দ. কোরিয়া থেকে উ. কোরিয়ায় যাওয়া সেই ব্যক্তির ভাগ্যে কী ঘটলো!

দুই কোরিয়াকে পৃথককারী ডিমিলিটারাইজড জোনে (ডিএমজেড) অবস্থিত একটি পাহাড়ি গ্রাম। ছবি: রয়টার্স

নিপীড়ন ও দরিদ্রতার কারণে উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে প্রায়শই দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশের সংবাদ পাওয়া যায়। রয়টার্স জানায়, গত কয়েক দশকে উত্তর কোরিয়ার ৩০ হাজারেরও বেশি নাগরিক পালিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় গেছেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো নাগরিকের এভাবে উত্তর কোরিয়ায় যাওয়ার ঘটনা একেবারেই বিরল।

গত শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ার এক নাগরিক সুরক্ষিত সীমান্ত অতিক্রম করে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেছেন। গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী এ তথ্য জানায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) জানায়, দুই কোরিয়াকে পৃথককারী ডিমিলিটারাইজড জোনের (ডিএমজেড) পূর্ব পাশে স্থানীয় সময় শনিবার রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে এক ব্যক্তির উপস্থিতি শনাক্ত হয়। তারপরই তারা তল্লাশি অভিযান শুরু করে।

জেসিএসের পক্ষ থেকে বলা হয়, 'আমরা নিশ্চিত করছি যে, ওই ব্যক্তি শনিবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে সামরিক সীমানারেখা অতিক্রম করে উত্তর কোরিয়ায় চলে গেছেন।'

এদিকে, আন্তঃকোরীয় সীমান্ত অতিক্রম করে উত্তর কোরিয়ায় যাওয়া সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে বার্তা পাঠানোর পরও দেশটির কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ সোমবার দ্য কোরিয়ান টাইমসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, গতকাল একটি পশ্চিমা যোগাযোগ লাইনের মাধ্যমে 'নিজদের নাগরিককে রক্ষা করার আলোকে' এই বার্তা পাঠায় দক্ষিণ কোরিয়া। যদিও গত শনিবার রাতে সুরক্ষিত সীমান্ত অতিক্রমকারী ব্যক্তি সম্পর্কে বিশদ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে ওই ব্যক্তি 'সম্ভবত' উত্তর কোরিয়ার একজন দলত্যাগী বলে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে এনকে নিউজ।

করোনা মহামারির মধ্যে কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের আগস্ট থেকে উত্তর কোরিয়ায় 'দেখা মাত্রই গুলি'র নীতি রয়েছে। ফলে ওই ব্যক্তির ভাগ্যে ঠিক কী ঘটেছে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বু সেউং-চ্যান নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, 'আমরা আমাদের জাতীয় সুরক্ষার আলোকে বার্তাটি পাঠিয়েছি এবং উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে এখনো কোনো উত্তর পাইনি।'

ওই ব্যক্তি দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক, না উত্তর কোরিয়ার দলত্যাগী, তা যাচাইয়ের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। এ ছাড়া, তিনি বেসামরিক লোক, না সামরিক কর্মী, সেটিও অজানা রয়ে গেছে।

জেসিএসের মুখপাত্র কর্নেল কিম জুন-রাক সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা বর্তমানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় অজানা ব্যক্তিকে শনাক্তের প্রক্রিয়ায় আছি।'

এ ছাড়া, উত্তর কোরিয়ার কোনো অস্বাভাবিক সামরিক গতিবিধি শনাক্ত করা যায়নি বলেও জানান তিনি।

সাম্প্রতিক ঘটনাটি দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চ প্রযুক্তির নজরদারি ব্যবস্থাকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

জেসিএসের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এনকে নিউজ আরও জানায়, আন্তঃকোরীয় সামরিক চুক্তি অনুসারে ২০১৮ সাল থেকে দুই কোরিয়ার সেনাদের প্রত্যাহার শুরু হয়েছিল, এমন একটি এলাকা দিয়ে এই সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনা ঘটেছে। সেসময় ওই এলাকাটিকে শুধু নজরদারি সরঞ্জামের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল।

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

4h ago