ভালো খেলেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারল তিউনিসিয়া
হারলে ধরতে হবে দেশের বিমান, এমন সমীকরণ মাথায় নিয়েই তিউনিসিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। বাঁচা-মরার ম্যাচে প্রতিপক্ষের আক্রমণের ঝাপটা সামলে শেষ পর্যন্ত জয় তুলে নিল গ্রাহাম আরনল্ডের শিষ্যরা। শুরুর দিকে পাওয়া লিড তারা ধরে রাখল শেষ বাঁশি পর্যন্ত। কোচের আস্থার প্রতিদান দারুণভাবে দিল সকারুদের রক্ষণভাগ। আরও একবার বাজে ফিনিশিংয়ে ভুগতে হলো তিউনিসিয়াকে।
শনিবার আল জানোব স্টেডিয়ামে কাতার বিশ্বকাপের 'ডি' গ্রুপের ম্যাচে তিউনিসিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের ২৩তম মিনিটে মিচেল ডিউক হেডে জয়সূচক গোলটি করেন।
বলের দখল থেকে শুরু করে আক্রমণ গড়া- সবদিকে এগিয়ে থেকেও জয় তুলে নিতে ব্যর্থ হয়েছে উত্তর আফ্রিকার দলটি। অধিনায়ক ইউসেফ মাসাকনি প্রথমার্ধের শেষদিকে নষ্ট করেন গোলের সহজ সুযোগ। আগের ম্যাচেও আক্রমণভাগের ফুটবলাররা হতাশ করায় ডেনমার্কের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল তিউনিসিয়া।
এই জয়ে আসরের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার আশা টিকিয়ে রাখল আগের ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে ৪-১ গোলে হারা অস্ট্রেলিয়া। ২০১০ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপে জয়ের স্বাদ পেল তারা। আগের দুই আসরে অংশ নিলেও কোনো ম্যাচ না জিতেই বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের। অন্যদিকে, তিউনিসিয়ার গ্রুপ পর্ব পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেল।
প্রথমার্ধেই এগিয়ে যেতে পারত তিউনিসিয়া। ১৯তম মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ হারায় তারা। ইসাম জেবালি বল দেন মাসাকনিকে। কিন্তু শটই নিতে পারেননি অধিনায়ক। তবে অস্ট্রেলিয়া ঠিকই কাজে লাগায় তাদের সুযোগ।
২৩তম মিনিটে সাফল্য পায় সকারুরা। লেফট উইং থেকে ক্রস যোগান ক্রেইগ গুডউইন। দারুণ এক হেডে অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে নেন ডিউক। গোল শোধ দিতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাতে থাকে জালেল কাদরির শিষ্যরা।
৪১তম মিনিটে হ্যারি সুটারের কল্যাণে লিড ধরে রাখতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া। মোহামেদ দ্রাগারের জোরালো শট মোক্ষম এক স্লাইডে রুখে দেন এই সেন্টার-ব্যাক। ৪৪তম মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়াও। আলি আবদির ভুলে বল পেয়ে যান ফ্রাঁ কারাসিক। কিন্তু কাজের কাজটা করতে পারেননি তিনি।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সমতায় ফেরার আরও একটি সুযোগ নষ্ট করে তিউনিসিয়া। ডান প্রান্ত থেকে দারুণ এক ক্রস করেন জেবালি। মাসাকনির কাজ ছিল স্রেফ লক্ষ্যভেদ করা। কিন্তু এই সহজ কাজটা করতে পারেননি তিনি। শট নেন গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে।
বিরতির পর ম্যাচের ৫৬তম মিনিটে দারুণ এক ক্রস যোগান দেন গুডউইন। কিন্তু সেটাকে গোলে পরিণতি দেওয়ার জন্য উপযুক্ত স্থানে ছিলেন না কেউই। গোলের জন্য বারবারই আক্রমণ গড়ার চেষ্টা চালাতে থাকে তিউনিসিয়া। কিন্তু তাদের ফরোয়ার্ডরা ঠিক পেরে উঠছিলেন না অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণের সঙ্গে।
৬৭তম মিনিটে তিউনিসিয়ার ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ওয়াহবি খাজরিকে মাঠে নামান কোচ। তিন মিনিট বাদে জাবেলির উদ্দেশ্যে ছাড়া খাজরির থ্রু রুখে দেন অস্ট্রেলিয়ার কাই রোলস। পরের মিনিটে আবারও আক্রমণে ওঠে তিউনিসিয়া। মাসাকনির জোরালো শট রুখে দলকে সে যাত্রা বিপদমুক্ত করেন গোলরক্ষক ম্যাথু রায়ান।
তবে ৭৩তম মিনিটে আবারও তিউনিসিয়া ভক্তদের বুকে কাঁপন ধরায় অস্ট্রেলিয়া। অ্যারন মুইয়ের দারুণ দূরপাল্লার শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮৭তম মিনিটে নাইম স্লিতি দারুণভাবে এগিয়ে যাছিলেন সকারুজ রক্ষণকে পরাস্ত করে। তবে সুটারের সঙ্গে পেরে ওঠেননি শেষ পর্যন্ত।
পরের মিনিটে খাজরি শট নিলেও পর্যাপ্ত জোর ছিল না তাতে। ফলে সহজেই ধরে ফেলেন রায়ান। যোগ করা সময়েও জালের দেখা পায়নি তিউনিসিয়া। ফলে প্রতিপক্ষের গোলমুখে ১৪টি শট নিয়ে চারটি লক্ষ্যে রেখেও হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
Comments