ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক

অভিযুক্ত ঠিকাদার খননকাজ করার পর রত্নাই নদীর অবস্থা। ছবি: দিলীপ রায়

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একজন ঠিকাদার লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার রত্নাই নদী খননের কাজ করার পর সেটির প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, যেটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স (প্রাইভেট) লিমিটেড দাবি করেছে তারা গত বছরের ডিসেম্বরে খনন কাজ সম্পন্ন করেছেন, কিন্তু এলজিইডি জানিয়েছে কাজের ২৫ শতাংশ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। তবে ঠিকাদার কাজের পুরো পারিশ্রমিক, অর্থাৎ ১ কোটি ৮১ লাখ টাকার সবটাই নিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষকদের মতে, প্রকল্পটির প্রতিটি ধাপে দুর্নীতি হয়েছে এবং ঠিকাদারটি খননের নামে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে প্রকাশ্যে বিক্রি করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। এ ঘটনায় আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অভিযোগ করেন, খননের নামে ঠিকাদার শুধু নদীতে গর্ত তৈরি করেছেন এবং এতে নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। স্বভাবতই, এতে কৃষক ও স্থানীয়দের জন্য নানা সমস্যা তৈরি হবে এবং ফলশ্রুতিতে এ অঞ্চলে কৃষিকাজ ক্ষতির মুখে পড়বে।

লালমনিরহাটের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী দাবি করেছেন তিনি অভিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিকে সাতটি চিঠি পাঠিয়ে কাজ শেষ করার তাগিদ জানিয়েছেন, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি কোনো উত্তর দেয়নি। এই বিষয়টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসকেই ফুটিয়ে তোলে যে তারা ধরেই নিয়েছে জনগণের টাকা আত্মসাৎ করে খুব সহজেই পার পেয়ে যেতে পারবে এবং চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করার জন্যেও তাদের কোনো সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না। আমরা প্রথমত জানতে চাই, এই প্রতিষ্ঠানটিকে কেন কাজ দেওয়া হলো? এটা কী তদবির আর প্রভাব খাটানোর ফল? তাহলেই বোঝা যাবে প্রতিষ্ঠানটি রত্নাই নদীর তিন কিলোমিটার দীর্ঘ জায়গার ক্ষতি করার পরেও কীভাবে এত নিশ্চিত হতে পারছে যে তাদের কোনো শাস্তি হবে না। 

কর্মকর্তারা বলেছেন, এ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার অনুরোধ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি না রাখলে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। আমরা মনে করি এ ধরনের পদক্ষেপ কর্তৃপক্ষের আগেই নেওয়া উচিত ছিল। এছাড়াও, কর্তৃপক্ষের উচিৎ চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, কারণ তারা যে কাজটি করার জন্য চুক্তিবদ্ধ ছিল, তারা সেটি শেষ না করেই জনগণের টাকা নিয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগগুলো না নেওয়া হলে আরও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান একই পথে হাঁটার সাহস পাবে এবং জনগণের টাকা আবারও এ ধরনের অপচয়মূলক প্রকল্পের মাধ্যমে নর্দমায় নিক্ষিপ্ত হবে।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

CA asks advisers to speed up construction of museum at Gono Bhaban

Museum should preserve memories of Hasina’s misrule, he says

1h ago