অবহেলা আর উদাসীনতায় বাড়ছে বায়ুদূষণ, মৃত্যুর মুখোমুখি আমরা

বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘আইকিউএয়ার’-এর প্রকাশিত ২০২১ সালের বায়ুমানে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বের ১১৭টি দেশ ও অঞ্চলের ৬ হাজার ৪৭৫টি শহরের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণের পর প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
ঢাকায় বায়ুদূষণ। স্টার ফাইল ছবি

বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান 'আইকিউএয়ার'-এর প্রকাশিত ২০২১ সালের বায়ুমানে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বের ১১৭টি দেশ ও অঞ্চলের ৬ হাজার ৪৭৫টি শহরের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণের পর প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রত্যাশিত বায়ুমানের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তা কোনো দেশই পূরণ করতে পারেনি। মূলত বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) ২ দশমিক ৫-এর ঘনত্ব অনুযায়ী বায়ুমান পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এটি অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা হিসেবেও পরিচিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি পিএম ২ দশমিক ৫ বা অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা থাকলেই সেটি আর স্বাস্থ্যকর নয়। একই সঙ্গে তা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির কারণও। ১১৭ দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে মাত্র ৩টি অঞ্চলের বায়ুমান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকার নিচে (প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম) রয়েছে। এ ছাড়াও নিচের দিকে থাকা ২৪টি দেশ ও অঞ্চলের বাতাসে বস্তুকণা ১০ মাইক্রোগ্রামের ভেতর রয়েছে। আর শীর্ষে থাকা ৭টি দেশে এর মাত্রা ৫০ মাইক্রোগ্রামের বেশি। এর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে অর্থাৎ এক নম্বরে রয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তান ও ভারতও রয়েছে যথাক্রমে তৃতীয় ও পঞ্চম অবস্থানে।

২০২১ সালে বাংলাদেশের বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ক্ষতিকর অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা বা পিএম ২ দশমিক ৫-এর গড় মাত্রা ছিল ৭৬ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে ১৫ গুণ বেশি। অন্যদিকে দূষিত বায়ুর রাজধানীর তালিকায় ঢাকা রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে (৭৮ দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম), শীর্ষে রয়েছে ভারতের নয়াদিল্লি (৮৫ মাইক্রোগ্রাম)।

এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১১ বছর ধরে যুদ্ধ-সংঘাতে থাকা সিরিয়ার বাতাসও বাংলাদেশের বাতাসের চেয়ে তিনগুণ ভালো। ২০২১ সালে শীর্ষস্থানীয় দিক থেকে ৩৮তম অবস্থানে থাকা সিরিয়ার বাতাসে অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণার পরিমাণ ছিল ২৩ মাইক্রোগ্রাম, যা বাংলাদেশের বাতাসে ৭৬ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের চেয়েও বাংলাদেশের বাতাস ৩গুণ ক্ষতিকর। অন্যদিকে আমরা প্রায়ই কথায় কথায় নেতিবাচক হিসেবে উগান্ডার উদাহরণ টানি। সেই উগান্ডা রয়েছে ২৯তম অবস্থানে, দেশটির বাতাসে বস্তুকণার পরিমাণ ২৭ দশমিক ৮ মাইক্রোগ্রাম। যদিও শুধু বাতাস নয়, আরও অনেক দিক থেকেই উগান্ডা বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে!

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পিএম ২ দশমিক ৫ বা অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা এতই ক্ষুদ্র যে, তা খালি চোখে দেখা যায় না। বায়ু দূষণকারী ৬টি মাপকাঠির মধ্যে এটি একটি, যা বিভিন্ন ক্ষতিকর কণার সমন্বয়ে গঠিত। এই বস্তুকণা প্রাকৃতিকভাবে যেমন উৎপন্ন হয়, তেমনই রাসায়নিক ও মানুষের তৈরি উৎসও রয়েছে। ধুলিঝড়, বালি ঝড়ি ও দাবানল থেকে প্রাকৃতিকভাবে এই বস্তুকণা তৈরি হয়। রাসায়নিক উপাদান সালফেট, নাইট্রেট, কালো কার্বন ও অ্যামোনিয়ামও এর উৎস। এ ছাড়া মানুষের তৈরি উৎসের মধ্যে রয়েছে গাড়ির ইঞ্জিন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প-কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া, কৃষি প্রক্রিয়া, নির্মাণকাজ এবং কাঠ ও কয়লা পোড়ানো।

