মহামারিতে গ্রামে ফেরা মানুষের জন্য ৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা

স্টার ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট চলমান আর্থিক সংকটের কারণে গ্রামে ফিরে যাওয়া মানুষদের জন্য ৫০০ কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নথি অনুসারে, করোনা মহামারির অভিঘাতে চাকরি হারানো শহরের নিন্মবিত্ত ও কম আয়ের মানুষের একটি বড় অংশ কোনো ধরনের কর্মসংস্থান ছাড়াই এখন গ্রামে কঠিন জীবনযাপন করছেন। 

এতে করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক 'ঘরে ফেরা' নামের একটি কর্মসূচির অধীনে গ্রামে ফিরে যাওয়া মানুষের জন্য পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে তাদের এই প্যাকেজের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই উদ্যোগের ফলে প্রত্যাবর্তনকারীরা উল্লিখিত প্রকল্প থেকে ৬ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন। 

এ ছাড়া ঋণদাতারা তহবিল পাবেন শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ সুদে। অর্থাৎ ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে তারা ৫ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ নিজেদের আয়খাতে নিয়ে যেতে পারবেন। 

যেসব গ্রহীতারা ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ নেবেন, তাদের তা ৩ মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ মাসের মধ্যে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হবে। 

ঋণের পরিমাণ ২ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে হলে ৬ মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ তা পরিশোধের মেয়াদ হবে ২ বছর। 

এ ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতাদের কোনো ধরনের জামানত প্রদান করতে হবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথি বলছে, পুনঃঅর্থায়নের এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর। তবে পরবর্তীতে ঋণ আদায় প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। 

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বর্ধিত লকডাউনের কারণে সঞ্চয় কমে আসা এবং বাড়ি ভাড়া ও ইউটিলিটির মতো নানা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রধানত ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর থেকে ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ গ্রামে ফিরে যান।

পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের যৌথ উদ্যোগে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এই গবেষণাকর্মটি শুরু হয়। এর তৃতীয় ধাপের জরিপে দেখা গেছে,  গ্রামে ফিরে যাওয়া মানুষের একটি বড় অংশ পরবর্তীতে শহরে ফিরে আসলেও ১০ শতাংশ সেখানে থেকে গেছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নথিতে বলা হয়েছে, 'এই প্রত্যাবর্তনকারীদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা গেলে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠবে।'

ঋণ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ৮টি খাত নির্বাচন করেছে। এগুলো হচ্ছে- স্থানীয় ক্ষুদ্র পুঁজির ব্যবসা, পরিবহন খাতে ছোট আকারের যানবাহন ক্রয়, হালকা প্রকৌশল, মৎস্য ও পশুসম্পদ, তথ্য-প্রযুক্তির জন্য সেবাকেন্দ্র (সার্ভিস সেন্টার) স্থাপন, ফল ও শাকসবজি আবাদ, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং ঘর নির্মাণ ও মেরামত। 

পুনঃঅর্থায়নের এই প্রকল্পে অংশ নিতে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে কোনো ধরনের অংশগ্রহণমূলক চুক্তি করতে হবে না। তবে এটি বেসরকারি কিংবা বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে ঋণ বিতরণের জন্য তাদের চুক্তিতে সই করতে হবে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুএক দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত নোটিশ জারি করবে। 

মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার ১০টি প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করেছে।

 

অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

 

Comments

The Daily Star  | English

People will have to take to the streets for voting rights: Fakhrul

People will have to take to the streets like they did on August 5 to realise their voting rights, said BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir today

1h ago