মিরাজ-আকবরের ব্যাটে লড়াইয়ে পুঁজি চট্টগ্রামের
ইনিংসের প্রথম বলেই চার। প্রথম ওভারে বাউন্ডারি আসে তিনটি। পরের দুই ওভারে আরও তিনটি। তিন ওভারে রান ৩০। তাতে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিতই দিয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। কিন্তু এরপর হঠাৎ ধসে পড়ে তাদের ব্যাটিং লাইন আপ। তবে শেষ পর্যন্ত মেহেদী হাসান মিরাজ ও আকবর আলীর ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছে সাগর পাড়ের দলটি।
বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫ বল বাকি থাকতে ১৪৮ রানে অলআউট হয়ে যায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
প্রথম ধাক্কাটা এদিন দলীয় ৩১ রানে খায় চট্টগ্রাম। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন জ্যাক উইলস। পুরো আসরে এ তারকাই টেনে এনেছিলেন চট্টগ্রামকে। তার বিদায়ের ধাক্কার রেশ কাটতে না কাটতে এলিমিনেটর রাউন্ড জয়ের নায়ক চ্যাডউইক ওয়াল্টনকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তানভির ইসলাম। ফলে চাপে পড়ে যায় দলটি।
সে চাপ আরও বাড়িয়ে দেন মৈন আলী। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বল হাতে নিয়ে দেন জোড়া ধাক্কা। টানা দুই বলে জাকির হাসান ও শামিম পাটোয়ারিকে তুলে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিলেন। তবে মেহেদী হাসান মিরাজ হ্যাটট্রিক বল সামলেছেন সহজভাবেই।
তখন চট্টগ্রাম তাকিয়েছিল বর্তমান ও সাবেক অধিনায়কের দিকে। কিন্তু হতাশ করেন অধিনায়ক আফিফ হোসেন। সেই মঈনের করা অষ্টম ওভারের শেষ বলে প্রথমে চিন্তা করেছিলেন হাঁকাবেন। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। বিপদটা তখনই ডেকে আনেন আফিফ। দোমনা হয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন পয়েন্টে। অবশ্য দৌড়ে এসে দারুণ ক্যাচ লুফে নেওয়া তানভিরের কৃতিত্বও কম নয়।
৫০ রানে প্রথম সারীর ৫ উইকেট হারিয়ে আকবর আলীকে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন মিরাজ। গড়েন ৬১ রানের দারুণ এক জুটি। তাতে মিরাজ দেখেশুনে খেললেও রানের গতি বাড়ানোর কাজটা করেন আকবর। তবে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বল আকাশে তুলে ক্যাচ তুলে দেন বোলার আবু হায়দার রনির হাতে।
এরপর আশা ছিল বেনি হাওয়েলকে ঘিরে। শেষ দিকে ঝড় তুলে অনেক ম্যাচেই চট্টগ্রামকে উদ্ধার করেছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। মিসফিল্ডিং থেকে রান নিতে গিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের সরাসরি থ্রোতে পড়েন রানআউটের ফাঁদে।
মিরাজকে অবশ্য কিছুটা সঙ্গ দেন মৃত্যুঞ্জয়। তবে শহিদুল ইসলামের বলে লংঅফে সহজ ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। এরপর সেই শহিদুলের টানা দুই বলে দুটি ছক্কা মারেন মৃত্যুঞ্জয়। পরের বলেই হাঁকিয়েছিলেন। কিন্তু একেবারে সীমানায় ধরা পড়েন রনির হাতে। এরপর শেষ ওভারে বল করতে এসে নিজের প্রথম বলেই নাসুমকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে ৫ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে দেন চট্টগ্রামকে।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন মিরাজ ৩৮ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। আকবরের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। ২০ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় এ রান করেন তিনি। জাকিরের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান।
কুমিল্লার পক্ষে ২০ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন মঈন। ৩৩ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট পান শহিদুলও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে (উইলস ১৬, জাকির ২০, ওয়াল্টন ২, আফিফ ১০, শামিম ০, মিরাজ ৪৪, আকবর ৩৩, হাওয়েল ৩, মৃত্যুঞ্জয় ১৫, শরিফুল ০*, নাসুম ০; রনি ১/২১, মোস্তাফিজ ১/১৩, নারাইন ০/২৪, শহিদুল ৩/৩৩, তানভির ১/৩৩, মঈন ৩/২০)।
Comments