মহাকাব্যিক লড়াইয়ে জিতে একক রাজত্বে নাদাল

ছবি: রয়টার্স

প্রথম দুই সেট হেরে খাদের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছিলেন রাফায়েল নাদাল। রজার ফেদেরার ও নোভাক জোকোভিচকে টপকে তার এককভাবে টেনিস বিশ্বের রাজত্ব দখলের স্বপ্ন ফিকে হতে শুরু করেছিল। কিন্তু অভিজ্ঞ এই স্প্যানিশ তারকা দমে যাননি। দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে পরের তিন সেট নিজের করে নিয়ে তিনি গড়লেন ইতিহাস। ছেলেদের এককে সবচেয়ে বেশি ২১টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড গড়ে তিনি পৌঁছে গেলেন সাফল্যের চূড়ায়।

রোববার ২০২২ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে দানিল মেদভেদেভকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন নাদাল। পাঁচ ঘণ্টা ২৪ মিনিটের মহাকাব্যিক এক লড়াইয়ে তিনি জিতেছেন ৩-২ সেটে। মেলবোর্নের রড লেভার অ্যারেনায় এমন এক জমজমাট ম্যাচ হয়েছে, যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে টেনিস ভক্তদের মনের মণিকোঠায়। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ঘুরে দাঁড়িয়ে নাদাল জিতেছেন ২-৬, ৬-৭ (৫-৭), ৬-৪, ৬-৪ ও ৬-৫ গেমে।

এতদিন ছেলেদের এককে সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের কীর্তিতে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন নাদাল, ফেদেরার ও জোকোভিচ। তিন জনেরই ছিল সমান ২০টি করে শিরোপা। এবার ৩৫ বছর বয়সী নাদাল ছাড়িয়ে গেলেন বাকি দুজনকে।

ছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে নাদালের এটি দ্বিতীয় শিরোপা। ২০০৯ সালে আগেরবার তিনি যখন এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন, সেবারও পাঁচ সেটে গড়িয়েছিল ফাইনাল। তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ফেদেরারকে হারিয়ে। নাদাল সবচেয়ে বেশি ১৩ বার জিতেছেন ফরাসি ওপেন। এই শিরোপা জয়ে তার ধারেকাছে নেই আর কেউ। তিনি ইউএস ওপেন ঘরে তুলেছেন চারবার। আর দুবার উইম্বলডনের শিরোপা উঁচিয়ে ধরার মধুর অভিজ্ঞতা হয়েছে তার।

করোনাভাইরাসের টিকা না নেওয়ায় অনেক ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলার সুযোগ পাননি জোকোভিচ। ফেদেরার অংশ নিতে পারেননি হাঁটুর অস্ত্রোপচার থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকায়। তাই ষষ্ঠ বাছাই নাদালের সামনে সুবর্ণ সুযোগ ছিল একক রাজত্ব গড়ার। সেই লক্ষ্য পূরণের পথে তার সামনে বাধা হতে পারেননি দ্বিতীয় বাছাই মেদভেদেভ। যদিও জোর প্রচেষ্টা চালান গত বছর ইউএস ওপেন জেতা ২৫ বছর বয়সী এই রাশিয়ান।

অথচ মাস তিনেক আগেও নাদালের ক্যারিয়ার শেষের শঙ্কা জেগেছিল। পায়ের চোটের কারণে গত বছরের শেষ সাত মাসে কেবল একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন তিনি। কিন্তু বিনা যুদ্ধে হার মানার পাত্র তো তিনি নন! বিদায়ের ঘণ্টাকে বিদায় করে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনকে আপন আলোয় রাঙিয়েছেন তিনি।

ছবি: রয়টার্স

শিরোপা নিশ্চিত হতেই হাত থেকে র‍্যাকেট ফেলে দেন নাদাল। মুখের অভিব্যক্তিতে ফুটে ওঠে হতচকিত ভাব। এরপর দুই হাতে মুখ ঢেকে ফেলেন। সবশেষে হাসির সঙ্গে দেন স্বভাবসুলভ হুঙ্কার। নাদালের মনে তখন বিজয়ীর আনন্দময় অনুভূতির সঙ্গে খেলা করছিল আবেগ। তাই তো ট্রফি হাতে পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, 'নিঃসন্দেহে এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আবেগপূর্ণ জয়গুলোর একটি।'

Comments

The Daily Star  | English

How a 'Dervish Baba' conjured crores from a retired nurse

Want to earn easy money? Just find someone who thinks their partner is cheating on them, then claim to be a “Genie King” or “Dervish Baba,” and offer solutions to “relationship problems” for a fee

2h ago