বাংলাদেশের সাংবাদিকরা পুলিশ, রাজনৈতিক কর্মী, জঙ্গিদের আক্রমণের শিকার: আরএসএফ
গ্লোবাল মিডিয়া ওয়াচডগ রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের (আরএসএফ) বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো 'সম্পাদকীয় স্বাধীনতা' বজায় রেখেছে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'দুটি নেতৃস্থানীয় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম, বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতার, সরকারি প্রোপাগান্ডা আউটলেট হিসেবে কাজ করছে।'
আরএসএফের প্রতিবেদন বলছে, 'বেসরকারি খাতের মিডিয়া খাতে ৩ হাজার প্রিন্ট মিডিয়া, ৩০টি রেডিও স্টেশন, ৩০টি টেলিভিশন চ্যানেল এবং কয়েক শতাধিক সংবাদ ওয়েবসাইট রয়েছে৷ দুটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিক, বাংলা ভাষার প্রথম আলো এবং ইংরেজি ভাষার দ্য ডেইলি স্টার, সম্পাদকীয় স্বাধীনতা বজায় রেখেছে।'
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সরকারগুলো মিডিয়াকে যোগাযোগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে উল্লেখ করে এতে আরও বলা হয়েছে, '২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারও এর ব্যতিক্রম নয়।'
'তার (হাসিনার) দল আওয়ামী লীগের সদস্য ও সমর্থকরা প্রায়শই তাদের অপছন্দের সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে শারীরিকভাবে আঘাত করে। এমন সাংবাদিকদের থামানোর জন্য কিংবা মিডিয়া বন্ধ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে হয়রানি করা হয়। এমন প্রতিকূল পরিবেশে সরকার যা বলেছে সেগুলোকে চ্যালেঞ্জ না করার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করেন সম্পাদকরা।'
আরএসএফ বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে (ডিএসএ) 'সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের অন্যতম কঠোর আইন' বলে অভিহিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'এটি (ডিএসএ) কোনো প্রকার পরোয়ানা ছাড়াই তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের অনুমতি দেয়, যা সাংবাদিকদের সূত্রের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে এবং কোনো সাংবাদিক 'নেগেটিভ প্রচারণা' জাতীয় কিছু পোস্ট করলে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। … এই আইনি পরিবেশে সম্পাদকরা নিয়মিত নিজেদের সেন্সর করে।'
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাংবাদিকরা 'পুলিশি সহিংসতা, রাজনৈতিক কর্মীদের আক্রমণ, জঙ্গি সংগঠনগুলোর হাতে হত্যার শিকার হওয়ার বিষয়টি উন্মোচিত হয়েছে।'
তারা 'সবাই অধিক ঝুঁকিতে থাকেন, কারণ এই সহিংসতার কোনো শাস্তি হয় না। প্রায়শই সাংবাদিক ও ব্লগারদের কারাগারে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে রাখার জন্য ডিএসএ ব্যবহার করা হয়। এটি এমন একটি পেশা যেটি এখনও পুরুষ প্রধান। নারী সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হন এবং যখন তারা নিজেদের অধিকার রক্ষার চেষ্টা করেন, তখন অনলাইনে ঘৃণামূলক প্রচারণার শিকার হন।
Comments