নিউজিল্যান্ডের বড় রানের জবাবে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ
টম ল্যাথামের আড়াইশো ছাড়ানো ইনিংসের পর আগ্রাসী ফিফটি এলো টম ব্ল্যান্ডেলের ব্যাটে। পাঁচশো ছাড়িয়ে ইনিংস ছেড়ে দিল নিউজিল্যান্ড। এরপর ব্যাট করতে নেমে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে দাপট দেখালেও দ্বিতীয় সেশনে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এখন স্বাগতিকদের। ৬ উইকেটে নিউজিল্যান্ডের ৫২১ রানের পর মাত্র ১১ রানেই বাংলাদেশ হারিয়ে বসে ৪ উইকেট। শেষ পর্যন্ত চা-বিরতির আগে ১১ ওভার ব্যাট করে ৪ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৭ রান।
চা-বিরতির পর ফিরেই আউট হয়ে যান লিটন দাস। ৮ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। ২৭ রানে ৫ উইকেট হারানো অবস্থায় প্রতিরোধ গড়েন ইয়াসির আলি ও নুরুল হাসান সোহান। দুই স্যুইং বোলার বোল্ট-টিম সাউদির স্পেল শেষ হলে স্বস্তিতে খেলছিলেন তারা। ৬ষ্ঠ উইকেটে দ্রুত তারা যোগ করেন ৬০ রান। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই সাফল্য আনেন সাউদি। সাবলীল ব্যাটে ৪১ করা সোহানকে এলবিডব্লিউতে ফিরিয়ে দেন তিনি। ৮৭ রানে ৬ষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
প্রতিপক্ষের বিশাল রানের জবাব দিতে নেমে ইনিংসের একদম দ্বিতীয় ওভারেই ফেরেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। ট্রেন্ট বোল্টের বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট লাগিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন ৭ রান করা সাদমান।
অভিষিক্ত ওপেনার নাঈম শেখ তার পথ ধরেন পরের ওভারে। প্রথম শ্রেণীতে বিবর্ণ পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধভাবে দলে আসা নাঈম টেস্টে প্রথম দফায় নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। তিনি টিকেছেন কেবল ৫ বল। এরমধ্যে দুবার হতে পারতেন আউট। টিম সাউদির বাড়তি বাউন্সের বলে আড়ষ্ট ভঙ্গিতে বল নামাতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন কোন রান করতে না পারা এই বাঁহাতি।
প্রথম টেস্টে দারুণ ব্যাট করে ফিফটি করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এবার তিনি ব্যর্থ। বোল্টের আউট স্যুইংয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন স্লিপে। শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৪ রান। প্রথম টেস্টে দৃঢ়তার ছবি হয়ে থাকা অধিনায়ক মুমিনুল হকও এদিন করেন হতাশ। সাউদির বল একটু সামনের পায়ে পুশ করার চেষ্টায় লাইন মিস করে হয়ে যান বোল্ড। বাংলাদেশ অধিনায়কও খুলতে পারেননি রানের খাতা। বাংলাদেশের সামনে তাই বিব্রতরকর পরিস্থিতি এড়ানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ।
লাঞ্চের আগে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড। তবে লাঞ্চ থেকে ফিরে ওয়ানডে গতিতে রান আনতে থাকলেন ল্যাথাম- ব্ল্যান্ডেল। মাত্র ৭৮ বলে ৬ষ্ঠ উইকেটে তাদের জুটিতে আসে ৭৬ রান। ডাবল সেঞ্চুরির পর আড়াইশও ছাড়িয়ে যান ল্যাথাম। তবে মুমিনুলের বলে এরপরই থামেন ৩৭৩ বলে ৩৪ চার, ২ ছক্কায় ২৫২ করা ল্যাথাম।
কাইল জেমিসনকে নিয়ে দলকে পাঁচশো ছাড়িয়ে নেন ব্ল্যান্ডেল। তিনিও পেয়ে যান ফিফটি। এরপর আর ইনিংস না টেনে ঘোষণা দিয়ে দেন ল্যাথাম। চা-বিরতির আগে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে ফায়দা তুলতে চেয়েছিল তারা। তাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ফায়দা এসে গেছে। শুরুতেই বাংলাদেশের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে স্পষ্ট দাপট প্রতিষ্ঠা করেছে স্বাগতিকরা।
Comments