বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকাদান প্রক্রিয়া দ্রুত ও সহজ করা দরকার

আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইতোমধ্যেই আবাসিক হল ও লাইব্রেরি খুলে দিয়েছে এবং ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর তারিখ ঘোষণা করতে শুরু করেছে। তবে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কবে থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কারণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এখনও কোভিড-১৯ এর টিকা পাননি।

এই সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু, তাদের মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকেই কোভিড-১৯ এর কমপক্ষে ১ ডোজ টিকা না পাওয়া পর্যন্ত কিংবা টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধিত না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সশরীরে ক্লাস শুরু করা যাবে না।

আমরা বুঝতে পারি যে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েরই নিরাপত্তার কথা ভেবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সশরীরে ক্লাস শুরুর ব্যাপারে কোনো তাড়াহুড়ো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না। তবে আমরা এটাও মনে করি যে, শিক্ষার্থীদের টিকা নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য তাদের সক্রিয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

আমরা এটাও জানতে পেরেছি যে, অনেকগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা চালুর তারিখ নির্ধারণ করলেও এর পাশাপাশি আরও কয়েক মাস অনলাইনেও ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।

আমরা মনে করি, এটি একটি যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত। কারণ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে এসে আগের পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া উচিত হবে না। বরং তাদের একধরনের মিশ্র শিক্ষাদান পদ্ধতিতে যাওয়া উচিত। অর্থাৎ শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি তাদের অনলাইনেও শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া উচিত। মহামারি আমাদের এই শিক্ষাই দিয়েছে।

যদিও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক ধরণের মিশ্র শিক্ষাব্যবস্থা যতটা সহজ হবে, বিদ্যমান ডিজিটাল বিভাজনের কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষে এটি করা ততটা সহজ হবে না। আমরা দেখেছি কীভাবে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গত দেড় বছর ধরে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগের অভাবের কারণে অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করতে গিয়ে কতখানি সমস্যায় পড়েছে।

আমরা মনে করি, ভবিষ্যতে কীভাবে এই ডিজিটাল বিভাজন কমানো যায় তা নিয়ে প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উভয়েরই কাজ করা প্রয়োজন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস শুরু করতে শিক্ষার্থীদের টিকাদান প্রক্রিয়া যাতে দ্রুততর করা যায় এ জন্য সরকারের উচিত ক্যাম্পাসগুলোতে টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত টিকা প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজিএইচএস) সঙ্গে আলোচনা করা।

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের কথা বিবেচনা করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সশরীরে ক্লাস শুরু করতে হবে।

অনুবাদ করেছেন সুচিস্মিতা তিথি

Comments

The Daily Star  | English

President's fate: No hasty decisions, need to follow constitutional process, says Fakhrul

He made the remark while speaking to reporters after laying wreaths at the grave of BNP founder and former president Ziaur Rahman

1h ago