'সয়াবিন তেল নাই'

রাজধানীর কাওরানবাজারের একটি দোকানে মূল্য তালিকায় 'সয়াবিন তেল- নাই' লেখা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

গত দুদিন ধরে রাজধানীর অধিকাংশ বাজারেই পাওয়া যাচ্ছে না সয়াবিন তেল।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার কাওরানবাজার, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়ার বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, কোনো দোকানেই ২ লিটার থেকে ৫ লিটার পর্যন্ত বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই।

ফলে ঈদের আগে ক্রেতাদের বাড়তি চাপের মুখে পড়ছেন বিক্রেতারা।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পাম তেল উৎপাদনকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া উদ্ভিজ্জ তেল রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় বাংলাদেশের বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমেছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পরিবেশকদের কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী ভোজ্যতেল পাচ্ছেন না তারা।

কাওরানবাজারের কুমিল্লা জেনারেল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. গোফরান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি গত ২০ বছর ধরে ব্যবসা করছি। কখনোই এমন অবস্থা দেখিনি। গত ৩ দিন ধরে আমার দোকানে কোনো সয়াবিন তেলের বোতল নেই। ঈদের আগে ব্যাপক চাহিদার মধ্যেও ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'ডিলাররা ৩ দিন ধরে ঘুরাচ্ছে। সকালে গেলে বলে বিকেলে আসেন, বিকেলে গেলে বলে রাতে আসেন।'

সয়াবিন তেলের সরবরাহ না থাকায় অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বিক্রিও কমে গেছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন বিক্রেতা।

কাওরানবাজারের ইউসুফ জেনারেল স্টোরের মালিক মো. ইউসুফ বলেন, 'তেলের জন্য অন্যান্য মাল বিক্রি করতে পারছি না। অনেক ক্রেতাই আমাদেরকে ফোন করে দোকানে আসেন। তেল নাই জানার পর তারা আর আসছেন না। অন্য দোকান থেকেই সব জিনিস কিনছেন।'

কয়েকটি দোকানে সয়াবিন তেল থাকলে তা এখন বিক্রি না করে রেখে দিচ্ছেন। ঈদের পর দাম বাড়তে পারে এমন একটি গুজব ছড়িয়েছে। তাই তারা লুকিয়ে রাখছেন।

কাওরানবাজারের পরিবেশক সিদ্দিক এন্টারপ্রাইসের আব্দুল কাইয়ূম বলেন, 'বাজারে এখন দৈনিক ২ হাজার লিটার সয়াবিন তেলের চাহিদা আছে। আমরা ২০০ লিটার দিতে পারছি। যিনি ২০ লিটার বোতল চাইছেন তাকে ২টা দিচ্ছি। একেবারেই দিচ্ছি না এমন না।'

এদিকে বাজারে সয়াবিন তেল না পাওয়া যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা। সয়াবিন তেলের খোঁজে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরছেন ক্রেতারা। কয়েকটি দোকানে হাফ লিটারের কয়েকটি বোতল আছে। সেগুলোই কয়েক বোতল করে কিনছেন ক্রেতারা।

ঢাকার কয়েকটি সুপারশপ ঘুরে দেখা গেছে, সুপারশপগুলোতে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে ভিড় করছেন ক্রেতারা।

ক্রেতাদের অভিযোগ, মুদি দোকানের বিক্রেতারা বেশি দামে বিক্রির জন্য তেল লুকিয়ে রাখছেন। বোতলের গায়ে লেখা দামের চাইতে বেশি দামে তেম বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে কাওরানবাজারের দুই বিক্রেতা বলেন, 'বাড়তি দাম দিয়ে তেল বিক্রির সুযোগ নেই। কারণ মোবাইল কোর্ট এখানে সক্রিয়। এমন কিছু ঘটলে মোটা অংকের জরিমানা গুনতে হবে।'

মগবাজারে একটি মুদি দোকান চালান মো. ইয়াসিন। তিনি জানান, ক্রেতাদের চাপের মুখে পড়ে কাওরানবাজারে তেল কিনতে এসেছিলেন তিনি। ২০-২৫টি দোকান ঘুরেও কোনো সয়াবিন তেল পাননি।

Comments

The Daily Star  | English

Israel-Iran conflict: what we know

International calls for restraint are multiplying, as fears grow the Middle East could be on the threshold of a broader conflict.

2h ago