এবার লড়াইও করতে পারল না বাংলাদেশ

আরেকটি হতাশার দিন। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

আগের দিনের মতো আবারও ব্যর্থ ব্যাটসম্যানররা। আগের ম্যাচে শেষ দশ ওভারে লোয়ার মিডল অর্ডার তবু লড়াই করেছিল। এদিন সেটাও এলো না। নাজমুল হোসেন শান্ত ছাড়া বাকিরা ছিলেন মলিন, স্বাভাবিকভাবেই আরও বিবর্ণ দেখালো বাংলাদেশের ব্যাটিং। মামুলি রান তাড়ায় এবার পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা আর কোন সুযোগই দেয়নি।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের জন্য ছিল আরেকটি হতাশার বিকেল। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৮ উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা, এক ম্যাচ বাকি থাকতেই জিতে নিয়েছে সিরিজ। বাংলাদেশের করা মাত্র ১০৮ রান ১১ বল আগেই টপকে যায় বাবর আজমের দল। 

দলকে জেতাতে জীবন পাওয়া ফখর অপরাজিত থাকেন ৫১ বলে ৫৭ রানে। মোহাম্মদ রিজওয়ান ৪৫ বলে করেন ৩৯ রান। এর আগে শাহীন আফ্রিদি, শাদাব খানদের তোপে বাংলাদেশকে অল্প রানে বেধে রাখে তারা।

সহজ রান তাড়ায় নেমে সতর্ক শুরুর পর তৃতীয় ওভারে গিয়ে ধাক্কা খায় পাকিস্তান। আগের দিন তাসকিন আহমেদের বল স্টাম্পে টেনে বোল্ড হয়েছিল বাবর আজম। এদিন মোস্তাফিজের বলে একই ধরণে আউট হন তিনি।

১২ রানে প্রথম উইকেট হারানো পাকিস্তানকে পরে এক ওভারে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু দারুণ বল করলেও মেলেনি উইকেট। সেই ঝাঁজ সামলে ক্রিজে থিতু হয়ে যান রিজওয়ান-ফখর। রানের চাপ না থাকায় তাদের কাজটাও ছিল না কঠিন।

প্রথম ম্যাচে একাদশে থেকেও শেষ ওভারের আগে বল পাননি লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এবার নবম ওভারে বোলিংয়ে আসেন তিনি। পেতে পারতেন উইকেটও। ২৬ রানে থাকা বাঁহাতি ফখরের সহজ ক্যাচ ডিপ মিডউইকেটে ফেলে চার বানিয়ে দেন সাইফ হাসান। পরে তার বলে পড়ে ৩৮ রানে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচও। যদিও ওই ওভারেই রিজওয়ানকে আউট করে উইকেটের দেখা পান বিপ্লব। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচের কেবল আনুষ্ঠানিকতাটুকুই বাকি।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার ঠিক আগের দিনের মতই ব্যর্থ। এবার শুরুতে ফিরেছেন সাইফ হাসান। নিজের জায়গাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এই তরুণ প্রথম বলেই ফিরে যান। শাহীনের ভেতরে ঢোকা বল পুরোপুরি পরাস্ত হন। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় পাকিস্তান।

দ্বিতীয় ওভারের ঠিক আগের ম্যাচের রিপ্লে দেখিয়ে বিদায় নাঈমের। মোহাম্মদ ওয়াসিমের অনেক বাইরের বল তাড়া করে ক্যাচ দেন স্লিপে। ৫ রানেই ২ উইকেট পড়ে যায় বাংলাদেশের।

চার নম্বরে নেমে আফিফ হোসেন শাহিনের মুখোমুখি প্রথম বলেই ফ্লিক করে ছক্কা উড়ান। পরের বলেই ঘটে দৃষ্টিকটু ঘটনা। ডিফেন্সিভ শট খেলে ক্রিজেই থাকা আফিফকে জোরালো থ্রো করেন অকারণে। আঘাত পেয়ে আফিফ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন।

উঠে দাঁড়িয়ে আরেকটি বাউন্ডারি মেরেছিলেন আফিফ। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি। শাদাব খানের বলে রিভার্স সুইপের চেষ্টায় সহজ ক্যাচে ফেরেন ২০ বলে ২০ রান করে। শান্ত শুরু থেকেই খেলছিলেন সাবলীল। চনমনে মেজাজ দেখা যাচ্ছিল তার ব্যাটে। প্রথম ১০ ওভারে বাংলাদেশের ৬৪ রানের ৩৪ রানেই আসে তার ব্যাট থেকে।

তবে আরেক দফা হতাশ করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ক্রিজে এসেই ধুঁকতে থাকেন তিনি। মাঝে ওভারে খেলে ফেলেন অনেকগুলো ডট বল। তা পুষাতে পারেননি পরে। ১৫ বলে ১২ করা বাংলাদেশ অধিনায়কে হারিস রউফের বলে ক্যাচ দিন কিপারের হাতে।

দারুণ খেলতে থাকা শান্তর ইতিও পরের ওভারে। শাদাবের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোলারের হাতেই উঠিয়ে দেন ক্যাচ। ফেরার সিরিজে শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ৪০ রান। আগের দিন ঝড় তোলা শেখ মেহেদী এদিন আর পারেননি। নুরুল হাসান সোহানও ছিল ম্রিয়মান। বাংলাদেশ তাই কোনমতে পার করে তিন অঙ্ক।

আগের ম্যাচে প্রথম ১০ ওভারে এসেছিল কেবল ৪০ রান, পরের ১০ ওভারে সেটা পুষিয়ে নেওয়া গিয়েছিল। এদিন প্রথম ১০ ওভারে ৬৪ এলেও, পরের ১০ ওভারে এলো কেবল ৪৪ রান। এরপর এই ম্যাচ নিয়ে আর আশা করাটাও ছিল বাড়াবাড়ি। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ:  ২০ ওভারে   ১০৮/৭  (নাঈম ২, সাইফ ০, শান্ত ৪০, আফিফ ২০, মাহমুদউল্লাহ ১২, সোহান ১১ , শেখ মেহেদী ৩, বিপ্লব ৮* , তাসকিন ২*; শাহিন ২/১৫  , ওয়াসিম ১/৯ , শোয়েব ০/১৬ , হারিস  ১/১৩, শাদাব ২/২২, নাওয়াজ ১/২৫)

পাকিস্তান  : ১৮.১ ১০৯/২ ( রিজওয়ান ৩৯ , বাবর ১, ফখর  ৫৭*, হায়দার ৬*  ; শেখ মেহেদী ০/২৩  , তাসকিন ০/২২ , মোস্তাফিজ  ১/১২, শরিফুল ০/১০, বিপ্লব ১/৩০, শান্ত ০/৩, আফিফ ০/৬, সাইফ ০/১) 

ফল: পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজ পাকিস্তান ২-০ তে জয়ী। 

 

Comments

The Daily Star  | English
Yunus condemns lawyer’s murder in Chattogram

Keep calm, refrain from violence

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday condemned the murder of a lawyer in the port city of Chattogram.

6h ago