ডেঙ্গু দায় কারও কাঁধে চাপিয়ে লাভ নেই

স্টার ফাইল ফটো

গত ১৬ মাস ধরে আমরা করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে আছি। আমাদের দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভঙ্গুর অবস্থাতেই দীর্ঘস্থায়ী এ মহামারি মোকাবিলা করে যাচ্ছে। একইসঙ্গে আমাদের ডেঙ্গুর মতো আরও একটি গুরুতর রোগ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। যখন আমাদের স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে রাজধানীর হাসপাতালগুলো কোভিড -১৯ সংক্রমণের কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আছে, এ অবস্থায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবও দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

তবে, অবাক করার বিষয় হলো, গত কয়েক বছর ধরেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়মিতভাবে বেড়ে চললেও, এর জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত দেশে মোট ছয় হাজার ৩২১ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। ১৬ আগস্টের আগের ২৪ ঘণ্টায় ২২১ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২২ জন ছাড়া বাকি সবাই ঢাকার বাসিন্দা। জনস্বাস্থ্যের দায়িত্বে নিয়োজিতরা এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রস্তুতি না থাকা এবং দেরি করে ব্যবস্থা নেওয়ার দায় থেকে মুক্তি পেতে জনগণের কাঁধে দোষ চাপাচ্ছেন।

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন প্রশাসন বোধ হয় ভুলে গেছে যে, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, সিটি করপোরেশনের যখন ডেঙ্গু-বিরোধী ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল তখন সেটি নেওয়া হয়নি, দেরিতে শুরু হয়েছে। আমরা বিশেষজ্ঞদের মতামতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে পারি যে, সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে ঢাকঢোল পিটিয়ে এমন সময় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যখন লার্ভা পরিপূর্ণভাবে এডিস মশায় পরিণত হয়েছে। এর ফলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েই চলেছে।

অবশ্যই প্রতিটি স্বাস্থ্য সংকট সমাধানে জনসাধারণ ও কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তবে, সিটি করপোরেশনের বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারার সুযোগ কম। শহরের অধিকাংশ বিস্তৃত জায়গায় যেখানে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়, সেগুলো পাবলিক স্পেস হওয়াতে সেখানে শুধু সিটি করপোরেশনই ব্যবস্থা নিতে পারে। এটা স্পষ্ট যে, সিটি করপোরেশন এই জায়গাগুলো নিয়মিতভাবে পরিষ্কার, স্প্রে কিংবা ফগিং করেনি।

আমরা আশা করবো ডেঙ্গু আরও বিপজ্জনক হওয়ার আগে সিটি করপোরেশন আরও সক্রিয় হবে। অবশ্যই, ডেঙ্গু প্রতিরোধ ব্যবস্থায় মানুষের অংশগ্রহণ প্রয়োজন, এমনকি তাদের নিজের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়েও এটি করতে হবে। কিন্তু জনগণকে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা উচিত, জরিমানার মাধ্যমে জোর করে নয়।

Comments

The Daily Star  | English

Bid to remove president: BNP at odds with student movement

The interim government’s decision on whether to remove President Mohammed Shahabuddin from office is still awaiting a “political consensus”, because the BNP believes removing him would unnecessarily stir things up in post-Hasina Bangladesh.

9h ago