মধুপুরে ইকোটুরিজমের নামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জমি দখলের অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে 'ইকো-টুরিজম' উন্নয়নের নামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের কৃষিজমিতে জোর করে লেক খনন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছাত্র ও যুব সংগঠনের একটি জোট।

এর প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার 'আদিবাসী ছাত্র-যুব সংগঠনসমূহ' ব্যানারে ঢাকার সেগুনবাগিচায় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক টনি চিরান। লিখিত বক্তেব্যে তিনি বলেন, 'টাংগাইলের মধুপুর বনাঞ্চলে ২৫ হাজারের বেশি গারো, কোচ ও বর্মণ আদিবাসী সুদীর্ঘকাল থেকে বসবাস করে আসছে। তারা সেখানে পরম মমতায় বন ও জীববৈচিত্র্যকে সংরক্ষণ করে আসছে। ইকোপার্ক, ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়নের নামে বনের ভেতরে বিভিন্ন স্থাপনা, জাতীয় উদ্যান, পিকনিক স্পট কিংবা ফায়ারিং ও বম্বিং রেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করে দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক বনের সর্বনাশ করা হয়েছে।'

'স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই সরকার জোরপূর্বকভাবে এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। মধুপুরের গারো-কোচ-বর্মন ও সাধারণ জনগণ এই সংরক্ষিত বন ঘোষণার বিরুদ্ধে জোরালোভাবে প্রতিবাদসহ মহামান্য হাইকোর্টে আপিল করলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কার্যত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি,' বলেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, 'সম্প্রতি বন বিভাগ বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় "সাসটেইনেবল ফরেস্ট অ্যান্ড লাইভলিহুড" বা সুফল প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এছাড়া 'মধুপুর জাতীয় উদ্যানের ইকোটুরিজম উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবস্থাপনা'র আওতায় বন বিভাগ স্থানীয় মানুষের ভূমিতে সীমানা প্রাচীরসহ আরবোরেটাম বাগান, দ্বিতল গেস্টহাউস, ভূগর্ভস্থ জলাধার নির্মাণসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করছে। মধুপুরের ১১ নম্বর শোলাকুড়ি ইউনিয়নের পীরগাছা মৌজার আমতলীর নিচু জমিতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের চিত্তবিনোদনের উদ্দেশ্যে তিন ফসলি জমিতে বন বিভাগ কৃত্রিম লেক খনন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এসব কর্মকাণ্ড ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের জীবনজীবিকার ওপর মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে ও ব্যাহত করবে তাদের কৃষিকেন্দ্রিক অর্থনীতি। এ ছাড়া এতে প্রস্তাবিত লেকের পাশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাবসহ মধুপুর বনের অবশিষ্ট প্রাকৃতিক বনে স্থায়ী প্রভাব পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বুশ নকরেক, গারো স্টুডেন্টস ফেডারেশন ঢাকা মহানগর এর সাংগঠনিক সম্পাদক লেবিয় ম্রং, বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়নের চন্দন কোচ, গারো স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ঢাকা মহানগরের সভাপতি সতীর্থ চিরান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান, হাজং স্টুডেন্টস কাউন্সিল ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক হরিদাস হাজংসহ বিভিন্ন ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের কৃষিজমিতে প্রস্তাবিত লেক খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্রুত বাতিলসহ ৫ দফা দাবি জানানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh asks India to halt border push-ins, cites security concerns

The move follows reports that BSF pushed in around 300 people into Bangladesh between May 7 and May 9

56m ago