বিজ্ঞান শিক্ষায় নারী: পাশ্চাত্যের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ?

বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষায় মেয়েদের কম অংশগ্রহণ নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলে আপনাকে নতুন করে ভাবতে হবে। আপনি যতটা ভাবছেন তার চেয়েও বেশি সংখ্যক মেয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা নিচ্ছে। একটা উদাহরণেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ ও রসায়ন বিভাগে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী মেয়ে। জৈব বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় ও মেডিকেলে আশ্চর্যজনকভাবে এই সংখ্যা ৬০ শতাংশ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ মেয়ে। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান অনুষদে ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী ও ১৪ শতাংশ শিক্ষক নারী। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে জৈব বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিভাগে এই হার যথাক্রমে ৪৭ শতাংশ ও ১৬ শতাংশ।

উপরে যে তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে তার জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ও শিক্ষার্থীরা মনে করেন, মেয়েরা ভৌত বিজ্ঞানে ভালো করতে পারে না এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। তারা বলছেন বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের চেয়েও বেশি। পদার্থ, রসায়ন, গণিত ও জৈব বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মেয়েরা শীর্ষস্থান অধিকার করছে। অনেক বাধা থাকার পরও গবেষণায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশি মনোযোগী।

অত্যন্ত ভালো ফল করার পরও মেয়েরা তাদের প্রাপ্য স্বীকৃতি পাচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক জানান, বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট পেশায় চাকরি পাওয়া থেকে শুরু করে পদোন্নতি সব ক্ষেত্রেই মেয়েরা বৈষম্যের শিকার হয়। এছাড়াও প্রয়োজনীয় তহবিল না পাওয়া, পারিবার ও ক্যারিয়ারে ভারসাম্য, জেন্ডার বৈষম্য, সঠিক পরামর্শ দেওয়ার লোকের অভাব, বাচ্চার দেখাশোনা ব্যবস্থা না থাকা ও আত্মবিশ্বাসের অভাব বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট পেশায় মেয়েদের আসার প্রধান বাধা। এমনকি পুরুষ সহকর্মীর সমকক্ষ প্রমাণে মেয়েদের দ্বিগুণ কাজ করতে হয়।

বাংলাদেশের মেয়েদের এই অসাধারণ কৃতিত্ব কেন সাধারণ মানুষের কাছে এখনো অজানা? এর পরও কেন ভ্রান্তভাবে মনে করা হয় মেয়েরা বিজ্ঞান শিক্ষার উপযোগী নয়?

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

4h ago