টুইটারে চাকরির আগ্রহ ২৬৩ শতাংশ বেড়েছে

স্পেস এক্স এর রকেট ফ্যালকন ৯ এর সফল উড্ডয়নের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইলন মাস্ক। ফাইল ছবি: রয়টার্স

সম্প্রতি প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কিনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন খেয়ালি মানুষ হিসেবে পরিচিত বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। অনেক বিশ্লেষকের মতে, এই ঘোষণায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির ভবিষ্যৎ ধোঁয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সিএনবিসি'র প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্রির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে মাস্ক নিজেই অস্থায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে টুইটারের দায়িত্ব বুঝে নেবেন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম 'ফরচুন'র গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য হ্যারিস পোলের সমীক্ষার বরাত দিয়ে জানায়, ৫৯ শতাংশ মার্কিন নাগরিক ইলন মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করছেন।

তবে টুইটারের বর্তমান কর্মীদের আশংকা, মালিকানা পরিবর্তনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব সংস্কৃতি ও কার্যধারায় নাটকীয় পরিবর্তন আসবে।

মাস্ক কীভাবে বর্তমান কর্মীদের ধরে রাখবেন কিংবা কীভাবে নতুন কর্মীদের নিয়োগ দেবেন, সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। মালিকানা পরিবর্তনে কর্মী নিয়োগ ও ধরে রাখার সক্ষমতার ওপর হুমকি আসতে পারে বলে টুইটার এসইসিকে জানিয়েছে।

তবে প্রতিষ্ঠানের খালি পদের বিষয়ে চাকরি প্রার্থীদের উৎসাহ রাতারাতি বেড়ে গেছে।

টেসলা ও স্পেস এক্সের সত্ত্বাধিকারী ইলন মাস্ক টুইটার কেনার বিষয় জানানোর পর থেকেই প্রার্থীদের আগ্রহ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।

অনলাইন চাকরির ওয়েবসাইট ও চাকরি সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান গ্লাসডোরের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ও ডেটা সায়েন্টিস্ট ড্যানিয়েল ঝাও বৃহস্পতিবার টুইটারে জানান, গত ২৪ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে টুইটারে চাকরির বিষয়ে প্রার্থীদের আগ্রহ ২৬৩ শতাংশ বেড়েছে।

 

ঝাও জানান, চাকরি সম্পর্কে আগ্রহ পরিমাপ করতে প্রতিদিন টুইটারের জব সাইটে ক্লিকের সংখ্যার হিসেব করা হয়। এ ক্ষেত্রে ভিত্তি হিসেবে গত মার্চে (তখনও ইলন মাস্ক টুইটার কেনার বিষয়ে কিছু জানাননি) দৈনিক গড় ক্লিকের সঙ্গে এখনকার গড় ক্লিকের তুলনা করা হয়েছে।

তবে ক্লিক করা মানেই এই নয় যে মানুষ চাকরির আবেদন করছেন। এ ক্ষেত্রে অনেকে হয়তো গণমাধ্যমে টুইটারের নাম বারবার শুনে আগ্রহী হয়ে চাকরির সাইটে ঢুকছেন।

ক্লিকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অন্তত এটুকু নিশ্চিত যে, শুধু গণমাধ্যমের সংবাদে নয়, এ প্রতিষ্ঠানে কী কাজের জন্য কেমন কর্মীর প্রয়োজন, সে বিষয়েও মানুষের আগ্রহ আছে।

টুইটার বার্তায় ঝাও আরও বলেন, 'ইলনের ব্যাপারে আপনার যা ইচ্ছে তাই বলতে পারেন। তবে তার অসংখ্য ভক্ত রয়েছে, যারা তার পক্ষে কাজ করার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় অভিভূত হয়েছেন।'

'মালিক নন, সিইও হিসেবে তার (মাস্কের) এই আগ্রহকে কাজে লাগানোর সম্ভাবনাই বেশি,' যোগ করেন তিনি।

শুক্রবার মাস্ক টুইটারে কর্মী নিয়োগ সম্পর্কে বার্তা দেন। তিনি বলেন, 'টুইটার কেনার প্রক্রিয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি হার্ডকোর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিজাইন, ইনফোসেক ও সার্ভার হার্ডওয়্যারের দিকে বিশেষ নজর দেবে।'

'আমার দৃঢ় বিশ্বাস, প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে যেসব ব্যবস্থাপক কাজ করেন, তাদের সবাইকে প্রযুক্তির বিষয়ে অসামান্য জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে। সফটওয়্যারের ব্যবস্থাপকদের নিজের হাতে ভালো সফটওয়্যার তৈরি করার সক্ষমতা থাকতে হবে। নতুবা বিষয়টি এমন দাঁড়াবে যে, একজন ঘোড়সওয়ার বাহিনীর অধিনায়ক নিজে ঘোড়া চড়তে জানেন না,' যোগ করেন মাস্ক।

এ সপ্তাহে মার্কিন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে টুইটার আরও জানায়, মাস্ক প্রতিষ্ঠানটি কিনে নিলে তারা বিজ্ঞাপনদাতা, কর্মী ও ব্যবহারকারী হারাতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিক্রির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে বা এ প্রক্রিয়া ব্যর্থ হলেও পরিণাম একই হতে পারে বলে তারা দাবি জানান।

প্রতিবেদনে টুইটার কর্মীদের ধরে রাখা ও নতুন কর্মী নিয়োগের বিষয়টির ওপর বিশেষ জোর দেয়। তাদের আশংকা, বিক্রি সংক্রান্ত অনিশ্চয়তায় গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য উপযুক্ত কর্মীদের আকৃষ্ট করা ঝামেলাপূর্ণ হতে পারে এবং একই সঙ্গে, বর্তমান কর্মীরা মনোযোগ হারাতে পারেন এবং সার্বিকভাবে প্রতিষ্ঠানের উপযোগিতা কমে যেতে পারে।

টুইটার বোর্ডে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর গত মাসে মাস্ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি কিনে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর থেকে তিনি এই প্ল্যাটফর্মে বাকস্বাধীনতা না থাকার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করেন। এর আগে তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন।

পরে, টুইটার বোর্ড সর্বসম্মতিক্রমে মাস্কের প্রস্তাবে রাজি হয় এবং প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Thailand sees growing influx of patients from Bangladesh

Bangladeshi patients searching for better healthcare than that available at home are increasingly travelling to Thailand instead of India as the neighbouring country is limiting visa issuances for Bangladeshi nationals.

13h ago