খাল থেকে আবর্জনা তুলে সড়কে, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

গত ১ সপ্তাহ ধরে সড়কে এ আবর্জনা পড়ে আছে। ছবি: অরুণ বিকাশ দে/স্টার

চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার ফুলতলা এলাকায় চাক্তাই খাল থেকে বর্জ্য তুলে স্তূপ করা হয়েছে সড়কে। সড়কে বর্জ্য ফেলে রাখায় সপ্তাহখানিক ধরে চরম দুর্ভোগ আছেন এলাকাবাসী ও পথচারীরা।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১ সপ্তাহ আগে খাল থেকে বর্জ্য তোলা হয়। পরে সেগুলো সড়কে স্তূপ করে রাখা হয়।

আজ শুক্রবার সরেজমিনে ফুলতলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কে প্লাস্টিক ও পচনশীল গৃহস্থালি আবর্জনাসহ বর্জ্য স্তূপাকারে সড়কের উপর ফেলে রাখা হয়েছে। পথচারীরা এগুলোর পাশ দিয়েই যাতায়াত করছেন।

ময়লা-আবর্জনার গন্ধ থেকে নিজেকে বাঁচাতে নাকে হাত দিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে অনেককে।

ওই এলাকার বাসিন্দা মো. শামসুদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি বুঝতে পারছি না কেন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা দিনের পর দিন রাস্তায় ময়লার স্তূপ ফেলে রেখেছে। রাস্তার মাঝখানে ময়লার স্তূপ থাকায় আমরা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে সমস্যায় পড়ছি।'

পথচারীদের আবর্জনার পাশ দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। ছবি: অরুণ বিকাশ দে/স্টার

স্থানীয় বাসিন্দা টুনু দাস বলেন, 'খাল থেকে বর্জ্য তোলার প্রথমদিন খালের নোংরা কালো পানিতে পুরো এলাকা একাকার হয়ে গিয়েছিল। এলাকার জনসাধারণকে এ সবের উপর দিয়ে চলাচল করতে হয়।'

একই এলাকার মালতী বিশ্বাস বলেন, 'এখানে আবর্জনা তুলে স্তূপ করা হয়েছে প্রায় ৭ দিন। আবর্জনা রোদে ফেলে রাখায় শক্ত হয়ে গেছে। আমরা দুর্গন্ধের জন্য বাসায়ও থাকতে পারছি না। আবার রাস্তা দিয়ে চলাচল করতেও সমস্যা হচ্ছে।'

তারা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা চসিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কি না, জানতে চাইলে স্থানীয় আব্দুস শুক্কুর বলেন, 'আমরা ৩ দিন আগে চসিক পরিচ্ছন্ন  বিভাগের স্থানীয় সুপারভাইজারকে রাস্তা থেকে আবর্জনার স্তূপ সরাতে বলেছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখছি না।'

যোগাযোগ করা হলে চসিক ১৭ নম্বর (পশ্চিম বাকলিয়া) ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খালের নোংরা পানিতে বর্জ্য মিশ্রিত হয়ে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়েছে দেখে কয়েকদিন আগে চসিক পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীদের শিগগির রাস্তা থেকে আবর্জনা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছি।'

তিনি বলেন, 'আসলে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি মেগা প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) খালটি পরিষ্কার করেছে এবং তাদেরই দায়িত্ব এসব বর্জ্য অপসারণের।'

'তবুও আমি বিষয়টি দেখব,' যোগ করেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে চসিকের উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরীও একই কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'মানুষ মনে করে চসিক পরিষ্কার করছে, কিন্তু তা সত্য নয়। সিডিএ খাল পরিষ্কার করছে এবং রাস্তা থেকে আবর্জনার স্তূপ সরানোর দায়িত্ব তাদের।'

'আমরা রাস্তা থেকে আবর্জনা অপসারণের জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করব,' বলেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ মেগা প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা শিগগির রাস্তা থেকে বর্জ্য অপসারণ করব।'

তিনি আরও বলেন, 'আসলে আবর্জনাগুলো রাস্তায় রাখা হয়েছিল যেন সেগুলো রোদে শুকিয়ে পানি ঝরে যায়। কারণ স্থানীয় কাউন্সিলররা অভিযোগ করেছিলেন যে আমরা যখন গাড়িতে কাঁচা আবর্জনা নিয়ে যাই, তখন রাস্তা নোংরা ও কর্দমাক্ত হয়ে যায়। তাই আমরা ২-৩ দিন রাস্তায় বর্জ্য রেখে দিই।'

Comments

The Daily Star  | English

You have crushed fascism, now strengthen democracy and press freedom

The Daily Star Editor Mahfuz Anam's appeal to the ‘new generation leaders’

12h ago