‘সুন্দরবন বাঁচাও’ ডাক দিয়ে বাংলাদেশে প্রচারে নামলেন পশ্চিমবঙ্গের রাম প্রসাদ

বাংলাদেশের মানুষকে সুন্দরবন রক্ষায় সচেতন করতে পথে নামলেন পশ্চিমবঙ্গের একজন খণ্ডকালীন স্কুল শিক্ষক। উষ্ণায়নের জেরে সুন্দরবনে প্রাণীকুল হুমকির মুখে। সেই সুন্দরবনকে বাঁচানোর ডাক দিয়ে এক মাস ধরে বাংলাদেশের অলিগলিতে ঘুরে প্রচার করবেন পরিবেশপ্রেমী রাম প্রসাদ নস্কর।
Ram Prasad
বাংলাদেশের মানুষকে সুন্দরবন রক্ষায় সচেতন করতে পথে নেমেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলার সোনারপুর থানার গড়িয়ার বোড়ল শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক রাম প্রসাদ নস্কর। ছবি: স্টার

বাংলাদেশের মানুষকে সুন্দরবন রক্ষায় সচেতন করতে পথে নামলেন পশ্চিমবঙ্গের একজন খণ্ডকালীন স্কুল শিক্ষক। উষ্ণায়নের জেরে সুন্দরবনে প্রাণীকুল হুমকির মুখে। সেই সুন্দরবনকে বাঁচানোর ডাক দিয়ে এক মাস ধরে বাংলাদেশের অলিগলিতে ঘুরে প্রচার করবেন পরিবেশপ্রেমী রাম প্রসাদ নস্কর।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলার সোনারপুর থানার গড়িয়ার বোড়ল শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ওই রাম প্রসাদ। নিজের বাড়ি একই জেলার সুভাষ গ্রামের পূর্বলয় এলাকায়। বাইসাইকলে ভ্রমণ তাঁর বহু বছরের নেশা। শুধু ভ্রমণ করা বললে ভুল বলা হবে, আসলে রাম প্রসাদের উদ্দেশ্য পরিবেশ বান্ধব যানবাহনে ঘুরে বেড়িয়ে পরিবেশ রক্ষায় মানুষের কাছে সচেতন বার্তা পৌঁছানো। আর সেই কাজটিই অনেক বছর ধরে করছেন এই রাম প্রসাদ।

খুলনা, যশোর, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, ভোলা, কক্সবাজার, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও ঢাকাসহ বাংলাদেশে প্রায় দুই হাজার ৭০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পরিকল্পনা নিয়েছেন রাম প্রসাদ। গতকাল (৫ অক্টোবর) যশোর হয়ে ফরিদপুরের দিকে রওনা হয়েছেন তিনি। দুদিন আগেই পেট্রাপোল সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন রাম প্রসাদ নস্কর।

বাংলাদেশে রওনা হওয়ার আগে রাম প্রসাদ কলকাতায় সাংবাদিকদের জানান, সুন্দরবনকে বাঁচাতে আগামীতে বিশ্ব ভ্রমণে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তার। সুন্দরবনের বড় অংশ বাংলাদেশের ভেতরে। তাই সেখানেই গুরুত্বপূর্ণ প্রচারের কাজ করতে চাইছেন তিনি।

“সুন্দরবন বাঁচাও” অভিযানে কয়েক হাজার লিফলেট ছাড়াও কিছু হ্যান্ডবিলও সঙ্গে নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও, তাঁর ব্যবহৃত স্মার্টফোনে থাকা সচেতনতামূলক ভিডিও প্রচারের কাজে ব্যবহার করবেন বলে জানান পরিবেশপ্রেমী এই স্কুল শিক্ষক।

দশ হাজার বর্গ কিলোমিটারের সুন্দরবনের মধ্যে ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বাংলাদেশে। বাকি ৩ হাজার ৯৮৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়। এখানে ২১৯ প্রজাতির পাখি, ৪০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৫৬ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১৫৬ প্রজাতির মাছ রয়েছে। রয়েছে ৬৭ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৩ প্রজাতির শামুক ও ১৫০ প্রজাতির শেওলাও।

প্রায় ১৪০ রকমের গাছপালা ছাড়াও বন্য প্রাণী হিসেবে রয়েছে বাঘ, মেছো বিড়াল, হরিণ ইত্যাদি। বিরল প্রজাতির ডলফিন, কুমির, ছাড়াও সুন্দরবনে রয়েছে শঙ্খচূড় সাপ, লিজার্ড রিভার টেরাপিন, ওয়াটার মনিটর, অলিভ রিডলে টার্টেল, হকসবিল টার্টেল, গ্রিন সি টার্টেলসহ বিভিন্ন প্রাণী।

পরিবেশ সচেতনার অভাবে প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে জলবায়ু। এই কুপ্রভাব পড়ছে সুন্দরবনের প্রাণীকুলে। সেই প্যারাবন রক্ষার্থেই এবার রাম প্রসাদ নস্করের এমন প্রয়াসকে গুরুত্ব দিয়েছে পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলো।

Comments

The Daily Star  | English
classes resume in Dhaka University

Classes resume in DU after over 3 months

Classes and exams began around 10:00am, with students from dormitories and off-campus locations returning to participate

2h ago