে বিনিময়ে রাস্তাঘাটে গায়ে হাত দেয়ার পারমিশন দিতে হবে? নাকি এখন সন্ধ্যার পর বাসার বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দিবো??! আর কারে গিয়ে বললে একটু স্বাভাবিক সিকিউরভাবে এদেশে বাঁচতে পারবো?'

ঘটনার পর বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন ওই ভুক্তভোগী। পুলিশকে জানান, দেখলে ওই নিপীড়ককে চিনতে পারবেন তিনি।

এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। তিনি বলেন, 'ঘটনাটি অবগত হওয়ার পর ঘটনাস্থলে কয়েকজন পুলিশ সদস্য গিয়েছেন৷ তাদের সঙ্গে ভুক্তভোগী তরুণীও ছিলেন। ঘটনাটি তদন্তে আমরা কাজ করছি৷ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আমরা খুঁজছি৷'

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

3h ago