জ্বালানি সাশ্রয়ী পথ দেখাবে গুগল ম্যাপ
সব পথ আমাদের চেনা নয়, আবার প্রায়ই নতুন পথে যাবার দরকার হয়ে পড়ে। তাই এখন থেকে পথ হারানোর পর সেটা খুঁজে পেতে আশেপাশের পথচারীদের বিরক্ত করার দিন পাল্টেছে অনেক আগেই।
এখন আমাদের ফোনের পর্দাতেই রাখা আছে, মোটামুটি এক নির্ভুল পথ নির্দেশকারী, আমাদের নিত্যকার চলার পথের লাইটহাউজ– গুগল ম্যাপ। হাতের ডান-বাম, চলার দিক, এমনকি কয় পা হাঁটলে গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে, সবই গুগল ম্যাপের বদৌলতে অনেক সহজ হয়ে গেছে।
তবে, এটুকুতেই থেমে নেই তারা। নতুন নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে গুগল, যাতে আরও বেশি কার্যকর হতে পারে গুগল ম্যাপের সঙ্গ।
সেই জের ধরেই গতবছর, অর্থাৎ ২০২১ সালে গুগল ম্যাপ বিভিন্ন যানবাহনকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দিক নির্দেশের ক্ষেত্রে এক বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সাধারণ নেভিগেশন বা দিক নির্দেশক অ্যাপগুলো যেখানে সবচেয়ে কম সময়ে যাত্রার ওপর জোর দেয়, সেক্ষেত্রে গুগল ম্যাপ পরামর্শ দেয় কম জ্বালানি ব্যবহার করে অধিক পরিবেশবান্ধব পথে যাবার। যাত্রার অনুমিত সময় এক হলেও বিকল্প রাস্তাটিকেই তারা এগিয়ে রাখে।
তবে, এ ধরনের জ্বালানি সাশ্রয়ী দক্ষতা সব ধরনের যানবাহনের ক্ষেত্রে এক নয়। আবার একই পদ্ধতিতে সব যানবাহন পরিচালনাও করা যায় না।
যুক্তরাজ্যের পথেঘাটে এখনো গ্যাসচালিত যানবাহন বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া কিছু ডিজেলচালিত বাহনেরও দেখা মেলে। তথাকথিত আইসিই বাহনগুলোর জন্য সবচেয়ে উপযোগী পথও বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য ভালো হবে না। ফারাকটা বাহনের ধরনের ওপরও অনেক বেশি নির্ভর করে।
গুগল ম্যাপের সবশেষ বেটা আপডেট ভার্সন ১১.৩৯-এ এমন কিছু প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যাতে বাহনটির ইঞ্জিনের প্রকৃতি চিহ্নিত করে বাহনটির ধরন সহজে বুঝে নিতে পারে। সর্বোচ্চ পরিমাণ জ্বালানি বা শক্তি বাঁচাতে গুগল ম্যাপের নেভিগেশন এ কারণে অপশন হিসেবে রেখেছে– গ্যাস, ডিজেল, বিদ্যুৎ ও হাইব্রিড শক্তিচালিত বাহনগুলোকে। যেকোনো একটি বেছে নিলেই সে অনুযায়ী পথ বাতলে দেবে এই অ্যাপ, চালকের ঝক্কিটাও কমে যাবে অনেকখানি।
এ ছাড়া, এই অ্যাপে বিভিন্ন সময়ে চালকের চাহিদা অনুযায়ী ইঞ্জিনের ধরনও পালটে নেওয়া যাবে। অর্থাৎ একই চালক যদি বিভিন্ন ধরনের বাহন ব্যবহার করেন, তবু একটি অ্যাপেই সমাধান মিলবে।
এই নতুন পরিবর্তনের মাধ্যমে গুগল ম্যাপ পরিবেশ সচেতনতার একটি বার্তা দেবার চেষ্টা করেছে। এখন পর্যন্ত বাহন নির্বিশেষে শক্তি সাশ্রয়ী পথ বাতলে দেবার বিষয়ে তারা বেশ সফলও হয়েছে।
তবে, বেটা পরীক্ষণের মাধ্যমে এই বিষয়টির কার্যকারিতা নিয়ে শুধু পরীক্ষা-নিরীক্ষাই চলছে। পথেঘাটে সবার ফোনে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে এবং সাশ্রয়ী পথের খোঁজ পেতে চালকদেরকে আরও বেশ কিছু সপ্তাহ অন্তত অপেক্ষা করতে হবে।
গ্রন্থনা: অনিন্দিতা চৌধুরী
Comments