‘দেশকে খুব মিস করছি… সবার আগে আমার দেশ’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা, ঢাকা থিয়েটারের এক সময়ের নিয়মিত মঞ্চশিল্পী, টিভি নাটকের প্রিয়মুখ বীর মুক্তিযোদ্ধা রাইসুল ইসলাম আসাদ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আমেরিকার বোস্টনে যান। সেখানে এ মাসেই ফিরতে পেয়েছিলেন। কিন্তু, লকডাউনের কারণে দেশে ফিরতে পারেননি।
বোস্টন শহরে রাইসুল ইসলাম আসাদের স্ত্রী ও কন্যা দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করছেন। তিনি মাঝে মাঝে সেখানে ঘুরতে যান এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে আবার ফিরে আসেন।
সম্প্রতি রাইসুল ইসলাম আসাদের সঙ্গে কথা হয়েছিল দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদকের। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- কেমন আছেন দূরের দেশ আমেরিকায়?
এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এই তো আছি। সবখানেই তো করোনার ছোবল। তারপরও পরিবারের সঙ্গে সময়গুলো সুন্দরভাবে কাটছে। যতদিন বাঁচি সুস্থভাবে যেন বাঁচতে পারি।’
আজ ১৫ জুলাই বরেণ্য এই অভিনেতার জন্মদিন। এদিন সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলে, ‘এদেশে যখন সন্ধ্যা আমেরিকার বোস্টনে তখন সকাল।’
জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেই বললেন, ‘সবে মাত্র এদেশে সকাল হলো। নিজের ঘর থেকে সবার আগে জন্মদিনের শুভেচ্ছা পেয়েছি। তবে, নিজের দেশকে খুব মিস করছি। দেশের মানুষকে ভীষণ মিস মিস করছি। সবার আগে তো আমার দেশ।’
করোনাকালে কোনো নাটকে অভিনয় করেননি রাইসুল ইসলাম আসাদ। এ সময়ে ঢাকার নিজ বাসায় বই পড়ে ও টেলিভিশন দেখেই সময় কেটেছে তার। শুধু মাত্র শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত বঙ্গবন্ধু বায়োপিকে অভিনয় করতে বোম্বেতে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে করোনা আসার পর কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম। অনেক অফার এসেছে, কিন্ত কাজ করতে মন সায় দেয়নি। শুধু ভারতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু সিনেমার শুটিং করেছি। ওই সিনেমায় আমি মওলানা ভাসানীর চরিত্রটি করছি। দুর্দান্ত একটি কাজ হচ্ছে আমি মনে করি।’
ঢাকা থিয়েটারে একসময় নিয়মিত কাজ করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ। দীর্ঘ সময় মঞ্চের সঙ্গে নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন। ঢাকা থিয়েটারের বেশ কিছু আলোচিত নাটকে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন এই অভিনেতা।
মঞ্চকে মিস করনে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মঞ্চেই তো সোনালী সময় কাটিয়েছি। মঞ্চকে ভীষণ ভীষণভাবে মিস করি।’
বাংলাদেশ ছাড়াও কলকাতার অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ। তার অভিনীত পদ্মা নদীর মাঝি, লাল দরোজা, মনের মানুষসহ ওপার বাংলার আলোচিত ও বহুল প্রশংসিত সিনেমায় অভিনয় করে নিজ দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি। বাংলাদেশে ছয়বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
এখনকার চাওয়া নিয়ে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অভিনয় নিয়ে এখন আর ওইভাবে কোনো বড় চাওয়া নেই। একটাই চাওয়া ভালোভাবে বেঁচে থাকি যেন। বেঁচে থাকাটাই এখন বড় কথা।’
Comments