হাওরের কান্না
টানা ২ সপ্তাহের বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে দুর্ভোগ বেড়েছে সুনামগঞ্জের হাওর জনপদে। বর্তমানে জেলার ৫ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি চললেও নদীর পানির উচ্চতা কিছুটা কমেছে। তবে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার অবস্থা এখনো বেশ নাজুক।
সিলেট আবহাওয়া অফিস ও সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ভারতের চেরাপুঞ্জি—আসামে বৃষ্টি কম হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ শহরতলির সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা আলেয়া বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ১২ মে সড়ক ভেঙে করচার হাওরের উঁচু এলাকায় পানি ঢুকে ধান ডুবে যায়। পানির নীচ থেকে কেউ কেউ ধান কেটে এনেছেন এবং এখনো আনছেন। কিন্তু এই ধান শুকানোর সুযোগ না পাওয়ায় পচে নষ্ট হচ্ছে।'
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনেক বাড়িতে পানি উঠেছে। আমাদের গ্রামের রাস্তায় পানি, স্কুলে পানি, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। চাষ করা জমির ফসল তলিয়ে গেছে।'
একই উপজেলার কৃষক আমীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানিতে ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। ৩ একর জমি চাষ করেছিলাম, একটু ধানও কাটতে পারিনি। হঠাৎ পানি এসে আমার সব নিয়ে গেছে।'
দোয়ারাবাজার উপজেলার রায়নগর এলাকার মাঝি সায়েদ মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানি কমেছে, তবে ভোগান্তি চরম আকার নিয়েছে। নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা এখনো ডুবে আছে। ফলে নৌকায় করে স্থানীয়দের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি, এতে আমাদের কিছু আয়ও হচ্ছে।'
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামছুদ্দোহা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২ দিন একই অবস্থায় থাকবে। নদীর পানির উচ্চতা কিছুটা কমেছে। ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জি—আসামে বৃষ্টি কম হয়েছে। সুনামগঞ্জে হয়েছে ৪৬ মিলিমিটার।'
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ রোববার আবহাওয়া আগের মতোই থাকবে। তবে ২৩, ২৪ ও ২৫ মে বৃষ্টিপাত কমার সম্ভাবনা আছে। এই ৩ দিন উজানেও (মেঘালয়—চেরাপুঞ্জিতে) বৃষ্টি কম হবে।'
Comments