বাংলাদেশ থেকে নিরাপত্তারক্ষী নেবে মালয়েশিয়া
বাংলাদেশ থেকে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া। নেপালের পর এই খাতে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে কর্মী পাঠাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
গত বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে বাংলাদেশের সেনা কল্যাণ সংস্থা এবং মালয়েশিয়ান সিকিউরিটি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (পিআইকেএম) এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা গতকাল শুক্রবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০১৮ সালেই একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল। কিন্তু তখন বাংলাদেশ থেকে নিরাপত্তারক্ষীদের মালয়েশিয়ায় নিয়োগ করা যায়নি। কারণ তৎকালীন মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।'
তিনি জানান, নিরাপত্তারক্ষীর অভাবে থাকা মালয়েশিয়া বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন থেকে এই খাতে কর্মী নিয়োগ দিতে চায়। প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা দেখে পিআইকেএম বাংলাদেশকে বেছে নেয়।
তিনি আরও জানান, সেনা কল্যাণ সংস্থার প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের কাজ দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধা এবং আন্তর্জাতিক নিয়োগ সংস্থা হিসেবে লাইসেন্স রয়েছে।
নিয়োগ পদ্ধতি, সুবিধা এবং নিয়োগ শুরুর সময় এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে মালয়েশিয়ায় নিরাপত্তারক্ষীর তীব্র ঘাটতি থাকায় শিগগির নিয়োগ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
পিআইকেএম সভাপতি রামলি ইউসুফ মালয়েশিয়ার অনলাইন নিউজ পোর্টাল মালয়েশিয়াকিনিকে বলেছেন, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি বলেছে যে তারা বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন থেকে গার্ড আনার বিষয়ে বিবেচনা করতে পারে।
পিআইকেএম শুধুমাত্র বাংলাদেশের নাম সুপারিশ করে। এর কারণ হিসেবে রামলি বলেন, 'যখন সেখানে (বাংলাদেশে) ট্রেনিং স্কুল দেখতে গিয়েছিলাম, আমরা দেখেছি কীভাবে তারা ৩ মাস ধরে প্রশিক্ষিত হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে তারাই সেরা।'
রামলি জানান, পিআইকেএম মালয়েশিয়া সরকারকে দ্রুত অনুমোদন দিতে আহ্বান জানিয়েছে। কারণ, গত বছর করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে অনেকেই চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীর ঘাটতি রয়েছে।
তিনি আরও জানান, নেপালি নিরাপত্তারক্ষীদের এখানে ১০ বছর পর্যন্ত কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই বাড়িতে ফিরে যেতে চাইছেন এবং নতুন করে অভিবাসী শ্রমিক আসার ওপর নিষেধাজ্ঞায় পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমাদের প্রায় ৪০ হাজার নেপালি নিরাপত্তারক্ষী ছিল। এই সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজারে নেমে এসেছে।'
'আমরা চাই এই শূন্য পদগুলোতে সরকার বাংলাদেশি নিরাপত্তারক্ষী আনুক।'
নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে যে নিরাপত্তারক্ষী নেওয়া হচ্ছে তাদের জন্য তুলনামূলক খরচ সম্পর্কে জানাতে অস্বীকৃতি জানান রামলি। তিনি জানান, এটি একটি 'বিষয়ভিত্তিক বিষয়', যা এখনও আলোচনাধীন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, তাদের নাগরিকরা এই শূন্যপদে যোগ দিতে আগ্রহী নয়।
মালয়েশিয়াকিনির প্রতিবেদন মতে, অন্যান্য 'নোংরা, বিপজ্জনক এবং কঠিন' কাজের মতোই এই খাতেও অভিবাসী শ্রমের ওপর নির্ভর করতে চাচ্ছে দেশটি।
Comments