শুরুর ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর বাংলাদেশের লড়াইয়ের পুঁজি
বিশ্বকাপে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর দলে অনেক বদল এনেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও দেখা গেল বিবর্ণ দশা। শুরুতে উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ পেয়েছে মামুলি পুঁজি, খুব ভাল বল করলে হয়ত তা নিয়ে লড়াই করা সম্ভব। বিশ্বকাপে চরম রান খরার পর মিরপুরে ফিরে রান পেয়েছেন আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান। শেষ দিকে ভীষণ কার্যকর ঝড় তুলেন শেখ মেহেদী হাসান।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১২৭ রান করেছে বাংলাদেশ। ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের মূল হন্তারক হাসান আলি। দলকে এই পুঁজি এনে দিতে ৩৪ বলে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন আফিফ। ২০ বলে ৩০ করেন শেখ মেহেদী। ২২ বলে ২৮ আসে সোহানের ব্যাট থেকে।
বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে আফিফ করেছিলেন ৫৪ রান, সোহান ৬ ম্যাচে করেন ৬৯। বিশ্বকাপের আগে দুজনেই মিরপুরে কিছু রান পেয়েছিলেন। আবার মিরপুরে ফিরতে তাদের ব্যাটে মিলল রানের দেখা।
টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে প্রথম ওভার কাটিয়ে দেয়ার পর দ্বিতীয় ওভারেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। হাসান আলির অনেক বাইরের বল তাড়া উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাঈম শেখ।
৩ বলে ১ রান করে ফেরেন তিনি। অভিষিক্ত সাইফ হাসান ছিলেন সতর্ক। কিন্তু টেকনিকের গোলমালে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মোহাম্মদ ওয়াসিমের মাঝারি পেসেই কাবু হয়ে স্লিপে উঠান সহজ ক্যাচ।
দলের বিপদে শান্তের অ্যাপ্রোচ ছিল ইতিবাচক। তেড়েফুঁড়ে রান বাড়ানোর চেষ্টা করলেও টাইমিং হচ্ছিল না। পঞ্চম ওভারে তারও ইতি ওয়াসিমের বলে।
ডানহাতি এই পেসারের বলে অনেকটা সরে এসে উড়াতে গিয়ে ক্যাচ উঠিয়ে বিদায় নেন তিনি। ১৪ বল খেলে ৭ রান করেন শান্ত।
পাঁচ ওভারে ১৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। প্রথম ৫ ওভারে আসেনি একটিও বাউন্ডারি।
চারে নামা আফিফ হোসেনের ব্যাটে ৬ষ্ঠ ওভারে আসে প্রথম চার। হারিস রউফে লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ফাইন দিয়ে পাঠান সীমানার বাইরে।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ আনে কেবল ২৫ রান, উইকেট হারায় তিনটি। আফিফের সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রতিরোধে নেমেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তার চেষ্টাও বেশি দূর এগোয়নি। ১১ বলে ৬ রান করে তিনি বোল্ড হন মোহাম্মদ নাওয়াজের বলে। নবম ওভারে ৪০ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শাদাব খানের পরের ওভারে ফিরতে পারতেন আফিফও। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলেও রিভিউ নিয়ে বাঁচেন তিনি।
এরপরই মোহাম্মদ নাওয়াজকে দুই ছক্কা মারেন আফিফ। আশা বাড়ানো এই বাঁহাতি শাদাবের গুগলি বুঝতে না পেরেই স্টাম্পিং হয়ে ফিরে যান। ৩৪ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় করেন ৩৬ রান। ১৪ ওভার পর্যন্ত বাউন্ডারি ছিল কেবল আফিফেরই।
এরপর শাদাব খানকে ছক্কায় উড়ান নুরুল হাসান সোহান। চার আসে শেখ মেহেদীর ব্যাট থেকে। দুজনের জুটিতে আসে ২৪ বলে ৩৫ রান। হাসানের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে সোহানের বিদায়ে ভাঙ্গে এই জুটি। শেষ পর্যন্ত টিকে শেষ মেহেদীই পাইয়ে দেন লড়াইয়ের পুঁজি। ২০ বলে ৩০ রান করতে ১ চারের সঙ্গে মেহেদী মারেন দুই ছক্কা। ইনিংসের একদম শেষ বলে মিড উইকেট দিয়ে বল গ্যালারিতে পাঠান তাসকিন আহমেদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৭/৭ (নাঈম ১, সাইফ ১, শান্ত ৭, আফিফ ৩৬, মাহমুদউল্লাহ ৬, সোহান ২৮ , শেখ মেহেদী ৩০* , বিপ্লব ২, তাসকিন ৮* ; নাওয়াজ ১/২৭, হাসান ৩/২২, ওয়াসিম ২/২৪ , হারিস ০/৩৩ , শাদাব ১/২০ )
Comments