নাঈমের ঢিমেতালে ব্যাটিং, বাংলাদেশের মামুলি পুঁজি
পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৩৩ রান। পরের ১০ ওভারে ২ উইকেট খুইয়ে ৬২ রান। আর শেষ ৪ ওভারে ৪ উইকেটে ২৯ রান। উইকেট ধরে রাখলেও ম্যাচের কোনো সময়েই চালিয়ে খেলতে পারল না বাংলাদেশ। শেষদিকে হতাশা আরও বাড়ল। বেশ কিছু বাউন্ডারি এলেও স্ট্রাইক বদলাতে ব্যর্থ হলেন ব্যাটাররা। বিশেষ করে, ওপেনার নাঈম শেখ ১৯তম ওভার পর্যন্ত টিকেও করলেন ঢিমেতালে ব্যাটিং। মোট ৫৮টি ডট বল খেলার খেসারত দিয়ে মামুলি পুঁজিতে আটকে গেল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে তুলনামূলক ভালো উইকেটে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৪ রানের মামুলি সংগ্রহ পেয়েছে স্বাগতিকরা।
বাঁহাতি নাঈম বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন। তার ৫০ বলের ইনিংসে ছিল মাত্র ২টি করে চার ও ছক্কা। এছাড়া, শামীম হোসেন পাটোয়ারী ২৩ বলে ৪ চারে ২২, আফিফ হোসেন ২১ বলে ২ ছক্কায় ২০ ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ১৪ বলে ১ চারে ১৩ রান করেন। সফরকারী পাকিস্তানের হয়ে পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিম ও লেগ স্পিনার উসমান কাদির ২টি করে উইকেট নেন।
সাইফ হাসান বাদ পড়ায় বাংলাদেশ পায় নতুন উদ্বোধনী জুটি। ব্যাটিং অর্ডারের উপরে উঠে নাঈমের সঙ্গী হন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে ইনিংসের শুরুতে চলা ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙা পড়েনি। পাকিস্তানের অভিষিক্ত পেসার শাহনেওয়াজ দাহানি বোল্ড করে দেন শান্তকে। অনেকটা ইয়র্কার লেংথের ডেলিভারি ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। ব্যাটে-বলে সংযোগ একদমই হয়নি। তিনি লাইন মিস করায় উপড়ে যায় স্ট্যাম্প। ৫ বলে ১ বাউন্ডারিতে শান্তর রান ৫।
দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ৭ রানে প্রথম উইকেটের পতনের পর জুটি বাঁধেন নাঈম ও শামীম। দ্বিতীয় উইকেটে তারা গড়েন ৩৫ বলে ৩০ রানের জুটি। অষ্টম ওভারে আক্রমণে এসেই তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করেন উসমান। ডট বলের চাপ সরাতে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন বাউন্ডারি দিয়ে ইনিংস শুরু করা বাঁহাতি শামীম। কিন্তু মিড-উইকেটে সীমানার কাছে তিনি ধরা পড়েন ইফতিখার আহমেদের হাতে।
চারে নেমে চালিয়ে হাত খুলে খেলার আভাস ছিল আফিফের। ১২তম ওভারে তিনি উসমানকে হাঁকান ২টি ছক্কা। মুখোমুখি হওয়া প্রথম ১৯ বলে ১০ রান করা নাঈমও তখন কিছুটা গা ঝাড়া দেন। তবে শাহিন শাহ আফ্রিদি-শাদাব খান-হাসান আলিকে ছাড়া খেলতে নামা পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণকে ঘাবড়ে দিতে পারেননি তারা। বাংলাদেশের ৪৩ বলে ৪২ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি ভাঙে আফিফের বিদায়ে। উসমানের বলে টপ এজ হয়ে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসবন্দি হন তিনি।
দশম ওভারে দলীয় পঞ্চাশ পূরণ করা বাংলাদেশ শতরান ছোঁয় ১৭তম ওভারে। এরপর টাইমিংয়ে গড়বড় করে ওয়াসিমের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে শামুক গতির ইনিংসের ইতি টানেন বাঁহাতি নাঈম। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তার জুটি ছিল ২৫ বলে ৩১ রানের। হাতে ৭ উইকেট থাকলেও ডেথ ওভারে রান তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে শিকার হন হারিস রউফের। নুরুল হাসান সোহান ২ বলে ৪ ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ২ বলে ৩ রানে বিদায় নেন। শেখ মেহেদী হাসান অপরাজিত থাকেন ৩ বলে ৫ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৪/৭ (নাঈম ৪৭, শান্ত ৫, শামীম ২২, আফিফ ২০, মাহমুদউল্লাহ ১৩, সোহান ৪, শেখ মেহেদী ৫*, বিপ্লব ৩; নওয়াজ ০/২, দাহানি ১/২৪, ওয়াসিম ২/১৫, রউফ ১/৩২, ইফতিখার ০/১৩, উসমান ২/৩৫)।
Comments