সিলেটে অন্যের হয়ে যাবজ্জীবন সাজাভোগকারী রিপন মুক্ত
হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির পরিবর্তে অপর সাজাভোগকারী ব্যক্তিকে মুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন সিলেটের একটি আদালত। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির বদলে অন্য জন কারাভোগ করছেন, গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশের পর এ নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হয়।
আলি আকবর সুমন হত্যা মামলার রায়ের পর ২০১৫ সালে রিপন আহমেদ ভুট্টোকে যাবজ্জীবন কারাবাসে পাঠানো হয়। কিন্তু ইকবাল হোসেন বকুল নামের এক ব্যক্তি এই মামলায় মূল সাজাপ্রাপ্ত।
সিলেট সদর উপজেলার পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা চেরাগ আলীর ছেলে সুমন ২০০৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন। এর কিছুদিন পর একটি জলাভূমিতে সুমনের লাশ পাওয়া যায়।
সুমন হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির বদলে অন্য একজন সাজা ভোগ করছেন গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশের পর বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজি আব্দুল হান্নান ও অতিরিক্ত জেলা জজ মো রেজাউল করিম ১৭ জানুয়ারি সিলেট জেলা ও সেসন জজের আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
আদালতে হান্নান সাংবাদিকদের জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে ভুট্টো, তার আইনজীবী শাহ আলম, বকুলের ভাই, শিক্ষানবিশ আইনজীবী শামীম আহমেদ ও দালাল লিয়াকত হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই আইনজীবী ও শিক্ষানবিশের বিরুদ্ধে জেলা বার কাউন্সিলকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় দালালমুক্ত হওয়া প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে ভুট্টো তার নিজের পরিচয় প্রকাশ করার পর বিষয়টি প্রথম সামনে আসে।
এই হত্যা মামলায় ২০১২ সালের জুন মাসে সিলেট সদর উপজেলার হাউশা গ্রামের দরাস মিয়া ওরফে গয়াস, তার স্ত্রী রুজিনা বেগম ও ইকবাল হোসেন বকুলকে যাবজ্জীবন সাজা দেয় আদালত।
মামলার নথিপত্র বলছে, ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর “বকুল” আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। সেখান থেকে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।
১৪ মাস কারাভোগ করার পর “বকুল” কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে তার নিজের পরিচয় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তার আসল নাম রিপন আহমেদ ভুট্টো, পেশায় ট্রাক চালক। সিলেট শহরের সৈয়দ মুগনি আবাসিক এলাকায় তার বাড়ি।
Comments