‘গরুগুলো যেখানে আশ্রয় পাবে, আমিও সেখানে আশ্রয় নেব’

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাওয়ে গৃহপালিত ৪টি গরু নিয়ে আশ্রয়স্থলের খোঁজ করছেন সাজ্জাদ মিয়া। ছবি: শেখ নাসির

বন্যায় সবকিছু হারিয়ে একমাত্র সম্বল গবাদি পশুগুলোকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দারা।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাও এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ মিয়া বলেন, 'বাড়ির গোয়ালঘরে মাচা করে সেখানে ৬০ মণ শুকনা ধান ও গরু খাওয়ার খড় রেখেছিলাম। বন্যার পানিতে সবকিছুই ভেসে চলে গেছে। গবাদিপশুগুলোর গলার রশি খুলে দিয়েছিলাম। এখন আমার একমাত্র সম্বল এই চারটি গরু। আমার গবাদিপশুগুলো যেখানে আশ্রয় নিতে পারবে তাদের সঙ্গে নিয়ে সেখানেই আশ্রয় নেব।'

'হেঁটে রওনা দিয়েছি উঁচু স্থান পেলেই গরুগুলো নিয়ে সেখানেই অবস্থান নেব। তবে গোখাদ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি,' বলেন তিনি। 

নিজের প্রাণ বাঁচানোর পাশাপাশি নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে গবাদিপশুগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বন্যাকবলিত মানুষেরা। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে শহরতলীর দিকে আসা নৌকা ও ট্রলারগুলোতে সাধ্যমতো গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি নিয়ে আসছেন তারা।

বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, সিলেটে এ পর্যন্ত ১১টি গরু, ৫টি মহিষ, ১০টি ভেড়া মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মারা গেছে হাঁস-মুরগিও।

তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এখনো পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সিলেট বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ অফিসের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জাকির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা এখনো পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলার কোনো তথ্য পাইনি। আমাদের সুনামগঞ্জের সবগুলো অফিস ভেঙে গেছে। এমনকি জেলা অফিসের বাউন্ডারি ওয়ালও ভেঙে গেছে। জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে গতকাল (শুক্রবার) শেষ যোগাযোগ হয়েছিল। তবে সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় গৃহপালিত পশু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।'

সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার ভেটেনারি ফিল্ড অ্যাসিসটেন্ট হুমায়ুন রশিদ তালহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একটি মাদ্রাসায় এলাকাবাসীরা তাদের গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আমাদের অফিস পানির নিচে।'

Comments

The Daily Star  | English
challenges for police to regain public trust

Cops want own commission with sweeping powers

Independent body to end politicisation, nepotism, corruption

16h ago