খুলনাকে প্লে-অফে নিলেন ফ্লেচার-শেখ মেহেদী, বিদায় ঢাকার

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বাঁচা-মরার লড়াই। বিপিএলের প্লে-অফে টিকে থাকতে জয় ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা নেই। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে খুলনা টাইগার্সের কাজটা হয়ে উঠল কঠিনতর। ফাফ ডু প্লেসির সেঞ্চুরিতে তাদেরকে ১৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

আগের দিন দুই দলের দেখায় কাছাকাছি রান তাড়ায় (১৮৯) অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল খুলনা। কিন্তু এদিন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সমীকরণে সম্পূর্ণ ভিন্ন চেহারায় দেখা গেল তাদেরকে। ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে ফ্লেচার ও বাংলাদেশের শেখ মেহেদী মিলেই শেষ করে দিলেন ম্যাচ।

৮ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের বিরাট জয়ে শেষ দল হিসেবে আসরের প্লে-অফের টিকেট পেল মুশফিকুর রহিমের দল। তাতে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মাহমুদউল্লাহদের মিনিস্টার ঢাকার।

শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে তাণ্ডব চালান ফ্লেচার ও শেখ মেহেদী। দুই ওপেনার মিলে দলকে পাইয়ে দেন ভীষণ কাঙ্ক্ষিত জয়। তাদের চার-ছক্কার ফুলঝুরির বিপরীতে অসহায় ছিলেন কুমিল্লার বোলাররা।

ফ্লেচার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে অপরাজিত থাকেন ৬২ বলে ১০১ রানে। তার আগের সেঞ্চুরিটিও ছিল বিপিএলে। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া শেখ মেহেদী মঈন আলীর শিকার হন ৪৯ বলে ৭৪ রানে। তখন জয় থেকে মোটে ১ রান দূরে ছিল খুলনা। ক্রিজে নেমে উইনিং শটটি খেলেন সৌম্য সরকার।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ফ্লেচারের সেঞ্চুরিটি এবারের বিপিএলে সব মিলিয়ে চতুর্থ। তার ও শেখ মেহেদীর ১১১ বলে ১৮২ রনের উদ্বোধনী জুটিটি চলতি আসরে যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ। প্রতিযোগিতাটির ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি রানের জুটি আছে কেবল তিনটি।

লক্ষ্য তাড়ায় একেবারে প্রত্যাশিত সূচনা পায় খুলনা, ক্যারিবিয়ান ফ্লেচারের কল্যাণে। দ্বিতীয় ওভারে আবু হায়দার রনিকে চার-ছক্কা মারেন তিনি। পরের ওভারে নাহিদুল ইসলামকে হাঁকান পরপর দুটি ছয়। এরপর শেখ মেহেদীও হাত খুললে ঘটে বিস্ফোরণ। বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামকে ছক্কা মেরে তিনি দলের সংগ্রহ ছাড়িয়ে নেন পঞ্চাশ। তখনও পূর্ণ হয়নি ইনিংসের চতুর্থ ওভার!

পাওয়ার প্লেতে ৬৯ রান তোলা খুলনাকে আর থামানো যায়নি। স্পষ্ট করে বললে, ফ্লেচার আর শেখ মেহেদীকে দমানো যায়নি। তরতর করে রান বাড়াতে থাকেন তারা। ফলে ইনিংসের মাঝপথেই তাদের দিকে হেলে পড়ে ম্যাচের পাল্লা।

প্রথম ১০ ওভারে ১১১ রান তুলে ফেলায় পরের ৬০ বলে খুলনার দরকার দাঁড়ায় কেবল ৭২ রান। সেটা মেলাতে বেগ পেতে হয়নি দলটির। নিয়মিত অধিনায়ক ইমরুল কায়েস, লিটন দাস ও মোস্তাফিজুর রহমানকে ছাড়া খেলতে নামা কুমিল্লা ছিল একরকম অসহায়।

২৫ বলে ফিফটি ছোঁয়া ফ্লেচার সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ৫৯ বলে। ব্যক্তিগত ৭১ রানে রিভিউ নিয়ে একবার জীবন পান তিনি। হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করতে শেখ মেহেদীর লাগে ৩১ বল। সতীর্থদের রান বিলিয়ে দেওয়ার মিছিলে ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল কুমিল্লার সুনীল নারিন। এই ক্যারিবিয়ান স্পিনার ৪ ওভারে দেন কেবল ২২ রান।

আগামী সোমবার বিপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে খুলনা মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। এই দুই দল এদিনই নিশ্চিত করেছে প্লে-অফে খেলা। ১০ ম্যাচে তাদের অর্জন সমান ১০ পয়েন্ট করে। নেট রান রেটে এগিয়ে থেকে তালিকার তিনে অবস্থান চট্টগ্রামের, চারে খুলনার।

সোমবারই প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে প্রথম পর্ব শেষ করেছে সাকিব আল হাসানের বরিশাল। দুইয়ে থাকা কুমিল্লার পয়েন্ট ১৩।

Comments

The Daily Star  | English

Chattogram’s garment factories fear fallout from US tariffs

Owners of Chattogram-based readymade garment factories, many of which do business with buyers in the United States, are worried about a US tariff hike to 35 percent set to take effect on August 1.

13h ago