এই অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা সহজেই আমাদের নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে ভেতরে প্রবেশ করে মানবদেহের ক্ষতি করে। ক্ষতিকর এই উপাদান শ্বাস-প্রশ্বাসের সাহায্য ছাড়াও চোখ দিয়েও ঢুকে যেতে পারে। এটি এখন বিশ্বের বৃহত্তম পরিবেশগত স্বাস্থ্যঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত এবং এর কারণে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ৭ মিলিয়নের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। হাঁপানি, ক্যান্সার, ফুসফুসের অসুখ এবং হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগের অন্যতম কারণ এই অতিসুক্ষ বস্তুকণা। এটি ২০২১ সালে ৫ বছরের কম বয়সী ৪০ হাজার শিশুর মৃত্যুর জন্য সরাসরি দায়ী বলে ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করার খবর বাংলাদেশের জন্য এবারই প্রথম নয়। ২০২০ সালেও বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে ছিল। সেই বছর বাতাসে পিএম ২ দশমিক ৫-এর ঘনত্ব ছিল ৭৭ দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম। ২০১৯ ও ২০১৮ সালে এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৮৩ দশমিক ৩ ও ৯৭ দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২১ সালে বাংলাদেশের বাতাসে অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণার পরিমাণ কম দেখে অনেকেই মনে করতে পারেন, উন্নতি হয়েছে। কিন্তু উন্নতি নয়, বরং আগের চেয়ে অবনতি হয়েছে। কেন না বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা শেষে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বাতাসে ২ দশমিক ৫-এর ঘনত্বের পরিমাণে বা মানদণ্ডে পরিবর্তন এনেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যেটি প্রণয়ন করা হয়েছিল ১৫ বছর আগে ২০০৬ সালে। আগের মানদণ্ড অনুযায়ী, বাতাসে পিএম ২ দশমিক ৫-এর ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ১০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক নয়। নতুন মানদণ্ডে এর পরিমাণ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে অর্থাৎ এখন ৫ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত ক্ষতিকর নয়। সে অনুযায়ী ২০১৮ সালে ৯৭ দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম ছিল নির্ধারিত মাত্রার ৯ গুণ বেশি, যা ২০২১ সালে ১৫ গুণের বেশি।

আর এই বায়ুদূষণের সরাসরি প্রভাব পড়ছে আমাদের শরীরে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ইউনিভার্সিটির এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট প্রকাশিত 'এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স'-এ জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশের মানুষের আয়ু কমেছে ৫ বছর ৪ মাস এবং ঢাকার মানুষের আয়ু কমেছে ৭ বছর ৭ মাস।

কিন্তু এই যে বায়ুমানের কারণে এই শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে আমাদের স্বাস্থ্যে, কমে যাচ্ছে আমাদের আয়ু— এ থেকে উত্তরণের জন্য কী পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ?

পরিবেশ দিবস পালন ছাড়া সারা বছর কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ে না। বছরজুড়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ম্যারাথন খোড়াখুঁড়ি তো আছেই। সিটি করপোরেশনের বাইরে ঢাকা ওয়াসা, বিটিসিএল, তিতাস, ডেসা, ডেসকো, রাজউকসহ বিভিন্ন সেবাদানকারী সরকারি সংস্থা তাদের প্রয়োজনে সড়ক খুঁড়ে থাকে। এসব সংস্থার মধ্যে নেই কোনো সমন্বয়, ফলে একই রাস্তা বার বার খুঁড়তেও দেখা যায়। এমনকি ভালো সড়কগুলোও মাঝে-মধ্যে খুঁড়তে দেখা যায় রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোতে। এই যেমন এখন মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মূল সড়কের একপাশে (প্রশস্ততায় ১ হাত) খুঁড়ে কাজ করা হয়েছে সপ্তাহখানেক আগে। কিন্তু এখনো সেখানে বিটুমিন বা কার্পেটিং করা হয়নি। সড়ক সংস্কার না করায় বাসস্ট্যান্ড এলাকা এখন ধুলার রাজ্য। সকাল থেকে রাত— সবসময় ধুলায় ধুসর হয়ে থাকে চারপাশ।

মেট্রোরেলের কাজের কারণে মিরপুর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রধান সড়কে ধুলার ওড়াউড়ি পুরান খবর। রাজধানীর উত্তরা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কে গেলে তো মনে হয়, যেন ধুলার রাজ্য। দিনের আলোয় ১০-১৫ হাত দূরের অবস্থানও পরিষ্কারভাবে দেখা যায় না। এভাবেই বেশিরভাগ এলাকায় ধুলার রাজত্ব চলছে। অন্যদিকে বেশিরভাগ এলাকার সড়কগুলোর সংস্কার যথাসময়ে না হওয়ায় ধুলা ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর আকাশে। এ নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই! কোনো পদক্ষেপ নেই।

অথচ যথাযথ পদক্ষেপ নিলে সড়ক সংস্কার বা উন্নয়নমূলক নির্মাণ কাজ থেকে যে ধুলাবালি ছড়িয়ে পড়ছে, তা কমিয়ে আনা সম্ভব। যেমন- সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে মাসে মাসে সড়ক না খুঁড়ে একই সময় সব সংস্থাগুলোর কাজ করা। কাজ শেষে যত দ্রুত সম্ভব কার্পেটিং করে ফেলা। নির্মাণকাজের আশপাশে সকাল-দুপুর-সন্ধ্যায় পানি ছিটানো। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত বালু ও অন্যান্য সামগ্রী ঢেকে রাখা।

