ভোলা, বরগুনা ও পটুয়াখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রবল বৃষ্টি, উজানে পানির ঢল, পূর্ণিমা ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে নদ-নদীর পানি বেড়ে ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভোলার তুলাতুলি ঘাট থেকে তোলা। ছবি: সংগৃহীত

প্রবল বৃষ্টি, উজানে পানির ঢল, পূর্ণিমা ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে নদ-নদীর পানি বেড়ে ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভাগীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, বিভাগের নয়াভাঙ্গানি, বিষখালী, পায়রা, মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে ধারাবাহিকভাবে পানি বাড়তে শুরু করেছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ায় ভোলার ৪০টি চরের মধ্যে অন্তত ৩০টি চরের কোথাও কোথাও পাঁচ থেকে ছয় ফুট পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে। ভোলা সদরের নাছির মাঝি, মনপুরা উপজেলার চর নিজাম, কলাতলীর চর, চর যতিন, চরফ্যাশনের কুকরিমুকরি, ঢালচর, চর পাতিলা ও মাছের চর প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া প্লাবিত হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও বরগুনার জেলাসদর, আমতলী ও তালতলী উপজেলার নিম্নাঞ্চল।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিভাগের কোথাও বাঁধ উপচে পানি ঢোকেনি। তবে, প্রায় সবগুলো বড় নদীর পানিপ্রবাহ গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়ছে।'

কয়েকদিনের মধ্যে দুই থেকে প্রায় ছয় ফুট পর্যন্ত পানি বেড়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। পানি বাড়ার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের মানুষেরা। এছাড়া ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে কৃষি ও মৎস্য সম্পদের।

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২৩ জুলাই থেকে কুকরিমুকরি ও চরপাতিলা এলাকার বাঁধের বাইরের এলাকা প্লাবিত হয়েছে।'

একই এলাকার এরশাদ মাঝি জানান, জোয়ারের পানিতে পুরো ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে। তাদের এখন বাড়ির চালে উঠে থাকতে হচ্ছে।

ব্যাপকহারে পানি বেড়েছে সেখানকার বিচ্ছিন্ন চরগুলিতেও। অন্যদিকে, পানিবৃদ্ধি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে মাছ ধরতে উপকূলীয় এলাকায় যেতে পারেননি ভোলা সদরের তুলাতুলি জেলেপল্লীর শতাধিক জেলে।

বরগুনার পাথরঘাটার বেলায়েত মাঝি বলেন, '৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও আমাদের লাভ হয়নি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এখনো ঘাটেই বসে আছি।'

মহিপুর মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি মো. মোস্তফা বলেন, 'ঝড়ো হাওয়ার কারণে হাজার হাজার জেলে এখন সাগরে নামতে পারছেন না।'

ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, 'গত সাত দিন আগে মেঘনা নদীর দৌলতখান পয়েন্টে পানি ছিল ২৯ সেন্টিমিটার আজ সেটা বেড়ে হয়েছে ৬৯ সেন্টিমিটার।'

নির্বাহী প্রকৌশলী-২ হাসান মাহামুদ বলেন, 'সাত দিন ধরে জেলার তেতুলিয়া ও মেঘনা নদীর পানি বাড়ছে। তবে, এখন পর্যন্ত বাঁধ উপচে পানি ভেতরে ঢোকেনি।'

বরিশালের বিভাগীয় মৎস্য অফিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান তালুকদার বলেন, 'ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ বিভাগের প্রায় চার লাখ জেলে মাছ ধরতে নদী বা সমুদ্রে নামতে পারেনি। একদিকে পূর্ণিমা, অন্যদিকে প্রবল বৃষ্টি, উজানের ঢলের কারণে বরিশাল বিভাগের প্রায় সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব কারণে ও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও মাছ ধরতে যেতে পারছেন না জেলেরা।'

তিনি আরও জানান, এই পানি বৃদ্ধিতে মৎস্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এখন সেগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলছে।

এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ করছে বলে জানিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
5 killed as train hits auto-rickshaw in Cumilla

5 killed as train hits auto-rickshaw in Cumilla

The accident took place when the Chattogram-bound Chattala Express train hit a battery-run auto-rickshaw in Kalikapur area

1h ago