র‍্যাশফোর্ডের নৈপুণ্যে ওয়েলসকে বিদায় করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

ছবি: এএফপি

৬৪ বছর পর ফুটবলের মহাযজ্ঞে ফেরা স্মরণীয় করে রাখতে পারল না ওয়েলস। নিজেদের গ্রুপের তলানিতে থেকে তারা কাতার বিশ্বকাপ শেষ করল। মার্কাস র‍্যাশফোর্ডের নৈপুণ্যে তাদেরকে হজম করতে হলো বড় হার। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠল শিরোপাপ্রত্যাশী ইংল্যান্ড।

মঙ্গলবার রাতে আসরের 'বি' গ্রুপের ম্যাচে ওয়েলসকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা। আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে সবগুলো গোলই হয় দ্বিতীয়ার্ধে। জোড়া গোল পান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড র‍্যাশফোর্ড। অন্য গোলটি করেন ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার ফিল ফোডেন।

তিন ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড। ১৯৫৮ সালের পর ফের বিশ্বকাপে নাম লেখানো ওয়েলসের পয়েন্ট ১। আগামী রবিবার রাতে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে ইংলিশরা মোকাবিলা করবে 'এ' গ্রুপের রানার্সআপ সেনেগালকে।

মাঠের লড়াইয়ে আধিপত্য দেখানো ইংল্যান্ড প্রতিপক্ষের গোলমুখে ১৮টি শট নেয়। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল তিনটি। অন্যদিকে, ওয়েলস সাতটি শট নিয়ে কেবল একটি লক্ষ্যে রাখতে পারে।

ম্যাচের শুরুটা ছিল কিছুটা ধীরগতির। দশম মিনিটে প্রথমবারের মতো গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করে ইংল্যান্ড। হ্যারি কেইনের পাসে ডি-বক্সে র‍্যাশফোর্ড একা পেয়ে যান ওয়েলস গোলরক্ষককে। তার নিচু শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন ড্যানি ওয়ার্ড।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলতে শুরু করে ইংলিশরা। কিন্তু আক্রমণে দেখা যায়নি ধার। অন্যদিকে, রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের প্রতিবেশীদের। সেই কাজটা ভালোভাবে করে তারা।

প্রথমার্ধে ইংল্যান্ডের অন্য উল্লেখযোগ্য আক্রমণটি হয় ৩৮তম মিনিটে। দারুণ সব পাসে গোছানো ফুটবল খেলে তারা ছড়ায় ভীতি। জুড বেলিংহ্যাম ও জর্ডান হেন্ডারসন নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েকবার বল আদান-প্রদান করেন ডি-বক্সের বাইরে। এরপর বেলিংহ্যাম খুঁজে নেন ফোডেনকে। ২০ গজ দূর থেকে ফোডেনের নেওয়া শট চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।

বিরতি থেকে ফিরেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করে থ্রি লায়ন্সরা। ৫০তম মিনিটে ফ্রি-কিক পায় তারা। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন র‍্যাশফোর্ড। ওয়ার্ডকে পরাস্ত করে বল জড়ায় জালে। কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে এগিয়ে যাওয়ার উল্লাসে মাতে ইংল্যান্ড।

গোল হজম করে যেন ভেঙে পড়ে ওয়েলসের রক্ষণদেয়াল! পরের মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফোডেন। প্রতিপক্ষের ভুলের ফায়দা তুলে অনায়াসে ফাঁকা গোলপোস্টে বল পাঠান তিনি। ছয় গজের বক্সে তাকে বলের যোগান দেন কেইন।

তিন মিনিট পর ব্যবধান কমাতে পারত ওয়েলস। কেইফার মুরের দূরপাল্লার শট হ্যারি ম্যাগুইয়ারের গায়ে লেগে দিক পাল্টে ফেলেছিল। তবে সতর্ক ছিলেন ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। তিনি রুখে দেন বল।

ম্যাচের চালকের আসনে বসে পড়া সাউথগেটের দল ৬৮তম মিনিটে পেয়ে যায় তৃতীয় গোল। কেলভিন ফিলিপসের উঁচু করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নেন দারুণ গতিসম্পন্ন ফুটবলার র‍্যাশফোর্ড। ডান প্রান্ত থেকে ডি-বক্সে ঢুকে তার নেওয়া শট ওয়ার্ডের পায়ের ফাঁক দিয়ে গোললাইন অতিক্রম করে।

এবারের আসরে এটি র‍্যাশফোর্ডের তৃতীয় গোল। এর আগে ইরানের বিপক্ষে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন তিনি। কাতার বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে উঠলেন তিনি। তিনটি করে গোল আছে কিলিয়ান এমবাপে, কোডি গাকপো ও এন্নার ভ্যালেন্সিয়ার।

বাকি সময়ে ব্যবধান বাড়ানোর বেশ কিছু ভালো সুযোগ এসেছিল ১৯৬৬ আসরের চ্যাম্পিয়নদের। ৭২তম মিনিটে র‍্যাশফোর্ডকে হ্যাটট্রিক পেতে দেননি ওয়ার্ড। পাঁচ মিনিট পর ফের তাকে হতাশ করেন ওয়েলস গোলরক্ষক। এর পরপরই র‍্যাশফোর্ডের ক্রসে ফাঁকে জাল খুঁজে নিতে ব্যর্থ হন ফোডেন।

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন জন স্টোনস। ফোডেনের কর্নারে ম্যাগুইয়ার হেড করার পর বল পেয়ে যান তিনি। কিন্তু অরক্ষিত অবস্থায় তার নেওয়া শট ক্রসবারের উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

একই সময়ে হওয়া 'বি' গ্রুপের আরেক ম্যাচে আল থুমামা স্টেডিয়ামে ইরানকে ১-০ গোলে হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে তারা গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে নকআউট পর্বের টিকিট পেয়েছে। আগামী শনিবার তারা মোকাবিলা করবে 'এ' গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডসকে।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka slams desecration of nat’l flag in Kolkata

The government yesterday strongly condemned the desecration of Bangladesh’s national flag and the burning of Chief Adviser Prof Muhammad Yunus’s effigy in Kolkata as “deplorable acts”.

1h ago