৩৬ বছর পর বিশ্বকাপের নকআউটে মরক্কো

ছবি: এএফপি

অন্তত ড্র করলেই দীর্ঘ হবে যাত্রা। এমন সমীকরণ জেনেই খেলতে নেমেছিল মরক্কো। কানাডার রক্ষণভাগের ভুলকে কাজে লাগিয়ে তারা মিলিয়ে ফেলল হিসাবনিকাশ। জয় তুলে নিয়ে ৩৬ বছর পর দলটি নাম লেখাল বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে। চমক দেখিয়ে ক্রোয়েশিয়া ও বেলজিয়ামের মতো পরাশক্তিদের টপকে ওয়ালিদ রেগ্রাগির শিষ্যরা হলো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।

বৃহস্পতিবার রাতে আল থুমামা স্টেডিয়ামে কাতার বিশ্বকাপের 'এফ' গ্রুপের ম্যাচে কানাডাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে মরক্কো। সবগুলো গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে। অ্যাটলাস লায়নদের পক্ষে লক্ষ্যভেদ করেন হাকিম জিয়েখ ও ইউসেফ এন-নেসিরি। যে গোলটি তারা হজম করে, সেটি ছিল আত্মঘাতী। বিরতির পর আর কোনো ভুল করেনি দলটি।

১৯৮৬ সালের পর এই প্রথম ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরের শেষ ষোলোতে নাম লেখাল মরক্কো। মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত আসরে সেবার তারা ইংল্যান্ড, পোল্যান্ড ও পর্তুগালকে টপকে হয়েছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। তবে পশ্চিম জার্মানির কাছে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ডেই থেমেছিল তাদের অভিযান। মাঝে তিনটি আসরে খেললেও (১৯৯৪, ১৯৯৮ ও ২০১৮) তারা ছিটকে যায় প্রথম রাউন্ড থেকেই।

সেনেগালের পর এবারের আসরে আফ্রিকার দ্বিতীয় দল হিসেবে গ্রুপ পর্বের বাধা পাড়ি দিল মরক্কো। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোনো আসরে তারা পেল একাধিক জয়। তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে তাদের অর্জন ৭ পয়েন্ট।  তিন ম্যাচের সবকটিতে হেরে শূন্য হাতে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল তলানিতে থাকা কানাডা।

একই সময়ে শুরু হওয়া গ্রুপের আরেক ম্যাচে বেলজিয়ামের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে মরক্কোর সঙ্গী হলো গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়া। এক জয় ও দুই ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৫। শক্তিশালী বেলজিয়াম বিবর্ণ পারফরম্যান্সে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ছিটকে গেল আসর থেকে।

ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই কানাডা গোলরক্ষকের বিশাল ভুলের সুযোগে এগিয়ে যায় মরক্কো। সতীর্থ ডিফেন্ডারের দুর্বল ব্যাকপাস বিপদমুক্ত করতে ডি-বক্সের বাইরে চলে আসেন মিলান বোরিয়ান। এরপর তিনি নেন এলোমেলো এক শট। আলগা বল তার মাথার উপর দিয়ে পাঠিয়ে নিশানা ভেদ করেন জিয়েখ।

২৩তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ান এন-নেসিরি। এই গোলেও দায় আছে কানাডার রক্ষণভাগের। কামাল মিলার ও স্টিভেন ভিটোরিয়ার পেছনে ছিলেন এন-নেসিরি। তারপরও মাঝমাঠ থেকে দেওয়া আশরাফ হাকিমির পাস পেয়ে যান তিনি। বোরিয়ানকে পরাস্ত করার বাকি কাজটা সারতে ভুল হয়নি তার।

খেলার ধারার বিপরীতে আচমকা একটি গোল শোধ করে দেয় কানাডা। তাতে অবশ্য ছিল ভাগ্যের ছোঁয়া। স্যামুয়েল অ্যাডাকুবের ক্রস মরক্কোর নাইফ আগের্দের পায়ে লেগে দিক পাল্টে গোললাইন অতিক্রম করে। বলে হাত ছোঁয়াতে পারলেও আটকাতে সফল হননি গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে এন-নেসিরি ফের জাল খুঁজে নেন। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়। কারণ, বোরিয়ানের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন আগের্দ।

এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া মরক্কো দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নেয়। সমতায় ফিরতে কানাডা মনোযোগী হয় আক্রমণে। ম্যাচের ৭১তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল তারা। জুনিয়র হয়লেটের কর্নারে বদলি অ্যাটিবা হাচিনসনের জোরালো হেড ক্রসবারে লেগে গোললাইনে পড়ে। সেসময়ও বল জালে পাঠানোর সুযোগ ছিল অ্যালিস্টার জন্সটনের। তার হেড ক্রসবারের সামান্য উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

হাঁফ ছেড়ে বাঁচা মরক্কানরা আরও খোলসবন্দি হয়ে যায়। বল দখলে এগিয়ে থাকা কানাডা চাপ বাড়ায় আক্রমণে। কিন্তু গোলের নিশ্চিত সুযোগ সেভাবে তৈরি করতে পারেনি তারা। লিড ধরে রেখে শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে উল্লাসে মাতে রেগ্রাগির দল।

Comments

The Daily Star  | English

$14b a year lost to capital flight during AL years

Bangladesh has lost around $14 billion a year on average to capital flight during the Awami League’s 15-year tenure, according to the draft report of the committee preparing a white paper on the economy.

15h ago