নাঈম তাহলে ঢাকার বোঝা?
ওপেনিংয়ে জায়গা হচ্ছে না, মিডল অর্ডারে কম্বিনেশনের কারণে খেলানো যাচ্ছে না। স্লগ করতে নামানোর সময়ও মিলছে না ভরসা। নাঈম শেখকে নিয়ে কি তবে বিপদে পড়ে গেল মিনিস্টার ঢাকা? সাম্প্রতিক সময়ে নাঈমকে বিবেচনা করা হচ্ছিল জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টির এক নম্বর ওপেনার হিসেবে। অথচ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বিপিএলেই তার উপর রাখতে পারেননি আস্থা।
ব্যাটিংয়ের ধরণে নাঈম বরাবরই একটু মন্থর ঘরানার। থিতু হতে তার লাগে সময়। পরেও সেটা পুষিয়ে নিতে পারেন না সেভাবে। কিন্তু একটা উল্লেখ্যযোগ্য সংখক রান পান বলে তাকে টানা খেলিয়ে গেছে বাংলাদেশ। স্ট্রাইকরেট আমলে না নিয়ে বোর্ড সভাপতি পর্যন্ত তার ধারাবাহিকতার প্রশংসা করে গেছেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টির দাবি যে কেবল রান করা নয়, দ্রুত গতিতে রান করা সেই ব্যাপারটা আড়ালে পড়ে গেছে নীতি নির্ধারকদের।
মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ঢাকার হারে আবার আলোচনায় নাঈম। এই ম্যাচে তাকে নামানো হয়েছিল আট নম্বরে, তার আগের ম্যাচে পাঠানো হয়েছিল সাত নম্বর। কারণ তার দল বুঝতে পারছিল তিনি দ্রুত রান আনতে পারবেন না। তার বদলে এমনি লেগ স্পিনার কাইস আহমেদকেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
নাঈম নামার পরও যা করেছেন সেই দৃশ্যগুলো জাতীয় নির্বাচকদের জন্য পীড়াদায়ক হওয়ার কথা। চট্টগ্রামের বিপক্ষে নাঈম যখন ব্যাট করতে নামেন দলের জিততে ৫ বলে প্রয়োজন ৯ রান। তিনি নেমেই ওই পরিস্থিতিতি টানা দুই বল খেলেন ডট। পরে একটা সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন তামিম ইকবালকে। ৭৩ রানে থাকা তামিমও পারেননি শেষটা করতে। আবার জায়গা বদলে শেষ বলে ছক্কার সমীকরণে বল পেয়েছিলেন নাঈম। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর হাত ফসকে বিমার হয়ে গিয়েছিল। কোমরের উপর ফুলটস বলটাও কাজে লাগাতে পারেননি এই বাঁহাতি। নো বলে আরেকটা বাড়তি বলও লাগেনি কাজে। ৫ বলে তিনি করেন ২ রান। ঢাকা হারে ৩ রানে।
নাঈমের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কোচ মিজানুর রহমান বাবুলের ব্যাখ্যা, ডান-বাম কম্বিনেশন ঠিক রাখতেই তাকে আগে পাঠানো হয়নি। নাঈম উপরে নামলেও যে বিশেষ কিছু হতো সেটা বিশ্বাস করার বাস্তবতা আসলে নেই। এর আগে সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে তিনে নেমে এক ম্যাচে ৩০ বল খেলে করেছিলেন মাত্র ১৫ রান। টি-টোয়েন্টির বিচারে যা রীতিমতো বিস্মময়কর মন্থর ব্যাটিং!
এবার বিপএলে ৭ ম্যাচ খেলে নাঈম ব্যাট করেছেন ৬ ম্যাচে। তাতে তার স্কোরগুলো জাতীয় দলের জায়গা দাবি রাখার কাছাকাছিও না- ১১ বলে ৯, ৬ বলে ৪, ৬ বলে ৪, ৩০ বলে ১৫, ৯ বলে ১০, ৫ বলে ২! ৬ ম্যাচে তিনি করেছেন মোটে ৪৪ রান, গড় ৮.৮০। স্ট্রাইকরেট ৬৫.৬৭।
ঢাকার অধিনায়কত্ব করছেন খোদ জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। সেই ঢাকাতেই নাঈমের টি-টোয়েন্টি সামর্থ্য বিচার করা হচ্ছে বাস্তবতার নিরিখে। প্রশ্ন উঠতে পারে জাতীয় দলের বেলায় কেন তবে ভিন্ন নীতি?
Comments