২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট ঢাকা শহরের ধুলাবালির কারণে সৃষ্ট বায়ুদূষণ প্রতিরোধে সকাল-বিকেল সড়কে পানি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে ঢাকা শহরে যারা বায়ুদূষণ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দুবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দেয়।

২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি আরও ৯টি নির্দেশনা দেয়। এসবের মধ্যে ঢাকা শহরে মাটি, বালু, বর্জ্য ও মালামাল ঢেকে পরিবহন করা; চারপাশ ঘিরে উন্নয়ন বা নির্মাণ কাজ করা ও নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে রাখা; ঢাকার সড়কে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সকাল-বিকেল পানি ছিটানো; সড়ক, কালভার্ট, কার্পেটিং, খোঁড়াখুড়ির কাজ আইন ও দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী নিশ্চিত করা; যেসব যানবাহন নির্ধারিত মাত্রার বেশি কালো ধোঁয়া ছড়ায় সেগুলো জব্দ করা; শপিং মল, বাজার, দোকানের প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগে ভরে নির্ধারিত জায়গায় রাখা এবং সেগুলো অপসারণে সিটি করপোরেশনের পদক্ষেপ নেওয়া উল্লেখযোগ্য।

কিন্তু এসবের কোনো নির্দেশনা কার্যকর করতে দেখা যায়নি। মোহাম্মদপুর, মিরপুর, ধানমন্ডি এলাকায় একাধিক দিন (সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত) অবস্থান করে কখনো পানি ছিটাতে দেখা যায়নি। সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকায় বালু বা মাটি ভর্তি ট্রাক ঢুকতে দেখা যায় অহরহ, যেগুলোর কোনোটাই ঢেকে রাখা হয়নি। সেখান থেকে মাটি বা বালু পড়ছে সড়কে এবং তা পরবর্তীতে অন্য গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ধুলা আকারে। খোঁড়াখুড়ির জন্য কোনো নিয়ম তো মানাই হয় না। ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি তো এই শহরের ঐতিহ্য, অনেকটা বুক ফুলিয়েই কালো ধোঁয়া উড়িয়ে দাপিয়ে বেড়ায়! বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কিছু ডাম্পিং স্টেশন করা হলেও যত্রতত্র ময়লার ভাগাড় দেখা যায়। সড়কের আশপাশের অনেক গাছে সবুজ পাতার দেখা মেলে না। ধুলায় ধুসর হয়ে থাকা গাছগুলোকে ভাস্কর্য ভেবে অনেকে ভুলও করতে পারে!

এসবের প্রেক্ষাপটে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি নতুন করে আরও ৩টি নির্দেশনা দেয় হাইকোর্ট। রাজধানীর প্রবেশমুখ গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, পূর্বাচল, কেরানীগঞ্জ ও টঙ্গীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পানি ছিটানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ঢাকার রাস্তায় উপর থেকে পানি ছিটাতে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; যাতে রাস্তার পাশের ছোটোখাটো গাছে জমে থাকা ধুলা-ময়লা পরিষ্কার হয়। আর পানির ঘটাতি তৈরি হলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশকে পানি সরবরাহ করতে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

বার বার নির্দেশনা দেওয়া হলেও এসব মানতে দেখা যায় না। যেখানে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অগ্রাহ্য করা হয়, সেখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরিবেশ বাঁচাতে কিংবা বায়ুদূষণ কমিয়ে মানুষকে বাঁচাতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তো ভাববেই পারি না। অথচ চাইলেই এগুলো কার্যকর করে বায়ুদূষণ কমানো যায়।

এর বাইরে বায়ুদূষণ বা পরিবেশ দূষণ রোধে কার্যকর আইন করা এবং তা প্রণয়ন করা জরুরি। সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী বায়ুমান উন্নয়নে প্রতিবছর কী কাজ করা হচ্ছে, তা সবার সামনে উপস্থাপন করা। বায়ুদূষণ কমাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করা। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নেওয়া।

এখনই পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে শুধু ঢাকা নয়, এই দেশই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। নির্মল বাতাসের জন্য হাহাকার করতে হবে। নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হবে। বছর বছর আয়ু কমতে থাকবে। বায়ুদূষণ রোধে সরকারি সংস্থাগুলোর অবহেলা আর উদাসীনতার শিকার হয়ে আমাদের মরতে হবে!

 

তানজিল রিমন: সাংবাদিক ও শিশুসাহিত্যিক

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Sheikh clan’s lust for duty-free cars

With an almost decimated opposition and farcical elections, a party nomination from the ruling Awami League was as good as a seat in the parliament.

4h ago