এবার ঢাবির ছাত্রী হলের সিট দখলের দিকে ছাত্রলীগের নজর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে ছাত্রলীগ তাদের অনুসারীদের তোলার জন্য সিট দখলের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে তারা এই কাজের চেষ্টা করেন। বিজয় একাত্তর হলে সিট দখল নিয়ে রাতভর ছাত্রলীগের তাণ্ডবের একদিন পরই রোকেয়া হলে এই ঘটনা ঘটে।
হল প্রশাসনের বরাদ্দ করা সিটে ছাত্রলীগের অনুসারীদের তোলার চেষ্টার প্রতিবাদে ওই রাতেই হলের ভেতরে বিক্ষোভ হয়েছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনার জের ধরে গতকাল বিকালেও হলের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় বিক্ষবুব্ধ ছাত্রীরা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে সাধারণ ছাত্রীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। ছাত্রলীগের রোকেয়া হল ইউনিটের সভাপতি বিএম লিপি আক্তারকে এসময় নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। এই ঘটনায় মৌসুমী বিশ্বাস নামে একজন সাধারণ ছাত্রী আহত হন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ছাত্রীদের অভিযোগ, হলের বেশ কয়েকটি কক্ষ আগে থেকেই দখলে রয়েছে। গতকাল বিক্ষুব্ধরা হল প্রশাসনকে তাদের তিন দফা দাবি জানিয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো, দখলে থাকা কক্ষগুলো অবিলম্বে দখলমুক্ত করতে হবে।
বেশ কয়েকজন ছাত্রী জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লিপির নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী হলের এক্সটেনশন ভবনের পাঁচ জন ছাত্রীকে তাদের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। হলের অন্য ছাত্রীরা তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রতিবাদ জানান ও আবাসিক শিক্ষকদের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেন। মধ্যরাতের পর ছত্রীরা হলের ভেতর বিক্ষোভ করেন। তারা বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হলের মূল ভবনে ছয়টি ও এক্সটেনশন ভবনে দুটি কক্ষ অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন।
তবে সিট দখল ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লিপি। উল্টো তিনি বলেন, “বিক্ষোভকারীরা কোন সাধারণ শিক্ষার্থী নয়। ওর বামপন্থী।”
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হলের প্রোভোস্ট নাজমা শাহীন বলেন, “রুমে ছাত্রলীগের কেউ থাকলে পড়ালেখার পরিবেশ নষ্ট হয় ও অন্যরা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।”
“ছাত্রলীগের দখলে থাকা একটি কক্ষ দখলমুক্ত করে তালা লাগিয়ে দিয়েছি আমরা।” শনিবার সকালে হলের আবাসিক শিক্ষকদের সাথে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের ব্যপারে আশ্বাস দেন তিনি।
গত ১৪ তারিখ মধ্যরাতে অনুরূপ এক ঘটনায় বিজয় একাত্তর হলে তাণ্ডব চালায় ছাত্রলীগ। ভোর পর্যন্ত তারা শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাধ্যক্ষকে ধাওয়া দিয়ে তার কার্যালয়ে ভাংচুর চালায়। হলের কমন রুমে থাকা নিজেদের অনুসারীদের কক্ষে তুলতে এই কাজ করে তারা।
এই ঘটনার পরদিন ভাংচুরে যুক্ত পাঁচজনকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করে ছাত্রলীগ।
Comments