টানা পঞ্চমবার ম্যাচসেরা সাকিব, প্লে-অফের অপেক্ষায় ঢাকা
দারুণ ছন্দে থাকা তামিম ইকবাল আরেকটি ফিফটি হাঁকালেও বাকিরা হলেন ব্যর্থ। তাতে বিপিএলের প্লে-অফ নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে অল্প রানে আটকে গেল মিনিস্টার ঢাকা। আঁটসাঁট বোলিংয়ের পর সহজ লক্ষ্য তাড়ায় জ্বলে উঠল সাকিব আল হাসানের ব্যাট। টানা পঞ্চম ম্যাচে সেরার পুরস্কার জিতলেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি তারকা। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জয় দিয়ে আসরের লিগ পর্ব শেষ করল ফরচুন বরিশাল। অন্যদিকে, প্লে-অফে ওঠার অপেক্ষা বাড়ল ঢাকার।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুক্রবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ উইকেটের ব্যবধানে অনায়াসে জিতেছে বরিশাল। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৮ রানের মামুলি সংগ্রহ গড়ে ঢাকা। জবাবে ২৭ বল হাতে রেখে ২ উইকেটে ১২৯ রান তুলে জয়ের বন্দরে নোঙর করে সাকিবের দল।
১০ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে বিপিএলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ফিরল বরিশাল। সমান ম্যাচে তামিমের ঢাকার পয়েন্ট ৯। তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকলেও তাদের প্লে-অফে খেলা নিয়ে রয়েছে সংশয়। চারে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও পাঁচে থাকা খুলনা টাইগার্সের অর্জন ৯ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট করে। আগামীকাল শনিবার এই দুই দল নিজ নিজ ম্যাচে জিতে গেলে বাদ পড়ে যাবে ঢাকা।
বল হাতে ৪ ওভারে ২১ রানে ১ উইকেট নেন সাকিব। পরে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২৯ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৬ চার ও ২ ছয়। আসরে এটি তার তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি।
ব্যাটিংয়ে নেমে কখনোই চালিয়ে খেলতে পারেনি ঢাকা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই রকম ঢিমেতালে এগোয় তাদের ইনিংস। টি-টোয়েন্টি ঘরানার ব্যাটিংয়ের লেশমাত্র ছিল না সেখানে। দলটির মাত্র দুই ব্যাটার পৌঁছান দুই অঙ্কে। একপ্রান্ত আগলে থাকা তামিম খেলেন ৫০ বলে সর্বোচ্চ ৬৬ রানের ইনিংস। ১৭তম ওভারে মেহেদী হাসান রানার বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
ছয়ে নামা শুভাগত হোম শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেও খোলস ছাড়তে পারেননি। ২৭ বলে ২১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। পঞ্চম উইকেটে তামিমের সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৪১ রান। কিন্তু তারা লাগিয়ে ফেলেন ৩৭ বল। আর কোনো জুটি ছুঁতে পারেনি ত্রিশের ঘরও। ঢাকার তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে। একাদশে ফেরা নাঈম শেখ ৯ বলে করেন ৬ রান। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ আউট হন ৮ বলে ৩ করে।
বরিশালের বোলাররা করেন নিয়ন্ত্রিত বোলিং। আফগানিস্তানের স্পিনার মুজিব উর রহমান ৪ ওভারে ১ উইকেট নেন ১৫ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো সমান ওভারে ২ উইকেট শিকার করেন ১৮ রান দিয়ে। রানা ২ ওভারে ২ উইকেট পান ১২ রান খরচায়। তুলনামূলক খরুচে ছিলেন আরেক পেসার শফিকুল ইসলাম। ৪ ওভারে তিনি ২ উইকেট নিলেও দেন ৩৬ রান।
রান তাড়ায় পঞ্চম ওভারে ক্রিস গেইলের উইকেট হারায় বরিশাল। আক্রমণে এসেই তাকে বিদায় করেন শফিউল ইসলাম। ১১ বলে ৭ করেন গেইল। আরেক ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ব্যাটে-বলে তাল পাচ্ছিলেন। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি এই তরুণ। তার হন্তারক কাইস আহমেদ। ২৫ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছয়ে ৩৭ রান করেন মুনিম।
তৃতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ৫২ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮৩ রানের জুটিতে এরপর ম্যাচ শেষ করে দেন সাকিব। ধীর-স্থির শুরুর পর ১২তম ওভারে ডানা মেলেন তিনি। আফগানিস্তানের অলরাউন্ডার আজমতউল্লাহ ওমারজাইকে ছারখার করে দেন এই বাঁহাতি। দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম বলে মারেন যথাক্রমে ৪, ৬, ৪, ৪ ও ৪। সবমিলিয়ে ২৩ রান আসে ওই ওভার থেকে। সেখানেই নিভে যায় ঢাকার লড়াইয়ের ন্যূনতম স্বপ্ন।
১৬তম ওভারে আরেক আফগান ফজল হক ফারুকিকে চার মেরে হাফসেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলেন সাকিব। পরের ডেলিভারিটি ওয়াইড হলে শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। জিতে যায় বরিশাল। শান্ত অপরাজিত থাকেন ২৮ বলে ২৮ রানে।
Comments