মুশফিক বুঝতে ভুল করেছে: সুজন

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন সম্প্রতি পেয়েছেন টিম ডিরেক্টরের দায়িত্ব। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির ধাক্কা সামলে দল যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেজন্য তাকে রাখতে হচ্ছে অগ্রণী ভূমিকা। তার সঙ্গে একান্ত আলাপে বসেছিলেন দ্য ডেইলি স্টারের ক্রীড়া সম্পাদক বিশ্বজিত রায়। কথোপকথনে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠের সিরিজে নতুন চেহারার টি-টোয়েন্টি দল, সেখানে জায়গা না পেয়ে গণমাধ্যমে মুশফিকুর রহিমের ক্ষোভ প্রকাশ থেকে শুরু করে নানা প্রসঙ্গ উঠে আসে। সুজনের সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য।

দ্য ডেইলি স্টার: যে সিরিজটা শুরু হচ্ছে, সেটা কি টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশ দলের জন্য নতুন শুরু?

খালেদ মাহমুদ সুজন: সত্যিকার অর্থে সেটা না। যেটা হয় যে, (ফল) খারাপ হলে অনেক দিন থেকে ধাক্কা আসে। তাছাড়া, এই সংস্করণে আমাদের কিছু নতুন খেলোয়াড়কে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার ব্যাপার আছে। টি-টোয়েন্টিতে আমাদের (খেলোয়াড়ের সংখ্যা) হাতে গোণা হয়ে গেছে। কিছু খেলোয়াড়ই ঘুরেফিরে খেলছে।

একটা ধকল তো গেছেই ছেলেদের। (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা) হারার ধকলটা তো অনেক বড়। এটা অনেক মানসিক চাপও। তো নতুন শুরু বলা পুরোপুরি ঠিক হবে না। তবে নিশ্চিতভাবেই আমরা নতুন কিছু খেলোয়াড়কে সুযোগ দিতে চাই।

দ্য ডেইলি স্টার: নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়ার জন্য এটাই কি উপযুক্ত সংস্করণ?

খালেদ মাহমুদ সুজন: টেস্টে আমাদের মোটামুটি একটা নিয়মিত দল আছে। ওয়ানডেতে আমরা ভালো দল। সেখানে খুব বেশি পরিবর্তনের কিছু নেই। তবে টি-টোয়েন্টিতে সেই জায়গাটা আছে। ছেলেদের যাচাই করে দেখতে হবে যে সত্যিকার অর্থে তারা কী করছে।

আমি মনে করি, যারা সুযোগ পেয়েছে, তারা ভালো খেলোয়াড়। তাদের সবারই সামর্থ্য রয়েছে। তবে সময় লাগবে। অস্থির হওয়ার কিছু নেই। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।

দ্য ডেইলি স্টার: লিটন দাসের পাশাপাশি অভিজ্ঞ মুশফিককে দলে না রাখার সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক মনে করছেন?

খালেদ মাহমুদ সুজন: লিটন-সৌম্য (সরকার), এদের কথা যদি বলি, অনেক দিন ধরে খেলছে। কিন্তু তাদের ধারাবাহিকতা নেই। এটা নিয়ে অনেক কথাও হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি যে তারা দুজনই দারুণ খেলোয়াড়। আমার চোখে তারা সেরা খেলোয়াড়দের তালিকায় রয়েছে। কিন্তু (তাদেরকে দিয়ে) হচ্ছে না। তাদের একটা বিশ্রাম দরকার ছিল। সেই ব্যাপারটাই আমরা আসলে চিন্তা করেছি।

মুশি (মুশফিক) আমাদের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তা আমরা সবাই জানি। এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। এত বছর ধরে বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, ওকে সতেজ রাখাটা খুব জরুরি। সামনে টেস্ট সিরিজ রয়েছে। তামিম (ইকবাল) হয়তো খেলতে পারবে না। সাকিবকে (আল হাসান) নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ টেস্ট খেলা ছেড়ে দিয়েছে। টেস্টে আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড় আর কোথায়?

দ্য ডেইলি স্টার: মুশফিক গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, তাকে দলে না রাখার বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি। তার প্রতিক্রিয়াকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

খালেদ মাহমুদ সুজন: এখানে আসলে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। কোথাও ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। ও (মুশফিক) হয়তো বুঝতে ভুল করেছে। গত ১৩ নভেম্বর (সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে) ও দেশে ফেরে। তবে (প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন) নান্নু ভাই ওকে ফোন করে পাননি। পরে ওকে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হয়।

ও যেমনটা চিন্তা করছে... এই সংস্করণ থেকে তো ওকে বাদ দেওয়া হয়নি। কোনো নির্বাচকই বলেনি যে ওকে বাদ দেওয়া হয়েছে। খেলোয়াড়রা তো মাঝেমধ্যে বিশ্রাম চায়। ওরা বলে যে এই সংস্করণে খেলব না বা এই সিরিজে খেলব না। তো আমার মনে হয়েছে, একটা সিরিজে ওর বিশ্রাম দরকার।

তাছাড়া, আমরা তো অনেক সময় চাই না যে খেলোয়াড়রা বিশ্রাম নিক। তবুও ওরা বিশ্রাম নেয়। তখন? বাংলাদেশ দল তো কখনও চাইবে না যে সাকিব বা তামিম বিশ্রাম নিক। আমরা চাই, ওরা সবসময় খেলুক। কিন্তু আমরা বুঝি যে, এখন এত খেলা, এত সংস্করণ... তো কিছু কিছু সময় বিশ্রাম দরকার।

আমার মনে হয়, পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। টি-টোয়েন্টিও গুরুত্বপূর্ণ নিঃসন্দেহে। তাছাড়া, আমরা বিশ্বকাপ থেকে হেরে এসেছি। তবে টি-টোয়েন্টি যেহেতু ছোট সংস্করণের খেলা, এত পরীক্ষিত খেলোয়াড় দরকার হয় না। নতুন ছেলেরা যে ভালো খেলবে না, এটা কিন্তু ভুল কথা।

টেস্টে পরীক্ষিত খেলোয়াড় দরকার হয়। আমি এভাবেই চিন্তা করি। ধরুন, প্রথম টি-টোয়েন্টিতে লিটন-মুশফিক-সৌম্য তিনজনই আছে এবং কেউই রান করল না। এখন দেশের মাটিতে খেলা, মাঠে দর্শকও থাকবে। তো তারা যদি খারাপ খেলে দুয়ো পায় ও সমালোচনা হয়, তাহলে সেই চাপ তারা হয়তো নিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে টেস্ট ম্যাচে (পারফরম্যান্সে) নেতিবাচক প্রভাব পড়তেই পারে।

আমি বিশ্বাস করে তারা সবাই (ছন্দে) ফিরে আসবে। আমরা একটা পরিবেশ তৈরি করতে চাই যেখানে সেরা খেলোয়াড়রাই খেলবে।

দ্য ডেইলি স্টার: নতুন চেহারার এই দল নিয়ে ছন্দে থাকা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা কতটা চ্যালেঞ্জের?

খালেদ মাহমুদ সুজন: (সবশেষ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা) পাকিস্তান দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। তবে টি-টোয়েন্টিতে বড় দল-ছোট দল বলে কিছু নেই। আমার বিশ্বাস, নিজেদের দিনে যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে। আমি দলের উপরও বিশ্বাস রাখছি। তাদের ভালো খেলার সামর্থ্য রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Political clashes, mob attacks leave 25 dead in July 2025: MSF

The report, based on news from 18 media outlets and verified by rights activists, also noted an alarming rise in mob attacks, recording 51 incidents last month

20m ago