মার্কিন নিষেধাজ্ঞা: র‍্যাবে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্পষ্ট করে বলেছেন যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে না।

গত ১০ ডিসেম্বর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে আমাদের সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে কাজ করছেন।

কিসের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকার সমঝোতার চেষ্টা করছে? পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকার এখন পর্যন্ত এ সমস্যার গভীরে না গিয়ে কেবল এ বিষয়ে জনসংযোগ (পিআর) করে যাচ্ছে।

নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর মার্কিন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানালে, আমরা র‌্যাবের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছি। নিষেধাজ্ঞার আগেও আমরা তা বলেছি।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে র‌্যাবের ভূমিকার জন্য গণমাধ্যম যেমন প্রশংসা করেছে, বিভিন্ন ঘটনায় বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নও উঠেছে। আমরা বহুবার সরকারকে এই প্রশ্নগুলো উপেক্ষা না করে বরং গুরুত্ব সহকারে এগুলোর দিকে নজর দিতে বলেছি এবং প্রশ্নের উত্তর চেয়েছি।

দুর্ভাগ্যবশত, সরকার আমাদের সেসব সুপারিশকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা স্পষ্ট। তারা বলছে, র‍্যাবের সংস্কার নিয়ে ঢিলেমি ও এখানে-সেখানে অনুরোধ করার পরিবর্তে, সরকারের উচিত ইতিবাচক পরিবর্তনে গুরুত্ব দেওয়া।

র‍্যাব ছাড়াও অন্যান্য যে সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিষয়েও একই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মৌলিক সংস্কার ও তাদের কর্মপদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার উপযুক্ত সময় এখনই।

কাউকে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করার চর্চার পরিবর্তন আনতে হবে। রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবহারের সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে।

বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর তদন্ত পদ্ধতির আধুনিকায়ন করতে হবে। রিমান্ডের ওপর খুব বেশি নির্ভর করার পরিবর্তে, তাদের ফরেনসিক প্রমাণ সংগ্রহ এবং অন্যান্য আধুনিক পন্থা অবলম্বনের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত।

এ ছাড়াও, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের সুষ্ঠু ও স্বাধীন তদন্ত অপরিহার্য।

সম্প্রতি, আমরা আবারো এসব বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা দেখেছি। গত সপ্তাহে কুমিল্লায় র‌্যাবের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' এক হত্যা মামলার প্রধান আসামি নিহত হতে দেখেছি।

এ সব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। এগুলো চিরতরে বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka cannot engage with non-state actors: foreign adviser

Md Touhid Hossain also emphasised that peace and stability in the region would remain elusive without a resolution to the Rohingya crisis

35m ago