নাঈমের ঝলকে খেলায় ফিরল বাংলাদেশ
এর আগে পুরো সেশনে সুযোগ এসেছিল একটিই। সেটা যে কোন সুযোগ ছিল তা টেরই পাননি বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। বাদবাকি সময় বাড়ছিল কেবল হতাশা। প্রচণ্ড খরতাপে নেতিয়ে পড়ছিল শরীর। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস-দীনেশ চান্দিমালের জম্পেশ প্রথম সেশন উইকেটবিহীন থাকার পথেই ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু লাঞ্চের ১৮ মিনিট আগে নাঈম হাসানের বলে আচমকা রিভার্স সুইপে আত্মাহুতি দেন চান্দিমাল। ওই ওভারেই নিরোশান ডিকভেলাকেও বোল্ড করে দেন নাঈম। হতাশার সেশনের শেষ দিকে মিলে আলোর রেখা।
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে ২৬ ওভারে এসেছে ৬৯ রান, পড়েছে ২ উইকেট। ৬ উইকেটে ৩২৭ রান করে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে সফরকারীরা।
ম্যাথিউস অপরাজিত আছেন ১৪৭ রানে। পঞ্চম উইকেটে তার সঙ্গে ১৩৬ রানের জুটির পর ৬৬ করে ফিরে গেছেন চান্দিমাল। প্রথম দিন প্রথম সেশনে ২ উইকেট নেওয়া নাঈম এদিনও প্রথম দুই ঘন্টায় নিলেন ২ উইকেট। ৮৭ রানে এখনো পর্যন্ত ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার তিনি।
দিনের ২৪তম ওভারের ঘটনা। অফ স্পিনার নাঈমের প্রথম বলটা ঘুরে রিভার্স সুইপ করতে যান চান্দিমাল। কিন্তু লাইন মিস করে পরাস্ত হন তিনি। জোরালো এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি লঙ্কানদের। টেস্টে কোন এক সেশনের আগে রিভার্স সুইপে উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার একাধিক ঘটনায় বাংলাদেশে সমালোচিত হচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম। প্রতিপক্ষ লঙ্কান ব্যাটার চান্দিমালও করলেন একই ভুল।
উইকেট পেয়ে তেতে উঠা নাঈম অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে ওভারের পঞ্চম বলটি বাঁহাতি ডিকভেলাকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। কাট করতে গিয়ে ব্যাটে নিতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান লঙ্কান কিপার। পুরো সেশন যেখানে লঙ্কানদের দিকেই হেলে ছিল, সেটা কয়েক মুহুর্তে ঘুরে যায় বাংলাদেশের দিকে।
এর আগে দিনের শুরুতে সতর্ক শুরু করেন ম্যাথিউস-চান্দিমাল। রানের গতি ছিল মন্থর। একদম চতুর্থ ওভারেই ম্যাথিউসকে ফিরিয়ে দিতে পারত বাংলাদেশ।
খালেদ আহমেদের ওভারের হালকা ভেতরে ঢোকা পঞ্চম বলটা ঠেকাতে গিয়ে ব্যর্থ হন ম্যাথিউস। বল জমা পড়ে কিপার লিটন দাসের হাতে।
স্বাভাবিক এক বল মনে করে বাংলাদেশ ফিল্ডারদের মধ্যে ছিল না কোন প্রতিক্রিয়া। বাংলাদেশের কেউ কোন আবেদনই করেননি। কিন্তু আল্ট্রা এজ টেকনোলজিতে রিপ্লেতে দেখা যায় বল কিপারের গ্লাভসে জমা পড়ার আগে স্পর্শ করে গেছে ম্যাথিউসের ব্যাট। আবেদন করলে ফল আসতে পারত বাংলাদেশের দিকে। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নিয়েও ম্যাথিউসকে ফেরাতে পারত মুমিনুল হকের দল। আগের দিন ৬৯ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ার পর ১১৯ রানে ম্যাথিউস পান আরেক জীবন।
আরেক পাশে ফিফটি তুলে হাত খুলে মারতে উদ্যত হন চান্দিমা। তাইজুল ইসলামকে এক ওভারে মারেন চার-ছয়। রানের চাকা বাড়াতে গিয়েই পরে গড়বড় হয়ে যায় তার। ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরার সুযোগ করে দেন তিনি।
Comments