সীমানা প্রাচীর ভেঙে সাফারি পার্কে বন্য হাতির পাল

ছবি: সংগৃহীত

সীমানা প্রাচীর ভেঙে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বন্য হাতির পাল ঢুকে পড়েছে বলে পার্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম শুক্রবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত প্রায় ৪ বছর ধরে বন্য হাতির পাল প্রায়ই সাফারি পার্কের সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করছে।'

সীমানা প্রাচীর ভেঙে বন্য হাতি সাফারি পার্কে প্রবেশ করে। ছবি: সংগৃহীত

এই সাফারি পার্কে ছুটির দিনে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার পর্যটক আসেন বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, 'সাফারি পার্কে বেড়াতে আসা পর্যটকরা হটাৎ করে বন্য হাতি চলে আসার আতঙ্কে সবসময় উদ্বিগ্ন থাকেন।'

'পার্কের ভেতরে বা বাইরে আমাদের দায়িত্ব পালনের সময় হঠাৎ বন্য হাতি এসে পড়ে। এজন্য আমরাও সবসময় আতঙ্কে থাকি,' যোগ করেন তিনি।

সাফারি পার্কে বন্য হাতি ঢুকে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকা ছাড়া কিছুই করার নেই। পার্কে হাতি প্রবেশে বাধা দিতে গেলে সমস্যা আরও প্রকট হবে।'

তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, বলেন তিনি।

২০০১ সালে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন ডুলাহাজারা এলাকার প্রায় ৯০০ হেক্টর বনভূমিকে সাফারি পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানান, আগে কক্সবাজার ও বান্দরবানের বনগুলোতে বিপুল সংখ্যক বন্য হাতি অবাধে বিচরণ করতে দেখা যেত।

কিন্তু আবাসস্থল ধ্বংস ও খাদ্য সংকটের কারণে একদিকে যেমন হাতির সংখ্যা কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে লোকালয়ে ও সাফারি পার্কে হাতি ঢুকে পড়ছে বলে মনে করছেন তারা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এইচ এম রায়হান সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বছরের পর বছর কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা ও বান্দরবানের লামা উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে বনের কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। এভাবে বন উজাড়ের কারণে ওই এলাকায় বন্য হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে গেছে।'

কক্সবাজারে বড় বড় স্থাপনা এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কারণে বন্য হাতির করিডোরগুলো অবরুদ্ধ হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত নির্মাণাধীন রেললাইনের কারণে চুনতি-ফাঁসিয়াখালী-মেধাকচ্ছপিয়া হাতির করিডোর মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েছে।'

'রোহিঙ্গাদের আসা, দোহাজারী-ঘুমধুম রেললাইন এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে স্থল মাইন পুঁতে রাখার কারণে ওই এলাকায় বন্য হাতিগুলো অনেক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে,' যোগ করেন এই অধ্যাপক।

এ বিষয়ে বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, 'মানুষ ও হাতির মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে আমরা ইতোমধ্যে কাপ্তাই, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ২৭টি রেসপন্স টিম গঠন করেছি। প্রতি টিমে ১০-১২ জন করে সদস্য আছে।'

করিডোর দিয়ে হাতির চলাচলে সহযোগিতা করার পাশাপাশি মানুষ যেন সেখানে কোনো বাধা সৃষ্টি না করতে পারে সে বিষয়ে রেসপন্স টিম নজরদারি করে থাকে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

No scope to avoid fundamental reforms: Yunus

Conveys optimism commission will be able to formulate July charter within expected timeframe

3h ago