নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছে দেশের একমাত্র টিস্যু ব্যাংক
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে আমাদের স্বাস্থ্যখাত কতটা চাপের মধ্যে আছে একই সঙ্গে এই খাতের মানবিক ও বস্তুগত সম্পত্তি কতটা নিঃশেষিত, সে বিষয়ে প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা বিস্মিত। এই অবস্থায় ইনস্টিটিউট অব টিস্যু ব্যাংকিং অ্যান্ড বায়োম্যাটেরিয়াল রিসোর্সেস (আইটিবিবিআর) আমাদের আশা ও নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, সাভারে দেশের একমাত্র টিস্যু ব্যাংকটিতে রোগীদের খুব কম খরচে, একনকি দরিদ্র রোগীদের যাদের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের রেফারেন্স আছে তাদের বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটি ২০০৯ সাল থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। গত বছর পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সার্জারিতে ব্যবহারের জন্য ১ দশমিক ৩৯ লাখ ঘনমিটার হাড় ও ৫৪ হাজার ৭৬৮ টুকরো অ্যামনিয়টিক গ্রাফট সরবরাহ করেছে। এছাড়া ৮৩৫১ রোগীর টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়েছে।
টিস্যু বাংকের এই ধরনের সেবা দরিদ্র রোগীদের জন্য সহায়ক, বিশেষ করে যারা হাড় ও ত্বকের টিস্যু সম্পর্কিত অস্ত্রোপচারে ব্যয় বহন করতে পারেন না। চিকিৎসকরা দাবি করেছেন, কোনো ক্ষেত্রে একজন রোগীর চিকিৎসায় ভারতের তুলনায় ১০ গুণ কম ব্যয় হতে পারে।
টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারির জন্য টিস্যু ব্যাংক বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে হাড়, খুলি ও অ্যামনিয়টিক স্যাকস (যা পুড়ে যাওয়া ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে) সংগ্রহ করে। প্রতিষ্ঠানটি স্কিন গ্রাফটের মাইক্রোবায়োলোজিক্যাল কোয়ালিটি নিয়ন্ত্রণ করে এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্তার (আএইএ) নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক তাপমাত্রায় সেগুলা সংরক্ষণ করে।
এছাড়া আইটিবিবিআর সারাদেশে শতাধিক হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীদের টিস্যু সরবরাহ করে। এজন্য প্রয়োজন হাসপাতালের একজন ডাক্তারের অনুমোদন এবং ডাক্তারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর রোগীর আত্মীয় টিস্যু সংগ্রহ করতে পারবে।
যদিও টিস্যু ব্যাংকের পরিষেবাগুলো অমূল্য, তবুও গত ২৮ জুলাই সরকার একটি পূর্ণাঙ্গ মানব টিস্যু ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও ইনস্টিটিউটের প্রকল্পের সম্প্রসারণের জন্য ১৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দের আগে অনেকে এই ব্যাংকের অস্তিত্ব সম্পর্কেও জানতো না। এই প্রকল্পের আওতায় খুব ছোট একটি দল (আট জন বৈজ্ঞানিক কর্মকতা, ১৫ জন ল্যাবরেটরি ও প্রশাসনিক কর্মী) করে। যারা আমাদের দেশের সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আমরা আশা করি মানব টিস্যু ব্যাংক স্থাপন ও আইটিবিবিআরের সম্প্রসারণ ফলপ্রসু হবে। এই ধরনের কাজের ক্ষেত্রে সেবার মান উন্নয়ন ও সেটা ধরে রাখতে শুধু প্রশংসাই নয় প্রয়োজনীয় অর্থায়ন ও উপকরণ দিয়েও এগিয়ে আসা উচিত।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মুনীর মমতাজ।
Comments