সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্বের সীমা লঙ্ঘন করা উচিত নয়
দেশের এক বিভাগ তাদের আরোপিত দায়িত্বের সীমানা অতিক্রম করে অন্য বিভাগে প্রবেশ করছে, বর্তমানে এটি দেখা অস্বাভাবিক কিছু নয়। যাইহোক, মাঝেমধ্যে নির্বাহী দায়িত্বে থাকা, বিশেষত যারা মাঠ পর্যায়ে থাকেন, তারা তাদের দায়িত্বের সীমা ভুলে একইসঙ্গে বিচারক, জুরি ও জল্লাদ হয়ে এটিকে অনেক দূরে নিয়ে যান। এ জাতীয় কার্যকলাপের এক নির্মম প্রদর্শনীতে সম্প্রতি এক ইউএনও লকডাউন আদেশ ‘লঙ্ঘন’ করায় একজন চিকিৎসককে জরিমানা করেছেন।
তবে, ওই ঘটনার দুই দিন পর চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার সেই ইউএনওকে প্রত্যাহার করে ওএসডি করা হয়েছে। চিকিৎসককে জরিমানা করার সঙ্গে সেই ইউএনওর প্রত্যাহারের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হলে বিভাগীয় কমিশনার বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও, এটি অনুমান করাই যায় যে, সেই কারণেই এমনটি করা হতে পারে।
এক্ষেত্রে, এটি শুধু একজন বিচারিক কর্তৃত্বের নির্বাহী দম্ভই ছিল না, করোনাকালে একজন সম্মুখসারীর যোদ্ধা একজন চিকিৎসককে শাস্তি প্রদানের বিষয়টি সেই ইউএনওর কাণ্ডজ্ঞানের সঙ্গে প্রতারণাও করেছে। প্রধান নির্বাহী হিসেবে তাকে অবশ্যই লকডাউনের আদেশের বিস্তারিত জানা উচিত ছিল।
তবে, আরও বেশি সত্য যে, কোনো স্বাস্থ্যকর্মীর কাজ জরুরি সেবার মধ্যে পড়ে এবং তা লকডাউনের আওতার বাইরে। এই ধরনের একটি অবিবেচক কাজ হবিগঞ্জেও প্রতীয়মান হয়েছে। সেখানে লকডাউন ভাঙার দায়ে আজমেরীগঞ্জ উপজেলার এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একজন চিকিৎসককে জরিমানা করেছিলেন। পরবর্তীতে শুভবুদ্ধির উদয় হলে সেই জরিমানার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
আমরা আশা করি যে, আমাদের সরকারি কর্মকর্তারা, বিশেষ করে যারা মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত রয়েছেন, তাদের শুধু দক্ষ বিচারক হলেই হবে না, বরং সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে আরও মানবিক ও বিচক্ষণ হতে হবে। তাদের এমন কোনো কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা গ্রহণ করা উচিত নয়, যা দেশের সংবিধান বা নিয়ম ও কার্যপ্রণালী তাদের ওপর আরোপ করেনি।
Comments