বিপিএলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড নারাইনের
তখন তার সংগ্রহ ৪৬ রান। খেলেছেন ১১ বল। পরের বলে একটি বাউন্ডারি মানেই বিশ্বরেকর্ড। হাঁকিয়েছিলেনও সজোরে। কিন্তু লং-অফের সীমানা পার হওয়ার আগেই বল ধরে ফেলেন ফিল্ডার। তবে বিশ্বরেকর্ড ছোঁয়া না হলেও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নতুন রেকর্ড ঠিকই করে ফেললেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ক্যারিবিয়ান তারকা সুনীল নারাইন।
বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দেওয়া ১৪৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৩ বলে ফিফটি করেন নারাইন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাউন্ডার ভেঙে দেন পাকিস্তানের ক্রিকেটার আহমেদ শেহজাদের রেকর্ড। ২০১২ সালে বিপিএলের প্রথম আসরে দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে ১৬ বলে তিনি ফিফটি করেছিলেন বরিশাল বার্নার্সের হয়ে।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে লক্ষ্য তাড়ায় এদিন শুরু থেকেই আগ্রাসী নারাইন। ইনিংসের প্রথম বলে লিটন দাসকে হারায় কুমিল্লা। দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে নারাইনকে স্ট্রাইক দেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। তৃতীয় বলটি তিনি ব্যাটে ছোঁয়াতে না পারলেও হয়ে যায় বাই চার। এরপর বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামকে টানা তিনটি বাউন্ডারি মারেন নারাইন- ৬, ৪ ও ৪।
পরের ওভারে আবার প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে নারাইনকে স্ট্রাইকে আনেন ইমরুল। এবার মেহেদী হাসান মিরাজের টানা চার বলে হয় চারটি বাউন্ডারি- ৬, ৬, ৪ ও ৬। তবে শেষ বলে আউট হতে পারতেন নারাইন। তার বিপক্ষে রিভিউ নিয়েছিলেন মিরাজ। তবে বলের ইমপ্যাক্ট বাইরে থাকায় এলবিডব্লিউ থেকে বেঁচে যান নারাইন। ফিফটির পথে এরপর আর কোনো ডট খেলেননি তিনি।
তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারের পুরোটা খেলেন ইমরুল। ৯ বলে ৩৬ রান তোলা নারাইন ফের স্ট্রাইক পান ইনিংসের পঞ্চম ওভারে। আফিফ হোসেনের করা ওই ওভারের প্রথম দুই বলে তিনি মারেন যথাক্রমে চার ও ছক্কা। তাতে বিশ্বরেকর্ডের হাতছানি পেতে থাকেন নারাইন। কিন্তু মুখোমুখি হওয়া ১২তম বলে এক রানের বেশি নিতে পারেননি। তবে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর করা ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত ১৬ বলের বিস্ফোরক ইনিংসে ৫৭ রান করে মৃত্যুঞ্জয়ের শিকার হন নারাইন। আরও একটি ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে তুলে দেন আকাশে। নিজেই ক্যাচ ধরেন মৃত্যুঞ্জয়। সব মিলিয়ে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কা আসে নারাইনের ব্যাট থেকে।
নারাইনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে আরও একটি নতুন রেকর্ড দেখেছে বিপিএল। পাওয়ার প্লেতে সর্বোচ্চ রান তুলেছে কুমিল্লা। প্রথম ছয় ওভারে ২ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৮৪ রান জমা করে ফেলে দলটি। এর আগে ২০১৯ সালে পাওয়ার প্লেতে ৮৩ রান তুলেছিল খুলনা টাইগার্স।
টি-টোয়েন্টিতে নারাইনের চেয়ে কম বলে ফিফটি করেছেন তিন ক্রিকেটার। মাত্র ১২ বলেই হাফসেঞ্চুরি করা প্রথম খেলোয়াড় ভারতের যুবরাজ সিং। ২০০৭ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়েন তিনি। এরপর মেলবোর্ন রেঞ্জার্সের হয়ে ২০১৬ সালে ক্রিস গেইল ও কাবুল জওয়ানের হয়ে ২০১৮ সালে হজরতউল্লাহ জাজাই স্পর্শ করেন যুবরাজকে। নারাইনের আগে ১৩ বলে ফিফটি করার রেকর্ড রয়েছে আরও একটি। ২০১০ সালে সমারসেটের হয়ে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে করেছিলেন মার্কাস ট্রেসকোথিক।
Comments