আহত নীলগাইটি গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে মারা গেল
ভারত থেকে আহত অবস্থায় ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় প্রবেশ করা নীলগাইটি গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে মারা গেছে। হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম আজ শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার সীমান্তবর্তী ভবানন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ওসি জানান।
ওসি তাজুল ইসলাম জানান, গতকাল বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার মিনাপুর সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পেরুনোর সময় আহত হয়ে একটি নীলগাই বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
গ্রামবাসী বিষয়টি জানতে পেরে প্রাণীটিকে ধরতে তাড়া করে। এক পর্যায়ে প্রাণীটি ভবানন্দপুর গ্রামের রেজাউল হকের সুপারি বাগানে দুটি গাছের মধ্যে আটকা পড়ে বলে জানান ওসি।
খবর পেয়ে হরিপুর থানার পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা নীলগাইটি উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
হরিপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উদ্ধারের সময় নীলগাইটির মুখ, পা ও পেট দিয়ে রক্ত ঝরছিল। কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে আসার সময় নীলগাইটি আহত হয়েছিল। পরে গ্রামবাসীর তাড়া খেয়ে প্রাণীটি আতঙ্কিত হয়ে যায়।'
'উদ্ধারের পর চিকিৎসা দেওয়া হলেও ধূসর রঙের পুরুষ প্রজাতির নীলগাইটিকে বাঁচানো যায়নি,' বলেন তিনি।
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল করিম বলেন, 'নীলগাইটিকে সুস্থ করে তুলতে পারলে ভালো লাগত। মারা যাওয়ার পর নীলগাইটিকে আজ বিজিবির কারিগাঁও ক্যাম্পে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।'
২০১৮ সালে থেকে এখন পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নওগাঁ জেলায় ৬টি নীলগাই ধরা পড়ে। এরমধ্যে ৩টিই গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে মারা যায়।
নীলগাই নাম হলেও প্রাণীটি দেখতে অনেকটা ঘোড়ার মতো। পুরুষ নীলগাই গাঢ় ধূসর, প্রায় কালচের কাছাকাছি আর স্ত্রী নীলগাই লালচে বাদামি রঙের।
বাংলাদেশে একসময় দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ে প্রচুর নীলগাই দেখা যেত। কিন্তু পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে ১৯৪০ সালের পর থেকে এ দেশের বনাঞ্চলে প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রাণীটিকে আর তেমন দেখা যায় না।
তাই নীলগাইকে বাংলাদেশে বিলুপ্ত প্রাণী ঘোষণা করা হয়। তবে প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রায় ১ লাখ নীলগাই আছে বলে জানা গেছে। সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে প্রায়ই নীলগাই ভারত থেকে বাংলাদেশে চলে আসে।
Comments