ব্রুনোর জোড়া গোলে নকআউট পর্বে পর্তুগাল
ধারালো আক্রমণভাগ নিয়েও প্রথমার্ধে গোল আদায় করতে পারেনি পর্তুগাল, প্রতি আক্রমণে সুযোগ হারায় উরুগুয়েও। বিরতির পর বদলে যায় ম্যাচের ছবি। ব্রুনো ফার্নান্দেজের ঝলকে এগিয়ে যাওয়ার পর দাপট দেখাতে থাকে তারা। শেষ দিকে ব্রুনোই পেনাল্টি থেকে আরেক গোল করে দলকে নকআউট পর্বে নেওয়ার উল্লাসে মাতেন।
সোমবার রাতে লুসাইল স্টেডিয়ামে 'এইচ' গ্রুপের লড়াইতে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়েছে পর্তুগাল। এই জয়ে ফ্রান্স ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর দল। ৫৪ ও ৯৩ মিনিটের দুই গোলে পর্তুগিজদের হিরো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা ব্রুনো।
পর্তুগালের কাছে হেরে পরের রাউন্ডে যাওয়ার ভিত বেশ নড়ে গেল উরুগুয়ের। শেষ ম্যাচে ঘানার বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াই তাদের।
এদিন খেলার প্রথম কয়েক মিনিটে ছিল না তালগোল। তিন মিনিটে প্রথম আক্রমণে গিয়ে এডিসন কাভানি শট মারেন অনেক উপর দিয়ে। পরের মিনিটে আক্রমণে যাওয়া পর্তুগালও হতাশ হয় উইলিয়াম কারভালহো বারের উপর দিয়ে মারলে।
পরের কয়েক মিনিট বলের দখল নিয়ে চাপ বাড়াতে থাকে পর্তুগাল। তবে তাদের আক্রমণগুলো খেই হারায় উরুগুয়ের রক্ষণে। প্রতি আক্রমণে গিয়ে সুবিধা করতে পারছিল না উরুগুয়েও।
বেশ কিছু আক্রমণ হলেও প্রথম আধাঘন্টায় বলার মতো পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোন দল। যদিও বল দখলে রেখে দাপট দেখায় পর্তুগালই।
৩২ মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে গোল পেয়ে যেতে পারত উরুগুয়ে। মাঝমাঠ থেকে আচমকা বল নিয়ে তীব্র গতিতে পর্তুগিজ বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন রদ্রিগো বেনটেকার। জুভেন্টাস তারকার শট পরে দারুণ দক্ষতায় ঠেকান গোলরক্ষক দিয়াগো কস্তা।
#FIFAWorldCup | @selecaoportugal pic.twitter.com/5FJiqOXwWi
— FIFA World Cup (@FIFAWorldCup) November 28, 2022
৩৬ মিনিটে আবার সুযোগ তৈরি হয়েছিল উরুগুয়ের। এবার বা দিক থেকে আসা ক্রস পায়ে লাগাতে পারেননি কাভানি, বেনটেকারও পরে বল বাইরে যাওয়ার আগে হালকা স্পর্শ করতে পারেন। প্রথমার্ধে বলার মতো আর কিছু হয়নি।
বিরতির পর নেমে চলতে থাকে একই ধাঁচের খেলা। পর্তুগালের চাপিয়ে খেলার মাঝে পাওয়া যায় প্রতি আক্রমণ নির্ভর উরুগুয়েকে। ৫২ মিনিটে দারুণ সুযোগ আসে পর্তুগালের। মাঝমাঠ থেকে তৈরি হওয়া আক্রমণ বক্সে ঢুকে ভালো জায়গায় বল পেয়েছিলেন জোয়াও ফেলিক্স। এই তরুণ বল মারেন পোস্টের বাইরে।
৫৪ মিনিটেই আসে কাঙ্খিত গোল। ডান প্রান্ত থেকে দারুণ ক্রস বাড়ান ব্রুনো, বল যাচ্ছিল গোলের দিকেই। লাফিয়ে উঠে হেডের চেষ্টা করেন রোনালদো। বল তার মাথায় ঠিকমতো স্পর্শ না করলেও জড়িয়ে যায় জালে। নিজের গোল ভেবে উদযাপনও করেন তিনি। প্রথমে তার নামে গোল স্কোরশিটে উঠলেও পরে তা বদলে ব্রুনোর নামেই বরাদ্দ হয়।
খেলায় ফিরতে মরিয়া উরুগুয়ে আক্রমণের ধার বাড়ায়। তবে সেভাবে সুযোগ তৈরি হচ্ছিল না। ৭৫ মিনিটে ফেকুন্দো প্যালিস্ট্রি সুযোগ বানিয়ে দেন ম্যাক্সিমিলানো গোমেজের পায়ে। তিনি অল্পের জন্য মারেন বাইরে।
৭৭ মিনিটে বদলি নামা লুইস সুয়ারেজের কাছে সুযোগ এসেছিল। একটি কার্যকর ক্রস থেকে জটলার মধ্যে বল পেয়ে তিনিও মারেন বাইরে। ৮১ মিনিটে প্যালিস্ট্রির ক্রস থেকে সুয়ারেজ মাথা লাগানোর আগে পর্তুগিজ ডিফেন্ডার তা ক্লিয়ার করেন।
৮৩ মিনিটে রাফায়েল লিয়াও বাইরে মেরে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারান। যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়ে পেনাল্টিতে। বক্সের ভেতর হ্যান্ডবল করে পেনাল্টি হজম করে উরুগুয়ে। তা থেকে নিখুঁত লক্ষ্যভেদ করেন ব্রুনো। হ্যাটট্রিকও পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। যোগ করা সময়ের ৮ম মিনিটে তার নেওয়া শট কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান উরুগুয়ের গোলরক্ষক। খানিক পর তাকে হতাশ করে গোলবার। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে মাটি কামড়ানো শট নিয়েছিলেন। বারে লেগে তা প্রতিহত হয়। ব্রুনো হ্যাটট্রিক না পাওয়ার হতাশা উবে যায় তাদের নকআউট নিশ্চিতের আনন্দে।
Comments