ইউপি নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা বৃদ্ধি উদ্বেগজনক

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপকে সামনে রেখে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। চলতি বছরের জুনে শুরু হওয়া এই নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় এখন পর্যন্ত সারা দেশে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। বেশিরভাগ সহিংসতার ঘটনায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর সমর্থক ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন।

দেশে নির্বাচনের সময় এই সহিংসতা যেন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। সেটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক, কিংবা জাতীয় নির্বাচন। ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় আমরা এমনও দেখেছি যে, সে সময় নির্বাচনপূর্ব ও পরবর্তী সহিংসতায় ১৪০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। ডেমোক্রেসি ওয়াচের তথ্য অনুসারে, ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা অন্তত ৬০ জন। এবারের নির্বাচনেও আমরা একই ধরনের প্রবণতা দেখতে পাচ্ছি।

এভাবে নির্বাচনী সহিংসতা যখন দিন দিন বেড়েই চলেছে, প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা যখন আচরণবিধি ভেঙে চলেছেন, তখন নির্বাচন কমিশন কী করছে? প্রধান নির্বাচন কমিশনার সম্প্রতি বলেছেন, যা ঘটছে তাতে নির্বাচন কমিশন বিব্রত ও উদ্বিগ্ন। এখন আমরা যেটা জিজ্ঞাসা করতে চাই তা হলো, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কি কেবল বিব্রত হওয়ার মধ্যেই শেষ? এই ধরনের ঘটনাগুলোতে যখন তাদের ব্যবস্থা নেওয়ার বিপুল আইনি ক্ষমতা আছে, তখন উদ্বেগ প্রকাশ করাই কি যথেষ্ট? লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে কমিশন কী করছে? অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা কি নেওয়া হয়েছে?

এ ছাড়া এখানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া উচিত। এসব সহিংস ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছে? যেভাবেই হোক, পুলিশকে দ্রুত ঘটনার তদন্ত করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব এসব ঘটনায় দায়ের করা মামলার চার্জশিট দিতে হবে।

ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে এ ধরনের সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা কেবল দলের মধ্যে শৃঙ্খলার অভাবকেই নির্দেশ করে। আওয়ামী লীগের উচিত এসব সমস্যা সমাধান করে এই ধরনের উপদলীয় সংঘর্ষ বন্ধে সমাধান খুঁজে বের করা। এ ক্ষেত্রে বলাই বাহুল্য, প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া আরও গণতান্ত্রিকভাবে করতে হবে। একইসঙ্গে নির্বাচনী সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। কেবল কয়েক জন প্রার্থীকে বহিষ্কার করলেই হবে না।

নির্বাচনের আগে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ঘটনা এবং কিছু প্রার্থীর দ্বারা বিরোধী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের দেওয়া হুমকি কেবল ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত করবে। যা শেষ পর্যন্ত দেশের সামগ্রিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।

অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

Comments

The Daily Star  | English

A good example of a bad plan

As the much-hyped tunnel under the Karnaphuli river has seen only a third of the projected traffic since it was opened a year ago, the money it earned is even less than what its maintenance required.

44m ago