শিশুদের কাঁধে বইয়ের বোঝা কমছে ভারতে
শিশু পড়ুয়াদের কাঁধে বইয়ের বোঝা কমাতে উদ্যোগী হল বাংলাদেশর প্রতিবেশী দেশ ভারত। শ্রেণি অনুসারে বইয়ের সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়ার পাশাপাশি আগামীতে বইহীন করার বিষয় নিয়ে পরিক্ষামূলক প্রকল্প শুরু করেছে দেশটির সংশ্লিষ্ট দফতর। আবার কোনও রাজ্যে বাসায় ও স্কুলে মোট দুই সেট বই দিয়ে স্কুল ব্যাগহীন করার উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা চলছে।
দেশটির ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং’ সম্প্রতি তাদের দেওয়া সুপারিশে জানিয়েছে যে, প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া শিশুদের কাঁধে স্কুল ব্যাগে মাত্র দুটি পাঠ্য বই দেওয়া যাবে। তিনটি বই দেওয়া যাবে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া শিশুদের স্কুল ব্যাগে। বাচ্চাদের স্কুল ব্যাগে এর চেয়ে বেশি বই দেওয়া হলে স্কুল এবং অভিভাবক দু’পক্ষকেই জরিমানা এবং নোটিশ পাঠানোর বিধান রাখা হয়েছে ওই সুপারিশমালায়।
কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যখন বই কমানোর উদ্যোগ নিয়ে সুপারিশমালা তৈরি করে তা বাস্তবায়নের অপেক্ষায় ঠিক এরই মধ্যে একধাপ এগিয়ে দক্ষিণ ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে বইয়ের বদলে শিশুদের হাতে ‘ট্যাব’ তুলে দেওয়া শুরু হয়েছে। ওই ট্যাবগুলোর ওজন আড়াইশো থেকে সাড়ে তিনশ গ্রাম। আর ট্যাবের মধ্যে পাঠ্যপুস্তকের সব ‘প্রিন্ট সংস্করণ’ যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। শিশুরা শুধু আঙুল ছুঁলে ভেসে উঠবে বিভিন্ন ভাষার পাঠ্যপুস্তুক।
সস্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভরে কর রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘দেশ জুড়ে শিশুদের কাঁধে স্কুল ব্যাগের বোঝা কমানোর চেষ্টা চলছে। মহারাষ্ট্রসহ বেশ কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে ট্যাব দেওয়া শুরু হয়েছে’।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘শুধু ট্যাব দিয়ে বা বই কমিয়ে নয়। এই ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত দেখানোর মতো কাজ করেছে ছত্তিশগড় রাজ্য। সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষ দুই সেট বই দিয়েছে শিশুদের। একসেট বই স্কুলে রাখা আছে এবং অন্যসেট বই তাদের বাড়িতে। শিশুরা যখন স্কুলে আসছে, তখন তাদের ব্যাগের আর প্রয়োজন পড়ছে না’।
এক গাদা বই, জলের বোতাল, ছাতা দিয়ে শিশুদের কাঁধে স্কুল ব্যাগ তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই বয়সে ব্যাগের বোঝা শিশুর শারীরিক বিকাশের ক্ষেত্রে যেমন, তেমনই মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে মারাত্বক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
Comments