গ্যাস অনুসন্ধানের টাকায় আমদানি

বিইআরসির অনুমতি নেয়নি: চেয়ারম্যান
পেট্রোবাংলা অফিস। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) অনুমতি ছাড়াই গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের (জিডিএফ) ২ হাজার কোটি টাকা এলএনজি আমদানি করতে ব্যয় করেছে পেট্রোবাংলা।

বিইআরসি বলছে, মূলত গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য এই তহবিল গঠন করা হয়েছিল এবং জিডিএফ থেকে অর্থ ব্যয়ের জন্য পেট্রোবাংলা তাদের কোনো অনুমতি নেয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিইআরসি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল গতকাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানান, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি বলেন, '...জিডিএফ থেকে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে পেট্রোবাংলা প্রবিধানগুলো অনুসরণ করেছে কী না, আমরা সেগুলো খতিয়ে দেখবো।'

চলতি মাসের জন্য তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ঘোষণা করতে বিইআরসি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রাইভেট কোম্পানির বিক্রি করা এলপিজির প্রতিটি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৫ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২১৯ টাকা করা হয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে 'জিডিএফ থেকে অস্থায়ী ঋণ' হিসেবে ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের জন্য গত ৬ জুলাই অর্থ বিভাগের অনুমোদন পায় পেট্রোবাংলা।

তবে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জিডিএফ কেবল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য চালু হয়েছিল, গ্যাস আমদানির জন্য নয়। আর জিডিএফ'র প্রবিধান অনুযায়ী, এই তহবিল থেকে অর্থ ব্যয়ের জন্য পেট্রোবাংলা বিইআরসির অনুমতি নিতে আইনত বাধ্য।

গতকাল দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, 'এটা বেআইনি।'

তিনি বলেন, 'পেট্রোবাংলা এর আগেও জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল থেকে এ ধরনের ঋণ নিয়েছিল, কিন্তু ফেরত দেয়নি।'

জিডিএফ'র প্রবিধান অনুযায়ী, তহবিল থেকে অর্থ কেবল গ্যাস অনুসন্ধান, উৎপাদন, উন্নয়ন এবং বিতরণে ব্যয় করা যেতে পারে।

যোগাযোগ করা হলে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান, তহবিলটি গ্যাস আমদানির জন্য না হলেও, জরুরি কারণে তাদের তা প্রয়োজন ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা জ্বালানি সচিবের নেতৃত্বে গঠিত জিডিএফ ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে এই অর্থের জন্য আবেদন করেছি। অর্থ বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে তারাই আমাদের এটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।'

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য গতকাল অর্থ বিভাগের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে, গত ২৭ জুন জিডিএফ'র থেকে নেওয়া ৩ হাজার কোটি টাকা ফেরত দিতে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দিয়েছিল বিইআরসি। এই টাকা তারা ২০২১ সালে উদ্বৃত্ত অর্থ হিসেবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়ে দেয়।

এর বাইরেও পেট্রোবাংলা এলএনজি আমদানির জন্য অন্য একটি তহবিল (জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল) থেকে ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৯ হাজার ২২৭ কোটি টাকা বেশি নিয়েছিল। সেটিও ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা ছিল বিইআরসি'র।

এ বিষয়ের অগ্রগতি জানতে চাইলে বিইআরসি চেয়ারম্যান সংস্থার উপ-পরিচালক (শুল্ক) কামরুজ্জামানকে উত্তর দিতে বলেন। কামরুজ্জামান বলেন, 'এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আপডেট নেই। আমরা শিগগির তাদের (পেট্রোবাংলা) এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করবো।'

২০০৯ সালে বিইআরসি গ্যাসের দাম বাড়ানোর পর উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়ে জিডিএফ গঠন করে দেয়। পরে ২০১৯ সাল থেকে গ্রাহকদের গ্যাসের বিলের একটি অংশ ওই তহবিলে জমা করা শুরু হয়।

Comments

The Daily Star  | English
explanations sought from banks for unusual USD rates

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago