বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৫০ রান
মিড-অফ দিয়ে নাসুম আহমেদকে যখন বাউন্ডারি মারলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক নিকোলাস পুরান, তখন কিছুটা শঙ্কায় পেয়ে বসে বাংলাদেশকে। কারণ কোনো এক ব্যাটার জীবন পেয়ে বাংলাদেশকে ধসিয়ে দেওয়ার অনেক ম্যাচেই। তবে পরের ওভারে যখন মেহেদী হাসান মিরাজ যখন তাকে বোল্ড করেন, তখন স্বস্তি নামে টাইগার শিবিরে। শেষ পর্যন্ত নাগালেই রাখা গেছে ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস।
রোববার গায়নার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে নির্ধারিত ৪১ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান করেছে ক্যারিবিয়ানরা। অর্থাৎ জিততে হলে দেড়শ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। মাঠ ভেজা থাকায় নির্ধারিত সময়ে শুরু না হওয়ায় পরিধি কমিয়ে আনা হয় ম্যাচের।
তবে চারটি সহজ ক্যাচ না ছাড়লে কিংবা রানআউটের সুযোগ নষ্ট না করলে ক্যারিবিয়ানদের পুঁজিটা হতে পারতো আরও ছোট। যদিও শুরু থেকেই দারুণ বোলিং করে টাইগার বোলাররা। অভিষিক্ত নাসুম আহমেদের হাত ধরে হয় ইনিংসের গোড়াপত্তন। তবে বাংলাদেশকে এদিন প্রথম সাফল্য এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তার ফুলার লেংথের ভেতরের দিকে ঢোকানো বলে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন শেই হোপ। বল প্রথমে ব্যাটে লেগে পায়ে চলে যায় স্টাম্পে। ফলে বোল্ড হয়ে খালি হাতে সাজঘরে ফেরেন হোপ।
দ্বিতীয় সাফল্য মিরাজের। নিজের দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসে প্রথম বলেই পান ছন্দে থাকা কাইল মেয়ার্সের উইকেট। তাকে সরাসরি বোল্ড করে দেন তিনি। হালকা বাঁকের মুখে বাড়তি বাউন্সে পরাস্ত হন মেয়ার্স। তবে আউট হওয়ার আগে শামারাহ ব্রুকসে সঙ্গে গড়েন ৩১ রানের জুটি।
এরপর ব্রুকসের সঙ্গে দলের হাল ধরেন ব্র্যান্ডন কিং। স্কোরবোর্ডে ১৩ রান যোগ হতে কিংকে ফেরান শরিফুল। আকাশে তুলে বদলি ফিল্ডার এনামুল হক বিজয়ের তালুবন্দি হন তিনি। এর পরের বলেই বড় ধাক্কাটা দেন শরিফুল। ফেরান ব্রুকসকে। অফস্টাম্পের বেশ বাইরে রাখা বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
বিপজ্জনক রভমান পাওয়েলকে ছাঁটাই করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন পাওয়েল। তবে লাভ হয়নি। আরেক বিপজ্জনক ব্যাটার পুরানকেও সাজঘরের ঠিকানা দেন মিরাজই। তাকে বোল্ড করেন দেন তিনি।
তবে পুরান ফিরতে পারতেন নাসুমের করা আগের ওভারেই। পুরান তখন উইকেটের মাঝে। উইকেটের কাছে রোমারিও শেফার্ডও। নিশ্চিত রানআউট। শর্ট ফাইন লেগ থেকে ফিল্ডারের কাছ থেকে বল পেয়ে উইকেট ভাঙলেন। তবে নাসুম আহমেদের আবেদনে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে আম্পায়ার সাড়া দেন। রিভিউতে দেখা যায় বল স্টাম্পে লাগেনি। তাতে বেঁচে যান পুরান। একই সঙ্গে রানআউট থেকেও। কারণ আম্পায়ার আঙুল তোলার পরই বল ডেড হওয়ায় রানআউট কার্যকর হয়নি।
৩৪তম ওভারে ফিরে ফের জোড়া ধাক্কা দেন শরিফুল। রোমারিও শেফার্ড হাঁকাতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন। তার ক্যাচ ধরেন আফিফ হোসেন। যদিও দুই ওভার আগেই শেফার্ডের ঠিক এমনই একটি ক্যাচ ছেড়েছিলেন শরিফুল। এরপর গুডাকেশ মতিকে গ্যালিতে মিরাজের তালুবন্দি করেন।
তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ উইকেট জুটি বেশ ভোগায় বাংলাদেশকে। অ্যান্ডারসন ফিলিপ ও জাইডন সিলস গড়েন ৩৯ রানের জুটি। যা ম্যাচের সর্বোচ্চ রানের জুটিও বটে। ৪৪ বল ব্যাট করে শেষ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন থেকে মাঠ ছাড়েন এ দুই ব্যাটার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন ব্রুকস। এছাড়া পুরান ১৮ ও শেফার্ড ১৬ রান করেন। শেষ দিকে ফিলিপ অপরাজিত ২১ ও সিলস অপরাজিত ১৬ রানের দুটি কার্যকরী ইনিংস খেলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে ৩৪ রানের খরচায় ৪টি উইকেট পান শরিফুল। ৩৬ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন মিরাজ।
Comments