শাবিপ্রবি: আন্দোলনকারীদের মোবাইল ব্যাংকিং ও মেডিকেল সাপোর্ট বন্ধ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সবকটি মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর গতকাল সোমবার দুপুরের পর থেকে কাজ করছে না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
একই সঙ্গে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে যে মেডিকেল টিম উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছিলেন, তারাও সেবা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার ভোররাত আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আয়োজিত জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব তথ্য জানানো হয়। সেসময় তারা আন্দোলন বিষয়ে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করেন এবং অনশনকারীদের জীবনঝুঁকির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
আন্দোলনকারীদের এক মুখপাত্র আরিফুল ইসলাম চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেন, 'অনশনরত শিক্ষার্থীদের সবার অবস্থার অবনতি হচ্ছে এবং তারা ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। তারা সবাই খিঁচুনি, ব্লাডে অক্সিজেন ও সুগার লেভেল কমে যাওয়া, ব্লাড প্রেশারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় পড়ছেন। তারা অর্গান ড্যামেজের ঝুঁকিতে আছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'অনশনকারীদের মেডিকেল রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে সিনিয়র চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, অনশন দীর্ঘায়িত হলে যেকোনো মুহূর্তে হার্ট ফেইলিওরসহ কোমায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কেন এই শিক্ষার্থীরা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসেও মেডিকেল সাপোর্ট পাচ্ছেন না তা নিয়ে আমরা ভীষণ উদ্বিগ্ন।'
ওসমানী মেডিকেল কলেজের এক চিকিৎসক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এবং গুরুতর অসুস্থ রোগীদের পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সও আছে বলে আন্দোলনকারীদের এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানান।
আর্থিক লেনদেন বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থীর শারীরিক বা অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দিলে সাবেক শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসেন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন সংকটময় মুহূর্তে সাবেক শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছেন এবং তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে আর্থিক ও মানসিকভাবে সাহায্য করে যাচ্ছেন।'
'কিন্তু ২৪ জানুয়ারি দুপুর থেকে যে-সব মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে অর্থ পাঠানো হচ্ছিল, সেই নম্বরগুলো আর কাজ করছে না,' যোগ করেন তিনি।
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ায় ২ সাবেক শিক্ষার্থী রেজা নূর মুঈন ও হাবিবুর রহমানকে আটকের অভিযোগ ওঠেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে শাবিপ্রবির আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, 'শুনেছি ২ সাবেক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু, তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল না বলে এখন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে অন্যান্যরা বিষয়টি জানিয়েছেন এবং আমরা উদ্বিগ্ন।'
Comments