আফগান অ্যাথলেটের প্যারা অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার স্বপ্নভঙ্গ 'হৃদয়বিদারক'
তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল না করলে দুদিন আগেই টোকিওতে পৌঁছাতেন জাকিয়া খুদাদাদি। দেশটির প্রথম নারী অ্যাথলেট হিসেবে প্যারা অলিম্পিকে অংশ নিয়ে ইতিহাস গড়তেন তিনি। কিন্তু পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কাবুলে আটকে পড়েছেন তিনি। সেখান থেকে একটি ভিডিও বার্তায় খুদাদাদি জানিয়েছেন স্বপ্নের অপমৃত্যুর কথা, যাকে 'হৃদয়বিদারক' হিসেবে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক প্যারা অলিম্পিক কমিটির (আইপিসি) সভাপতি অ্যান্ড্রু পারসনস।
টোকিওতে আগামী ২৪ অগাস্ট থেকে শুরু হবে প্যারা অলিম্পিক। আফগানিস্তান থেকে এবার দুজনের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত সোমবার আফগানিস্তান প্যারা অলিম্পিক কমিটি জানায়, নারী তায়কোয়ান্দো অ্যাথলেট খুদাদাদি ও পুরুষ ট্র্যাক অ্যাথলেট হোসাইন রাসুলির পক্ষে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরদিন সাহায্য প্রার্থনা করে ভিডিও বার্তায় খুদাদাদি বলেন, 'আমি একজন আফগান নারী এবং আফগান নারীদের প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে সাহায্য করার জন্য আপনাদের সকলের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি।... আমার লক্ষ্য হলো ২০২০ প্যারা অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করা। অনুগ্রহ করে আমার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।'
খুদাদাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে আগের দিন বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে আইপিসি প্রধান পারসনস জানিয়েছেন নিজের প্রতিক্রিয়া, 'আমি ভিডিও বার্তাটি দেখেছি। আফগানিস্তানে যা ঘটছে এবং এটি আমাদের একজন ক্রীড়াবিদের স্বপ্ন ভেঙে দিচ্ছে, যা সত্যিই দুঃখজনক এবং এটি সত্যিই আমার হৃদয় ভেঙে দিয়েছে।'
খেলাধুলার প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণকারী কট্টরপন্থী তালেবানরা ক্ষমতা দখলের পর অ্যাথলেটদের টোকিওতে নেওয়ার কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না তারা, 'কোনো বাণিজ্যিক ফ্লাইট নেই। আমরা সবাই কাবুল বিমানবন্দরের ছবিগুলো দেখেছি। এটি শুরু থেকেই আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, এই ক্রীড়াবিদদের টোকিওতে আনার কোনো নিরাপদ উপায় থাকবে না।'
সর্বোপরি আফগানিস্তানের বর্তমান টালমাটাল রাজনৈতিক অবস্থাকে মানবতার জন্য উদ্বেগজনক হিসেবে উল্লেখ করেছেন পারসনস, 'এটি এমন একটি বিষয় যা খেলাধুলার চেয়ে অনেক অনেক অনেক ঊর্ধ্বে। সবকিছুর আগে আমরা একটি দেশ হিসেবে আফগানিস্তান ও তাদের জনগণকে, বিশেষ করে, দেশটির নারীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমি মনে করি, প্রথমত, দেশটিকেই তাদের নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করতে হবে।'
Comments