আগ্রাসী ব্র্যান্ডের ক্রিকেট ধরে রাখতে চায় বাংলাদেশ
গত কদিনের রুটিন যেভাবে চলছে এদিন সাকিব আল হাসানকে অনুশীলনে দেখতে পাওয়া যেন বড় খবর। সাম্প্রতিক সময়ে ম্যাচের আগের দিন তিনি অনুশীলনে নামেন ও পরে ম্যাচ খেলে দেন। হাতে একদিন বেশি সময় থাকলে সাকিব সাধারণত কোন বিজ্ঞাপনী ব্যস্ততায় পার করে দেন দিন। তবে শনিবার অনুশীলনে শুরু থেকেই দেখা গেল টি-টোয়েন্টি অধিনায়ককে। এবং বেশ সিরিয়াস ভূমিকাতেই চালিয়েছেন ব্যাটিং। ইংল্যান্ডকে কদিন আগেই তার নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ দল। ফলের দিক থেকে এবারও প্রত্যাশা তেমনই। তার সঙ্গে খেলার ধরণে আগ্রাসী ঝাঁজটা রাখতে বেশি উদগ্রীব টিম ম্যানেজমেন্ট।
সোমবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুপুর দুইটায় শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তার আগে রোববারও আছে অনুশীলন। শনিবার তাই কিছুটা ঢিমেতালে প্রস্তুতি সারার পরিস্থিতি ছিল।
২টার দিকে মাঠে নেমে দুজন নেট বোলার ও লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে নিয়ে সোজা নেটে চলে আসেন সাকিব। প্রথম মিনিট দশেক মুখ দিয়ে কোন কথা না বলেই চালিয়েছেন হিটিং। পরে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছাকাছি অবস্থান থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরও চালিয়ে গেছেন তা।
তার পাশেই নেটে ছিলেন লিটন দাস। বাংলাদেশের ওপেনারকে এদিন সবচেয়ে বেশি খাটতে দেখা গেছে। দুই নেটে ব্যাট করার পর সেন্টার উইকেটে গিয়ে বড় শটের মহড়া দিয়েছেন তিনি। দলের সবার অনুশীলন যখন শেষ লিটন তখন ফিরে এসে আবার নামেন মাঠে। এবার সেন্টার উইকেটে প্রান্ত বদল করে চালিয়েছেন হিটিং অনুশীলন।
নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান আয়ারল্যান্ড সিরিজে ফলাফলের বাইরেও কিছু জিনিস দেখতে চান তারা, 'জেতাটা মুখ্য অবশ্য। প্রথম কথা হলো জেতা। তার ফাঁকেফাঁকে আমরা কিছু দেখার চেষ্টা করব। যেহেতু আমাদের বেঞ্চটা এখন শক্ত। খুব বেশি এখন ঘাটতি পড়ে না। সেই জায়গায় কিছু দেখার সুযোগ থাকে। এটা দলের জন্য ভালো ব্যাপার।'
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু থেকেই আগ্রাসী শরীরী ভাষায় খেলতে দেখা গেছে বাংলাদেশকে। জড়তা কাটিয়ে খেলার ফলও মিলেছে। হাবিবুল জানান, এবারও সেই একই ধরণ দেখতে চান নির্বাচকরা, 'আমি চাইব দলটা যে ক্রিকেটটা খেলেছে সেটাই খেলুক। ফল তো পরের কথা। যে খেলাটা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছে সেটাই ধরে রাখতে চাই। ভয়ডরহীন ক্রিকেট আরকি।'
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পালায় টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে এবার যুক্ত হয়েছেন নতুন দুজন। নুরুল হাসান সোহানকে বাদ দিয়ে কিপার ব্যাটার হিসেবে রাখা হয়েছে জাকের আলি অনিককে। ঘরোয়া ক্রিকেটাটা পারফর্ম করে প্রথমবার দলে আসা তরুণ অনুশীলনেও ছিলেন চনমনে। নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ বড় মঞ্চে দিতেও মুখিয়ে থাকবেন তিনি। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়া বাড়তি কোন চাপ না নিয়ে তিনি যেন খেলাটা উপভোগ করেন, 'অনিক (জাকের আলি) তো পারফর্ম করে আসছে সব জায়গায়। পরীক্ষিত ক্রিকেটার। এমনটা চাইব না যে এসেই বিশেষ কিছু করতে হবে। চাইব যেন খেলাটা উপভোগ করুক।'
নতুন আসা রিশাদ নেটে পেয়েছিলেন সাকিবকে। খুব একটা আটসাট বল করতে দেখা যায়নি তাকে। ফুলটস, লেগ স্টাম্পের বাইরে বল ফেলে মার খেয়েছেন। তাকে সময়ে সময়ে গাইড করছিলেন স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ। হাবিবুল জানালেন একজন লেগ স্পিনারের তীব্র চাহিদা থেকেই তাকে বাজিয়ে দেখা হচ্ছে, 'রিশাদের লেগ স্পিন আমরা অনেকদিন ধরে দেখছি, হয়ত খুব বড় কিছু করেনি। কিন্তু খুব খারাপ পারফর্ম সে করে না ঘরোয়াতে। যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছে মোটামুটি করেছে। টিম ম্যানেজমেন্ট বলেন, সবাই চায় একজন লেগ স্পিনারকে থিতু করাতে। আমরাও সেভাবে চেষ্টা করছি। বেস্ট পসিবুল অপশনগুলো দেখছি। আমার চাওয়া থাকবে জাতীয় দলের চাপটা না দিয়ে এরা যেন ঘরোয়া ক্রিকেটে যেভাবে খেলে সেরকম তাদের সহজাত খেলাটা খেলুক। '
Comments